| |
               

মূল পাতা জাতীয় পরস্পরের প্রতি সহনশীল হতে সবার প্রতি আহ্বান প্রধান বিচারপতির


পরস্পরের প্রতি সহনশীল হতে সবার প্রতি আহ্বান প্রধান বিচারপতির


রহমত নিউজ ডেস্ক     19 November, 2023     09:26 AM    


পরস্পরের প্রতি সহনশীল হতে রাজনৈতিক দলসহ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, ‘...যেন ভবিষ্যতে সকল ধর্ম ও সকল মতের মানুষের মিলের মধ্য দিয়ে এই দেশের মানুষ বসবাস করতে পারে। সে জন্য অত্যন্ত বেশি সহনশীল হওয়া প্রয়োজন সকলের। সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি, নেতৃবৃন্দের প্রতি ও সকলের প্রতি আহ্বান থাকবে, আপনারা একে–অপরের প্রতি সহনশীল হবেন।

শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ‘মানবাধিকার সুরক্ষায় প্যানেল আইনজীবীগণের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ,অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। উদ্বোধনী পর্বের পর প্যানেল আইনজীবীদের মানবাধিকার সুরক্ষায় করণীয় সংক্রান্ত দুটি কর্ম–অধিবেশন (ওয়ার্কিং সেশন) সঞ্চালনা করেন কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা এবং পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) মো. আশরাফুল আলম। সমাপনী পর্বে কমিশনের চেয়ারম্যান প্যানেল আইনজীবীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

ইনডেমনিটি  আইনের প্রসঙ্গ টেনে প্রধান বিচারপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে না, জাতীয় নেতাদের হত্যার বিচার হবে না মর্মে যে আইন পাস করা হয়েছিল, সেটি ছিল সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিদর্শন।…সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এই আইন যেদিন বাতিলের জন্য সংসদে উপস্থাপন করা হলো, সেদিনকার বিরোধী দল ওয়াকআউট করে চলে গেল।’ তিনি বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক শিষ্টাচারের কথা বলছি। আপনারা নিজেরা যাঁরা রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন, তাঁরা যদি একে অপরকে শ্রদ্ধা করতে না পারেন, তাঁরা যদি এদেশের মানবাধিকারের লঙ্ঘন কোনটা, অলঙ্ঘন কোনটা—বুঝতে না পারেন, তাহলে এ দেশের মানুষের আরও অনেক কষ্ট হবে ভবিষ্যৎ জীবন পাড়ি দিতে। আশা করব, সকলেই বিষয়টি অনুধাবন করবেন। রাজনৈতিক মতভেদ থাকতে পারে, কিন্তু মানুষ হিসেবে একে–অপরের প্রতি যদি শ্রদ্ধাশীল না হন, তাহলে কিন্তু কোনো দিন বাংলাদেশ একটি সুন্দর সমাজ পাবে না।

মানবাধিকার কর্মীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, রাজনৈতিক নেতার যেমন মানবাধিকার আছে, রাজনৈতিক কর্মীরও মানবাধিকার আছে। যে রাস্তায় রাজনৈতিক আন্দোলন করবে, তারও মানবাধিকার আছে। যে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে, তারও কিন্তু মানবাধিকার আছে। বিষয়টি অনেক সময় গুলিয়ে ফেলি।…অতিরিক্ত বল প্রয়োগ তিনিও (রাজনৈতিক কর্মী) যদি করেন পুলিশের ওপর, আর পুলিশও যদি অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে—দুটিই কিন্তু অপরাধ। দুটিই কিন্তু মানবাধিকার লঙ্ঘনের পর্যায়ে পড়ে যায়। সম্প্রতি কিছু ঘটনা ঘটেছে, দেখেছেন। সেখানে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হয়েছে। মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার—এই দুটি বিষয়ে ভুল ধারণা থাকতে পারে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মৌলিক অধিকার বিভিন্ন রকম হতে পারে। কিন্তু মানবাধিকার সারা পৃথিবীতে একই রকম। সভা–সমাবেশ করা আমাদের মৌলিক অধিকার। পৃথিবীর অন্য অনেক দেশে সভা–সমাবেশ করতে দেয় না। কিন্তু মানবাধিকারের বিষয়ে সারা পৃথিবীতে একই রকম।

ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আসামিকে কোর্টে হাজির করা প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, কোর্টে অনেক সময় ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আসামিদের হাজির করা হয়। আমি যখন হাইকোর্টে ছিলাম (হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি), আমার একটি আদেশ ছিল। ডান্ডাবেড়ি না পরানোর, ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে কোর্টে হাজির করা যাবে না।…কিছু দিন আগে ঢাকা কোর্ট থেকে আসামি ছিনতাই হয়। দেখা গেল, পুলিশ ডান্ডাবেড়ি না পরিয়ে তাঁকে নিয়ে এসেছিল।...আদেশে বলা আছে, যদি কেউ ভয়ংকর আসামি হয়, তাকে ডান্ডাবেড়ি পরানোর প্রয়োজন হলে আদালতের অনুমতি নিয়ে কোর্টে আনতে পারবে। পুলিশের অবহেলা ছিল বলে মনে হয়, তারা আদেশটি পূর্ণাঙ্গভাবে পড়েনি।