রহমত নিউজ ডেস্ক 03 November, 2023 02:08 PM
জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ এমপি বলেছেন, সংসদীয় গণতন্ত্রে সংসদ সকল রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু। সংসদকে প্রাণবন্ত অংশগ্রহণমূলক ও কার্যকর করতে জাতীয় পার্টি সংসদীয় দল সবসময় আন্তরিক এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যগণ প্রতিটি অধিবেশনে যোগদান, আইন প্রণয়ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, গঠনমূলক সমালোচনাসহ বিভিন্ন আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছে। জনস্বার্থে বিভিন্ন দিক এই সংসদে তুলে ধরেছে। আমরা এখন একটি সাংবিধানিক ট্র্যাকে এসেছি যে, নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন হবে। আশা করছি সবার অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) রাতে একাদশ জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশনের শেষ কার্য দিবসে সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রওশন এরশাদ বলেন, গণতন্ত্রের সূতিকাগার হলো জাতীয় সংসদ। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় আইনসভা বা পার্লামেন্টে বিরোধী দলের ভুমিকা অপরিহার্য। জনগণের আশা-আকাঙ্খা, চাওয়া-পাওয়া ও প্রয়োজন-প্রত্যাশা সংসদে তুলে ধরা ও সরকারের কাজের ত্রুটি-বিচ্যুতি তুলে ধরার জন্য বিরোধীদল আবশ্যক। জনমত ও জনপ্রত্যাশা উপেক্ষা করে সরকার নিজের ইচ্ছামত পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হলে তার প্রতিবাদ করা বিরোধীদলের দায়িত্ব। বিরোধীদলের প্রধান কাজ শুধুমাত্র সরকারের সমালোচনা করা নয়। বিরোধীদল মূলত গঠনমূলক ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে সংসদকে পরিচালনা করে থাকে বলেই বিরোধী দল সরকারের সাহায্য ও সহযোগিতা করতে পারে। অতীতের যে কোনো সংসদের তুলনায় দশম ও একাদশ সংসদ অনেক কার্যকর ছিল। বর্তমান সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি শুধু বিরোধিতার জন্য সরকারের বিরোধিতা করে না, তারা সরকারের ভালো কাজের প্রশংসা এবং খারাপ কাজের সমালোচনা করে প্রকৃত বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছে। সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধী দল সংসদে সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে; জাপা সেই ভূমিকায় সফল হয়েছে, সংসদে একটি বিল এক-দুই মিনিটে পাস হয়নি। প্রতিটি বিলেই বিরোধী দল গঠনমূলক সংশোধনী ও জনমত যাচাই-বাছাইয়ের প্রস্তাব করেছে। যার কারণে সরকার বিরোধী দলের সংশোধনী গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছে। বিভিন্ন ইস্যুতে বিরোধী দলের সঙ্গে সরকারকে সহমত পোষণ করতে হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বাজারে নিত্যপণ্যের লাগামছাড়া দামে ক্রেতারা প্রতিনিয়ত নাজেহাল হচ্ছেন। নিত্যপণ্যের দাম ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। এ অবস্থা প্রায় সব পণ্যের ক্ষেত্রেই। ফলে সংসারের বাড়তি খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সব শ্রেণির মানুষ। মূল্যস্ফীতির ফলে মানুষের ব্যয় বাড়লেও আয়ের ক্ষেত্রেও যদি সামঞ্জস্য থাকত, তাহলে এ সমস্যা ভয়াবহ রূপ নিত না। বাস্তবতা হচ্ছে, ব্যয় বাড়লেও আয় বাড়েনি। ফলে মানুষ টিকে থাকার জন্য সঞ্চয় ভেঙে অথবা ঋণ করে খাচ্ছে। কিন্তু যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, তাদের সঞ্চয়ও নেই, কেউ ধারও দেয় না। এ অবস্থায় তারা সন্তানদের পড়ালেখা, চিকিৎসা খরচ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। তাতেও না কুলালে খাবার খরচ কমিয়ে তিন বেলার পরিবর্তে এক বেলা খেয়ে দিন পার করছেন। যদিও এক্ষেত্রেও বাস্তবতা নিষ্ঠুর! কারণ সিন্ডিকেটের থাবা এখন গরিবের খাবারেও পড়েছে।