রহমত নিউজ ডেস্ক 16 October, 2023 12:29 PM
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলল-বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেছেন, জনসমর্থনহীন শাসকগোষ্ঠী প্রতিনিয়ত তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের নিমূর্লের মহাপরিকল্পনায় লিপ্ত। এ ক্ষেত্রে খাবারের মধ্যে বিষ প্রয়োগ থেকে শুরু করে বিচারের নামে প্রহসনের সাজা দেওয়া এবং গুম-খুন-গুপ্তহত্যার বিবিধ প্রণালি অবলম্বন করেছে সরকার। এটা নিশ্চিত যে, বন্দী খালেদা জিয়াকে আওয়ামী সরকার সুপরিকল্পিতভাবে খাবারের মধ্যে বিষ প্রয়োগের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দেশবাসী মনে করে। আর এটির প্রকাশ হচ্ছে— লন্ডনে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তৃতায়। সেই বক্তৃতার মধ্যেই নিহিত ছিল বিচার বুদ্ধিহীন ও বিবেচনা শক্তিহীন প্রতিশোধের ইঙ্গিত। খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসায় বাধাদান, সেটারই বড় প্রমাণ।
আজ (১৬ অক্টোবর) সোমবার সকালে রাজধানীর নয়া পল্টনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, ২০১৭ সালে খালেদা জিয়া লন্ডনে গিয়েছিলেন। তিন মাস পর সেপ্টেম্বরে তিনি যখন দেশে ফেরেন তখন তিনি শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ। এর কয়েক মাস ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখে একটি মিথ্যা মামলার ফরমায়েশি রায়ে তাকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর দৃশ্য দেশবাসী সবাই ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার মাধ্যমে অবলোকন করেছে। দেশনেত্রী হেঁটেই কারাফটক পার হয়েছেন। তাহলে সোয়া দুই বছরে তিনি কেন এত গুরুতর অসুস্থ হলেন? স্বার্থসিদ্ধির জন্য রাজনীতির নামে বিরোধীনেতাকে হত্যার নানা দৃষ্টান্ত আছে দুনিয়াজুড়ে। রাশিয়ার বিরোধীনেতা আলেকসাই নাভালিনের চায়ে বিষ মেশানো হয়। বিজ্ঞানীরা মোটামুটি নিশ্চিত যে, অসুস্থ ইয়াসির আরাফাতের শরীরেও বিষাক্ত তেজস্ক্রিয় পদার্থ পলেনিয়ামের অস্তিত্ব শনাক্ত করেছেন; এটাই তার মৃত্যুর কারণ। চীনে চীন বংশের সম্রাট হুন কুয়াংশু ক্ষমতাচ্যুত হলে গৃহবন্দী থাকা অবস্থায় বিষ খাইয়ে তাকে মারা হয়েছে। একজন মোঘল সম্রাটের ঘনিষ্ঠ সহচর অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসা করতে দেওয়া হয়নি ফরাসী চিকিৎসককে। কারণ পরবর্তী সময়ে মোঘল সম্রাটের বিরাগভাজন ছিলেন তিনি। সারা বিশ্বে এমন দৃষ্টান্ত ভুরিভুরি। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে সুস্থ অবস্থায় প্রবেশ করেন, তাহলে কী কারণে এত জটিল দুরারোগ্য ব্যধিতে তিনি আক্রান্ত হলেন?
খালেদা জিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে রিজভী আহমেদ বলেন, খালেদা জিয়ার রোগব্যাধির ভয়াবহতা এখন চরম পর্যায়ে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আর্থারাইটিসে আক্রান্ত। কারাগারে যাওয়ার পরে যকৃতের রোগ (লিভার সিরোসিস) দেখা দিয়েছে। যে রোগের কারণে তার পোর্টাল হাইপারটেনশন, পেটে ও ফুসফুসে পানি আসা, অন্ত্রের রক্তরক্ষণ হচ্ছে—যার চিকিৎসা এদেশে আর সম্ভব নয় বলে মেডিক্যাল বোর্ড ইতোমধ্যে পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়াও রক্তে শর্করা’র পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে নেই। তার হৃদযন্ত্রের অবস্থাও ভয়ানক অবনতির দিকে। ইতোমধ্যেই তার হৃদপিণ্ডে একটি রিং বসানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি কিডনি রোগের জটিলতায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে সবমিলিয়ে দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থা জটিল আকার ধারণ করেছে। বারবার তাকে সিসিইউ—তে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ক্রোধ মেটাতে অপমান ও বিপন্নতাকে প্রকট করে তুলেছেন শেখ হাসিনা। দেশনেত্রীকে জীবন—মৃত্যুর পথরেখায় ঠেলে দেওয়া সেই অবিরাম আগ্রাসী হিংসারই বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছেন প্রতিক্ষণ। অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর মানসিক সজীবতা নেই বলেই ক্ষুদ্রত্বের, অপরাধের, কলুষতার চর্চা থেকে তিনি নিজেকে মুক্ত করতে পারেননি।