রহমত নিউজ ডেস্ক 09 October, 2023 10:12 AM
স্বাধীন হওয়ার ৫২ বছর পরও বাংলাদেশ সুষ্ঠু নির্বাচন পদ্ধতি বের করতে না পারায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক মিশনের প্রতিনিধিদের কাছে আক্ষেপ প্রকাশ করে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে দেশে কখনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, দলীয় সরকারের অধীনে কোনো দিন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। গত দুইটা নির্বাচন হয়নি। সামনেও হবে কিনা সন্দেহ আছে। আমি কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলছি না। এমন একটা সরকার থাকতে হবে যারা প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করবে। নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ থাকবে।
রবিবার (৮ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক মিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান। প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক মিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাই বৈঠক করেন বদিউল আলম। বৈঠকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিপপের চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিমুল্লাল’র আমন্ত্রণ থাকলেও তিনি আসেনি।
সুজন সম্পাদক বলেন, নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছি। আমাদের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়া দরকার। ২০১৪ সালে এক তরফা নির্বাচন হয়েছে। ২০১৮ সালে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়নি এবং অনেক অভিযোগ আছে। আমাদের একটা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দরকার। কারণ, আমরা প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অন্তর এ সমস্যার সম্মুখীন হই। ৫২ বছরেও আমরা এ সমস্যার সমাধান করতে পারিনি। সুষ্ঠু নির্বাচনের একটা পদ্ধতি আমরা বের করতে পারিনি। আমি আশা করি, আমাদের রাজনীতিবিদরা সংলাপে বসবেন, সমঝোতা এবং সমাধানে পৌঁছাবেন। প্রতিনিধিদল শুনেছেন। তাদের কোনো মন্তব্য ছিল না। তারা শুধু শুনেছেন। আর এখন তারা কিছু পাবলিকলি বলবেও না। হয়তো ব্যক্তি বিশেষের সঙ্গে আলাপে মন্তব্য করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে গেলে কতগুলো শর্ত মানতে হবে। নির্বাচন এক দিনের বিষয় নয়। এটা একটা পদ্ধতি। এর অনেকগুলো ধাপ আছে। এ ধাপগুলো থাকতে হবে, যেমন-স্বচ্ছ হতে হবে, গ্রহণযোগ্যও হতে হবে। এটা কারা নিশ্চিত করবে। কতগুলো প্রতিষ্ঠান। একটা হলো নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ। এগুলো পূর্ব শর্ত। আমাদের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সমস্যা হলো নির্বাচন কমিশন। তারা কী বলে মাঝে মাঝে সেটা বুঝতেও পারি না। তারা নিজেরাই বলে তারা বিতর্কিত। ইভিএমে তারা যে তথ্য দেবে সেটা মেনে নিতে হচ্ছে।
বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি দেখতে এবং ভোটের বিষয়ে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ পর্যালোচনা চালানোর জন্য শনিবার ঢাকায় এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যালোচনা মিশন (পিইএম)। ছয় সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) যৌথ এই মিশন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাংলাদেশে থাকবে। যৌথভাবে এই মিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সাবেক অ্যাসিট্যান্ট সেক্রেটারি কার্ল এফ ইন্ডাফার্থ এবং ইউএসএআইডি’র সাবেক উপ-প্রশাসক বনি গ্লিক। ঢাকা মিশনে সরকার, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন, নাগরিক সমাজের পাশাপাশি বিভিন্ন বিদেশি মিশনের সঙ্গে বৈঠক করবে এ প্রতিনিধিদল। নিজেদের কর্মকাণ্ড শুরুর প্রথম দিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন তারা। পরে প্রতিনিধিদল ঢাকায় নিযুক্ত ইউরেপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা ছিল। সোমবার প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবেন।