রহমত নিউজ ডেস্ক 14 September, 2023 12:10 PM
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান ড. জায়েদী সাত্তার বলেন, অস্বাভাবিক আমদানি শুল্কের কারণেও উচ্চহারে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে, একই কারণে বিদেশি উদ্যোক্তারা এ দেশে বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন। রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য না আসার ক্ষেত্রেও এটি প্রধান বাধা।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিআইডিএসের নিজস্ব কার্যালয়ে সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস আয়োজিত ‘ট্যারিফ প্রটেকশন অ্যান্ড এক্সপোর্ট ডাইভার্সিফিকেশন আর নট মিউচুয়ালি এক্সক্লুসিভ, দ্য বাংলাদেশ ফেনোমেনন’-বিষয়ক একক বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্থার মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন।
পিআরআই চেয়ারম্যান বলেন, রপ্তানি ও বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশে শিল্পায়ন গড়ে তোলার কথা বলা হলেও নীতি গ্রহণ করা হয়েছে তার উল্টো। দেশের গড় আমদানি শুল্ক প্রায় ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ। এ শুল্কহার বাংলাদেশের রপ্তানি ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়ায় আমদানি শুল্ক ৮ শতাংশ, মালয়েশিয়ায় ৫ দশমিক ৬, ভিয়েতনামে ৯ দশমিক ৬, থাইল্যান্ডে মাত্র ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। অবশ্য এটি প্রতিবেশী দেশ ভারতে ১৮ দশমিক ১ এবং শ্রীলঙ্কায় ২২ দশমিক ৪ শতাংশ। ভারতে কিছুটা বেশি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, দেশটির প্রায় সব ধরনের শিল্পপণ্যের কাঁচামাল অভ্যন্তরেই উৎপাদিত হয়। তাই আমদানি নিরুৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে কিছুটা উচ্চ শুল্কহার রাখা হয়েছে। তারপরও বাংলাদেশের চেয়ে কম।
অন্যদিকে বৈশ্বিক গড় আমদানি শুল্ক মাত্র ৬ শতাংশ; যার মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের গড় ৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ, নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের আমদানি শুল্কের গড় ৭ দশমিক ২ শতাংশ, উচ্চমধ্যম আয়ের দেশের গড় আমদানি শুল্ক ৩ দশমিক ৭ শতাংশ এবং উচ্চ আয়ের দেশের গড় আমদানি শুল্ক মাত্র ২ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, আমাদের রপ্তানি পোশাকের কাঁচামাল আমদানিতে শূন্য শুল্ক। সেই সুবিধা নিয়ে দেশে পোশাক তৈরি করে তা বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। তৈরি পোশাক এককভাবে মোট রপ্তানির প্রায় ৮৫ শতাংশ রপ্তানি করছে। এ সুযোগ অন্য কোনো খাতকে না দেওয়ার ফলে বাংলাদেশ থেকে একক কোনো খাত থেকে ১০০ কোটি ডলারও রপ্তানি করতে পারছে না। রপ্তানি পণ্যের মধ্যে পোশাক খাতের বাইরে রপ্তানি হয় প্রায় ১ হাজার ৩৯৩ ধরনের পণ্য। কিন্তু এসব পণ্য মোট রপ্তানির মাত্র ১৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ। অন্যদিকে তৈরি পোশাক খাতের মাত্র ৫৮৪টি আইটেম থেকে বাকি প্রায় ৮২ শতাংশ রপ্তানি করা হয়।