| |
               

মূল পাতা জাতীয় অর্থনীতি কীভাবে বিমানবন্দর থেকে ৫৫ কেজি স্বর্ণ গায়েব হল?


বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

কীভাবে বিমানবন্দর থেকে ৫৫ কেজি স্বর্ণ গায়েব হল?


রহমত নিউজ ডেস্ক     06 September, 2023     05:56 PM    


রাজধানী ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের লকার থেকে সাড়ে ৫৫কেজির বেশি স্বর্ণ খোয়া যাওয়ার ঘটনা ফাঁস হবার দুদিন পরও এনিয়ে রহস্য রয়ে গেছে। তবে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণ গায়েবের এ ঘটনায় অন্তত তিন জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনাটি নিয়ে রবিবার রাতেই উত্তরার বিমানবন্দর থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের হয়। এতে চারজনের নাম ও কয়েকজনকে অজ্ঞাত উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে।

উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার তৌহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, তারা এ পর্যন্ত আট জনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তাদের মধ্যে দুজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা এবং একজন শুল্ক বিভাগের সিপাহী এই চুরির সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ।

স্বর্ণ চুরির এই ঘটনা শনিবার ঢাকা শুল্ক বিভাগের নজরে এলেও বিষয়টি জানাজানি হয় পরদিন রবিবার। বিমানবন্দরের শুল্ক বিভাগের গুদামে স্বর্ণের হিসাব খতিয়ে দেখে এই বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ গায়েব হওয়ার বিষয়ে তারা নিশ্চিত হন। বিমানবন্দরে গত তিন বছরে জব্দ হওয়া স্বর্ণ শুল্ক বিভাগের ঐ গুদামে রাখা হয়েছিল। ঘটনাটি জানাজানির পর বিমানবন্দরের মতো সংরক্ষিত এলাকা থেকে কীভাবে এই চুরির ঘটনা ঘটল, এবং সেটি ছাড়াও আরও নানা ধরণের প্রশ্ন উঠেছে।

বিমানবন্দরে জব্দ স্বর্ণ কোথায় রাখা হয়?
বিমানবন্দরে সাধারণত তিন ক্যাটাগরিতে সোনা উদ্ধার হয়। প্রথমত, বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের কাছ থেকে বৈধ পরিমাণের চাইতে অতিরিক্ত স্বর্ণ জব্দ করা হয়।দ্বিতীয়ত, শুল্কের জন্য সাময়িকভাবে আটক করা স্বর্ণ যার শুল্ক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ না করলে বাজেয়াপ্ত করা হয়। তৃতীয়ত চোরাচালানের মাধ্যমে এবং বিমানবন্দরের বিভিন্ন স্থানে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া স্বর্ণ। এই তিন ক্যাটাগরিতে জব্দ করা স্বর্ণ বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের নিচতলার শুল্ক বিভাগের গুদামে সংরক্ষণ করা হয়।

বিমানবন্দরের পরিচালক মিরাজ হোসেন জানিয়েছেন, স্বর্ণ জব্দ হওয়ার পর এর তালিকা তৈরি করে সেগুলো শুল্ক বিভাগের গুদামে রাখার নির্দেশনা আছে। তালিকার একটি কপি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) পাঠাতে হয়। কাস্টমস কমিশনারের দায়িত্ব প্রতি মাসে গুদামে সংরক্ষিত স্বর্ণ তালিকা অনুযায়ী ঠিক আছে কি না তা তদারকি করা। সেই তদারকির একটি প্রতিবেদনও এনবিআর-এর কাছে পাঠাতে হয়। অনেক সময় দীর্ঘদিন ভল্টে সোনা ফেলে রাখা হলে নিরাপত্তাহীনতা দেখা দেয়। তাই স্বর্ণ জব্দ হওয়ার পর যতো দ্রুত সম্ভব বা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। যেসব স্বর্ণ জব্দের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়, সেক্ষেত্রে আদালতে বিচারকাজ শেষে এই স্বর্ণ কোথায় থাকবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সাধারণত মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আটক স্বর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে অস্থায়ী খাতে জমা থাকে।

এতো পরিমাণ স্বর্ণ কেনো জমে ছিল?
মামলার তদন্ত তদারকিতে যুক্ত উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সবশেষ এই স্বর্ণ লোপাটের ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে তারা জানতে পারেন স্বর্ণের নিরাপত্তায় যেসব নিয়ম রয়েছে তার কোন তোয়াক্কা করা হয়নি। স্বর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দেখিয়ে ২০২০ সাল থেকে জব্দ হওয়া স্বর্ণ শুল্ক বিভাগের গুদামে রেখে দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের ভল্টে জমা দেয়ার জন্য স্বর্ণের তালিকাও তৈরি করা হয়নি। শুল্ক বিভাগের দায়িত্বে অবহেলার কারণে এত বড় চুরির ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশের দাবি, স্বর্ণ চুরির বিষয়টি শুল্ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গত মাসেই টের পেয়েছিলেন। শুরুতে তারা সাম্প্রতিক কয়েকটি চালানের মাধ্যমে জমা হওয়া স্বর্ণের বারের হদিস পাচ্ছিলেন না। এরপর তারা গুদামে সংরক্ষিত মালামাল কাগজপত্রের হিসাবের সঙ্গে মিলিয়ে দেখার উদ্যোগ নেন। এরপর শনিবার হঠাৎ একটি লকার ভাঙা বলে তারা পুলিশে খবর দেন। দাবি করা হয় স্বর্ণ চুরি গিয়েছে। যদিও স্বর্ণ চুরির ঘটনাটিকে 'নাটক' বলে মনে করছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।

এতো পরিমাণ স্বর্ণ গায়েব হল কীভাবে?
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত দোসরা সেপ্টেম্বর কাস্টমস হাউজের গুদাম কর্মকর্তা পুলিশকে জানিয়েছেন যে, বিমানবন্দর লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ডস-সংলগ্ন ট্রানজিট গোডাউন টিজিআর-১-এর গুদামের ভেতরে প্রবেশ করে তিনি দেখতে পান, মূল্যবান পণ্য সংগ্রহের জন্য গুদামে রাখা একটি স্টিলের আলমারির দরজার লক ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। এর আগের রাতে প্রতিদিনের মতো আটক করা পণ্য টিজিআর ১-এ জমা করে কাজ শেষে আনুমানিক রাত ১২টা ১৫ মিনিটে গোডাউনে তালা বন্ধ করে চাবি নিয়ে চারজন কর্মকর্তা একসঙ্গে বিমানবন্দর কাস্টমস এলাকা ত্যাগ করেন।

পুলিশ বলছে, তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ভেতরে একটি স্টিলের আলমারির লক ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান এবং গোডাউনের পূর্বপাশের ওপরের দিকে এসির বাতাস বের হওয়ার টিনের কিছু অংশ কাটা দেখতে পান। পরে অনুসন্ধানে চুরির বিষয়টি সামনে আসে। ২ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ১৫ মিনিট থেকে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের মধ্যে যে কোন সময় 'কে বা কারা সোনার বার ও স্বর্ণালংকার গোডাউন থেকে স্টিলের আলমারির লকার ভেঙে চুরি করে নিয়ে যায়' বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, ভাঙা আলমারির পাশে ধাতব বস্তু কাটার যন্ত্র পাওয়া গিয়েছে। গুদামের এসির পাশে ভেন্টের অংশটি এই যন্ত্র দিয়ে কাটা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। বাইরে থেকে চোর গুদামে ঢুকেছে, এমনটা দেখাতে জায়গাটি পরিকল্পিতভাবে কাটা হতে পারে বলে পুলিশ ধারণা করছে। তারা বলছে, বাস্তবে ওইটুক কাটা অংশ দিয়ে কোনও মানুষের পক্ষে ভেতরে ঢোকা সম্ভব নয়। এদিকে ঘটনাস্থলের কোন সিসিটিভি ফুটেজ পায়নি পুলিশ।

বিমানবন্দরের ভেতরের প্রতিটি কোনা যেখানে সিসিটিভি ক্যামেরায় নজরদারি করা হয় সেখানে শুল্ক বিভাগের গুদামে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকার বিষয়টি সন্দেহজনক হিসেবে দেখছে পুলিশ। তাদের ধারণা জব্দ হওয়া স্বর্ণ জমা দেওয়ার সময় দায়িত্বরতরাই অনেক দিন ধরে স্বর্ণের বার এবং অলঙ্কারগুলো একটু একটু করে সরিয়েছেন। এছাড়া বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ সরকারি বেশ কয়েকটি সংস্থা কাজ করে। বিমানবন্দরে চোরাচালান বন্ধে শুল্ক গোয়েন্দা, কাস্টম হাউজ, সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা, এভিয়েশন সিকিউরিটি (এভসেক), এপিবিএনসহ ২৪টি সরকারি সংস্থা কাজ করে। যাত্রীদের স্ক্রিনিংয়ের জন্য মেটাল ডিটেক্টর, হ্যান্ড-হেল্ড মেটাল ডিটেক্টর, আর্চওয়ে, বডি স্ক্যানার মেশিন রয়েছে।

তৌহিদুল ইসলামের দাবি, শুল্ক বিভাগের লোকজন জড়িত না থাকলে এতো নিরাপত্তার মধ্যে কোনোভাবেই ভল্ট থেকে স্বর্ণ বের করে আনার সুযোগ নেই।

এদিকে রবিবার সাংবাদিকদের ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ মোর্শেদ বলেন, বিমানবন্দর এমনিতেই সংরক্ষিত এলাকা। যেখান থেকে চুরি হয়েছে বলা হচ্ছে, তা আরও সংরক্ষিত। বিমানবন্দরের সকল দায়িত্বপ্রাপ্তরাও ওই গুদামে যেতে পারে না। সেখানে এভাবে চুরি হওয়ার ঘটনা অনেকটা অস্বাভাবিক। কাস্টমসে যারা কাজ করে তারাই গুদামে যেতে পারেন। এছাড়া তদন্ত পরিচালনা করতে গিয়ে পুলিশ গুদামের যে পরিবেশ দেখেছে, সেখানে এই মূল্যবান বস্তুটি সংরক্ষিত রাখার যথার্থতা নিয়েও তারা প্রশ্ন তুলেছে। ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিমানবন্দরে জব্দ হওয়া ২০০ কেজির বেশি স্বর্ণ গুদামে সংরক্ষিত ছিল। এরমধ্যে থেকে ৫৫ কেজির বেশি চুরির ঘটনা ঘটেছে। পেশাদার চোর হলে একবারে সব স্বর্ণই নিয়ে যেত। কিন্তু এখানে প্রতিটি প্যাকেট থেকে কিছু কিছু করে স্বর্ণের বার ও অলংকার সরানো হয়েছে।

জব্দ স্বর্ণ কী করা হয়?
বাংলাদেশ ব্যাংক পরে এই স্বর্ণ নিলামে তুলে বিক্রি করে। যেসব স্বর্ণের কোন দাবিদার নেই সেগুলোই নিলামে তোলা হয়। আর দাবিদার থাকলে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংকের ভল্টেই থাকে। নিলাম কমিটিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) একজন করে প্রতিনিধি থাকেন। তারা নিলাম থেকে পাওয়া অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেন। এদিকে ব্যাংকের ভল্টের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকে বাংলাদেশে ব্যাংকের পুলিশের একটি কন্টিনজেন্ট। যারা সার্বক্ষণিক ভল্টের পাহারায় থাকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা খুরশিদ ওয়াহাব জানিয়েছেন, ভল্ট এলাকাকে বাংলাদেশে ব্যাংকের ভাষায় 'মহা নিরাপত্তা এলাকা' বলা হয়। স্বর্ণের যে ভল্ট সেখানে ঢুকতে গেলে ছয় স্তরের নিরাপত্তা ও গেটকিপিং পার হতে হয়। শুরুতে পাঞ্চ কার্ড, তার পর কলাপসিবল গেট যেখানে দেহ তল্লাসি হয়। স্বর্ণ বা বুলিয়ন ভল্ট পর্যন্ত তিনটি ভল্টের দরজা রয়েছে। আর সেই ভল্টে আলাদা আলমারির গুলোর আলাদা আলাদা চাবি। কিন্তু সেই চাবিও আবার সিন্দুকে রাখা হয়। আর তার দায়িত্বে থাকেন মাত্র দুজন। রাতে ভল্ট বন্ধ করার পর কাউকে ঢুকতে দেয়া হয় না।

বাংলাদেশে কী পরিমাণ স্বর্ণ আনা বৈধ
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বাংলাদেশে যত সোনার বার আসে তার সিংহভাগই আসে দুবাই, আবুধাবি, শারজা থেকে আসা ফ্লাইটে। কাস্টম হাউসের ব্যাগেজ রুলসের আওতায় যাত্রীরা স্বর্ণ ও স্বর্ণের বার শুল্ক পরিশোধ করে আনতে পারবেন। সংশোধিত ২০২৩-২৪ আইনানুযায়ী, একজন ব্যক্তি বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ ১১৭ গ্রাম পর্যন্ত স্বর্ণের বার আনতে পারেন। সাধারণত একটি স্বর্ণের বার ১০০ গ্রাম ওজনের হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে একটি বার আনা বৈধ। এর বেশি স্বর্ণের বার আনলে তা বাজেয়াপ্ত করার বিধান রয়েছে। কেউ স্বর্ণের বার বহন করলে বাহককে বিমানবন্দরে নামার আগে উড়োজাহাজে দেওয়া নির্দিষ্ট ফরমে স্বর্ণের বার থাকার ঘোষণা (ডিক্লারেশন) দিতে হয়। পরে বিমানবন্দরে নেমে কাস্টম কর্মকর্তার কাছে গিয়ে শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। প্রতি ১১ দশমিক ৬৭ গ্রাম বা এক ভরির জন্য ৪ হাজার করে প্রতিটি বারের জন্য ৪০ হাজার টাকা শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। দুটি বারের বেশি স্বর্ণ আনলে সেটি জব্দ করে বহনকারীকে ডিটেনশন মেমো বা রসিদ দেয় কাস্টম কর্তৃপক্ষ। জব্দকৃত স্বর্ণের বার পরবর্তীতে আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রক দপ্তর ছাড়পত্র, শুল্ক-কর ও অর্থদণ্ড পরিশোধ করে ফেরত পাওয়া যায়। তবে এ ক্ষেত্রে স্বর্ণের ট্যাক্সের ১০ গুণ পর্যন্ত জরিমানা আদায় করা হতে পারে। একটি বারের জন্য সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা জরিমানা করা যায়। তবে একজন যাত্রী বিদেশ থেকে শুল্ক-কর ছাড়াই দেশে আসার সময় ১০০ গ্রাম (সাড়ে ৮ ভরি) ওজনের স্বর্ণালংকার আনতে পারবেন। তবে সেটি ২২ ক্যারেটের হতে হবে এবং এক ধরনের অলংকার ১২টির বেশি আনা যাবে না।

নির্ধারিত ১০০ গ্রামের বেশি পরিমাণ স্বর্ণালংকার আনলে অতিরিক্ত প্রতি গ্রামের জন্য প্রায় দুই হাজার টাকা শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। বাণিজ্যিক পরিমাণ বলে মনে হলে শুল্ক বিভাগ তা আটক করতে পারবে। আটক করা স্বর্ণালংকার পরে অ্যাডজুডিকেশন প্রক্রিয়ায় শুল্ক-কর এবং অর্থদণ্ড পরিশোধ সাপেক্ষে ফেরত পেতে পারেন। আর চোরাচালান বলে মনে হলে শুল্ক বিভাগ সরাসরি ফৌজদারি মামলা করবে।

এর আগে এমন ঘটনা ঘটেছে?
এর আগে ২০১৯ সালে বেনাপোল কাস্টমস হাউজ থেকেও একই কায়দায় প্রায় বিশ কেজি স্বর্ণ গায়েবের ঘটনা ঘটেছিল। পরে অডিটের আগ মুহূর্তে চুরির কথা বলা হয়েছিল। ওই ঘটনাটি ঘটেছিল সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির সময়। এবারও তেমনটাই হয়েছে। ঢাকায় বিমানবন্দর থেকে সবচেয়ে বড় একটি সোনা চোরাচালান জব্দ হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল ২০১৩ সালের ২৪ জুলাই। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজের কার্গো হোল্ড থেকে ১২৪ কেজি সোনা জব্দ করা হয়। পরের বছর ২০১৪ সালেও বিমানের একটি ফ্লাইটের টয়লেটে থেকে ১০৬ কেজি স্বর্ণ জব্দের ঘটনা ঘটে। গুদাম থেকে সোনা খোয়া যাওয়ার সাম্প্রতিক ঘটনায় শুল্ক বিভাগ একজন যুগ্ম কমিশনারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। দুদকও ঘটনা পর্যবেক্ষণে আছে বলে জানা গিয়েছে।