| |
               

মূল পাতা রাজনীতি এখনো ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা বিএনপির জন্য কতটা অস্বস্তিকর?


বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

এখনো ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা বিএনপির জন্য কতটা অস্বস্তিকর?


রহমত নিউজ     21 August, 2023     09:24 AM    


২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল, রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের’ সহায়তায় ঐ হামলার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার চেষ্টা করা হয়েছে। সেই সময় ক্ষমতায় ছিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ও জামায়াত মিলে চারদলীয় জোট।

রাজনীতি বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, ১৫ই অগাস্টের পরে ওই হামলার ঘটনা ছিল আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে বড় আঘাত। এর ফলে রাজনৈতিক যে তিক্ততা শুরু হয়েছে, এখনো তার সমাধান হয়নি।গ্রেনেড হামলার জন্য আওয়ামী লীগ বিএনপি এবং তাদের মিত্রদের দায়ী করে আসলেও বিএনপির পক্ষ থেকে বরাবরই ওই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ নাকচ করে দেয়া হয়েছে। তবে, প্রায় বিশ বছর হলেও একুশে অগাস্টের ঘটনা এখনো রাজনৈতিকভাবে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে একটি বড় ইস্যু হয়ে রয়েছে। বিশেষ করে প্রায় বিশ বছর পরেও একই ঘটনা বিএনপির জন্য একটি নাজুক ইস্যু হিসাবে রয়ে গেছে।

বিএনপির বিরুদ্ধে ঘটনা ভিন্নখাতে নেয়ার অভিযোগ
২০০৪ সালের ২১শে অগাস্ট ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সমাবেশ চলার সময় গ্রেনেড হামলা হয়। সেই হামলায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবং শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতা অল্পের জন্য বেঁচে গেলেও ২৪ জন নিহত হয়েছিলেন, আহত হয়েছিলেন চারশোর বেশি নেতা-কর্মী।রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে আগে থেকে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও একুশে অগাস্টের ঘটনায় দুই দলের মধ্যে গভীর অবিশ্বাস আর চরম তিক্ততা তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক সেই ফাটল পরবর্তীতে আরও দীর্ঘ হয়েছে। বিশেষ করে হামলার ঘটনার পরে যেভাবে তদন্তের নামে 'জজ মিয়া নাটক' সাজানোর মাধ্যমে মামলা ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, সেই সময়ের বিএনপি নেতারা যেসব মন্তব্য করেছে, সেসব কারণে বিএনপির আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যেহেতু বিএনপির আমলে ঘটনাটি ঘটেছে, এই ঘটনা নিয়ে বিএনপির প্রতিক্রিয়া যা ছিল, সেই সময়ে যে তদন্ত হয়েছে, সবকিছুই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। জজ মিয়ার ব্যাপারটি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পরে বোঝা গেছে, এটাকে ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা করেছে বিএনপি। ফলে দায়টা তাদের ওপর এসে পড়ে। অবশ্যই এরকম একটা ঘটনা ঘটার পেছনে অনেকে জড়িত থাকতে পারে।

হামলার পরে ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকরাও বিবৃতি দিয়ে সুষ্ঠু ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত তদন্ত করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছিল। অর্থাৎ তাদের মধ্যেও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া নিয়ে এক ধরনের আশঙ্কা ছিল। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৭ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর হামলার ঘটনা পুনঃ তদন্ত শুরু হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আবার তদন্ত শুরু করা হয়। ২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি আবদুল হান্নানকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার জবানবন্দির পরে পুরো মামলা ভিন্ন চেহারায় রূপ নেয়। আদালতে উপস্থাপিত মুফতি হান্নানের জবানবন্দিতে বলা হয়, বিএনপি সরকারের শীর্ষ কয়েকজন ব্যক্তির সহায়তায় তিনি আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিলেন।

জবানবন্দিতে উল্লেখ করা হয়, বিএনপি সরকারের উপমন্ত্রী আব্দুল সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিনের মাধ্যমে মি. পিন্টুর সাথে প্রথম যোগাযোগ হয়। এরপর তার মাধ্যমে তারা তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের কাছে কাছে যান। লুৎফুজ্জামান বাবর এবং কুমিল্লার তৎকালীন নির্বাচিত সংসদ সদস্য কায়কোবাদকে সঙ্গে নিয়ে তারা হাওয়া ভবনে যান, যেটি ছিল বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের কার্যালয়। মুফতি হান্নান তাঁর জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, হাওয়া ভবনের বৈঠকে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, হারিছ চৌধুরী, লুৎফুজ্জামান বাবর, ডিজিএফআই-এর তৎকালীন প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী এবং ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুর রহিম উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতির কিছুক্ষণ পর তারেক রহমান সেখানে আসেন। আদালতে দেয়া মুফতি হান্নানের জবানবন্দি থেকে এমনটাই জানা যাচ্ছে। মুফতি হান্নানের ভাষ্য অনুযায়ী, তার সহযোগীরা যাতে হাওয়া ভবনে আর না আসে সেটি জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আপনারা বাবর সাহেব এবং আব্দুস সালাম পিন্টুর সাথে যোগাযোগ করে কাজ করবেন।’

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের একজন মোশাররফ হোসেন কাজল ২০১৮ সালে রায় হওয়ার পর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতেই ২১ অগাস্টের হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে এবং এই হত্যাকাণ্ডে রাষ্ট্রযন্ত্র জড়িত ছিল বলে রায়ের পর্যবেক্ষণে তখন উঠে এসেছিলো।

আদালতের রায় ঘোষণার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন ১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্টের মতোই ২১শ অগাস্টের হামলার মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যা এবং আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে চেয়েছিল৷ আর এই ষড়যন্ত্রে তখনকার সরকার ও রাষ্ট্রযন্ত্র জড়িত৷ তারেক রহমানের হাওয়া ভবনে বসে এই হামলার ষড়যন্ত্র হয়েছে৷'

হাওয়া ভবন সম্পর্কে আদালতের পর্যবেক্ষণের বিষয়য়ে মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, "তারা এক ও অভিন্ন উদ্দেশে এই ষড়যন্ত্র করে আইনের আশ্রয়ে এই অপরাধীদের সোপর্দ না করে তারা এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে কাজ করেছে।

পরবর্তীতে হামলার আলামত নষ্ট করা এবং প্রকৃত আসামীদের আড়াল করার জন্য সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা কাজ করেছেন বলে অভিযোগে বলা হয়। তবে এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে বিএনপির নেতারা। তারেক রহমান ও লুৎফুজ্জামান বাবরের আইনজীবীদের দাবি, মুফতি হান্নানের জবানবন্দি জোর করে নেয়া হয়েছি। সেই সময় বিএনপি নেতাদের আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া রায়ের পর বলেছেন, মুফতি হান্নানকে ৪০০ দিন রিমান্ডে রেখে এ স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছিল।এমনকি মুফতি হান্নান সে জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেছিল বলে দাবি করেন সানাউল্লাহ মিয়া।

তবে আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিলো, আর্জেস গ্রেনেডের মতো অস্ত্র, যা যুদ্ধে ব্যবহার হয়, রাষ্ট্রযন্ত্রের সাহায্যে তার বিস্ফোরণ ঘটানো হলো প্রকাশ্য দিবালোকে আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে। এই মামলায় ২০১৮ সালে আদালত যে রায় দিয়েছিল, সেখানে বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ শীর্ষ কয়েকজন নেতাকে নানা মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। সেই সঙ্গে বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি বলেছিল, আওয়ামী লীগ ২১শে অগাস্ট নিয়ে রাজনীতি করছে এবং রাজনৈতিক কারণেই তারেক রহমানকে ফাঁসানো হয়েছে। সেদিনই একটি সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ‘বিএনপি মনে করে এ রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ২১ শে অগাস্ট সেই নৃশংস ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তৎকালীন বিএনপি সরকারই সেই সময় প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি দেয়ার জন্য মামলা দায়ের করেছে। স্থানীয় তদন্ত সংস্থার পাশাপাশি এফবিআই এবং ইন্টারপোলকে সম্পৃক্ত করেছে।’

তবে নথিপত্রে দেখা যায়, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে হওয়া প্রথম তদন্তের কোনো প্রতিবেদন দাখিল হয়নি। ২০১৮ সালে রায় হওয়ার পর বিএনপি নেতা মওদুদ আহমেদ দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, যদি বলেন যে কোন বড় ঘটনার জন্য যে কোন দেশে সরকারকে শেষ পর্যন্ত অবশ্যই দায়িত্ব নিতে হয়, সেটা তারা নিয়েছে। নিয়ে যতটুকু করার করেছে, কিন্তু আওয়ামী লীগ তো কো-অপারেট করে নাই।"

এখনো বিএনপির জন্য কতটা বিব্রতকর?
বিএনপি নেতারা দাবি করেন, রাজনৈতিকভাবে এই মামলায় তারেক রহমান এবং বিএনপির নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একুশে অগাস্টের ঘটনাকে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে বলেও তারা দাবি করেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, তখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল, ওই মুহূর্তে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ছিল বিএনপি, আমাদের তো এ ধরনের কোন কাজে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তাই নেই। আমরা তাদের কোন প্রতিদ্বন্দ্বী বলেও মনে করিনি। এরকম ঘটনায় তো বিএনপির জড়িত হওয়ার দরকার নেই। বিএনপির তো এখানে চাপে পড়ার কিছু নেই। সম্পর্ক খারাপ করার জন্য তারা একটা ঘটনাকে মূলধন হিসাবে ব্যবহার করছে। আপনি এটাকে যদি মূলধন করে সবসময় সামনে নিয়ে আসেন, তারা যখন যুক্তিতর্কে টিকে থাকতে পারে না, তখন তারা এই ইস্যুগুলো বারবার সামনে নিয়ে আসে। তারা রাজনীতিকে সবসময় পেছনের দিকে টানে, তারা সবসময় একটা ডিভাইসিভ পরিবেশ সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ ধরতে চায়।‘ সব কিছুর ডিউ প্রসেস আছে। যেটার চার্জশিট হয়ে গেছে, পরবর্তীতে আবার তাদের একজন নিজস্ব লোককে দায়িত্ব দিয়ে, তাকে দিয়ে তদন্ত করে নতুনভাবে তারেক রহমান সাহেবকে এখানে ঢোকানো হয়েছে। এই বিষয়গুলো তো মানুষের কাছে পরিষ্কার।

২০০৪ সালে একুশে অগাস্টের হামলার সময় ক্ষমতায় ছিল বিএনপি। পরবর্তীতে সেই মামলার তদন্ত নিয়ে জজ মিয়া নাটক, সরকারের প্রতিক্রিয়া -এসব মিলিয়ে পুরো বিষয়টি বিএনপির জন্য অনেক প্রশ্ন তৈরি করেছে। কিন্তু বিএনপি নেতা দাবি করেন, এই ঘটনায় দল জড়িত ছিল না, বরং আওয়ামী লীগ পুরনো ইস্যুকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকাণ্ড, জজ মিয়া নাটক, তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন- এসবের কারণে বিএনপির অবস্থান নিয়ে সবসময়েই একটা প্রশ্ন রয়ে গেছে। সেই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারায় এতো বছর পরেও এসে এই ইস্যুতে তাদের অবস্থান অনেকটা নাজুকই রয়ে গেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ বলছেন, এটা নিয়ে রাজনীতিটা হচ্ছে। বিএনপি এই ঘটনায় বেশ ব্যাক-ফুটে চলে গেছে বলেই আমি বলবো। একসময় তারা বলতো, দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য আওয়ামী লীগ নিজেরাই এটা সাজিয়েছে। আমি যতটা বুঝি, দল হিসাবে বিএনপি এই ঘটনায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছে। বিএনপির সরকারের আমলে এটা হওয়ায় এবং অভিযুক্তের যে তালিকা আমরা দেখি, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের নাম আসে, সেগুলো সত্যি হলে একটা সরকারের রাজনৈতিক নির্দেশনার বাইরে গিয়ে তারা কিছু করেছেন, সেটা মনে হয় না। সুতরাং আসল দায় শেষপর্যন্ত দলগতভাবে বিএনপির বা তাদের সরকারের ওপরেই চলে আসে। এই বিষয়টা বিএনপি এখন পর্যন্ত খোলাসা করতে পারছে না। ১৫ অগাস্টের সময় বিএনপির জন্মই হয়নি, কিন্তু আমরা দেখি ১৫ই অগাস্টের ঘটনার ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে আওয়ামী লীগ বারবার জিয়াউর রহমানের নাম নিয়ে আসছে। একসময় তারা দুই দল একত্রে এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনও করেছে। কিন্তু ২১শে অগাস্ট ঘটনার পরে আর তাদের মধ্যে রিকনসিলিয়েশন হয়নি, সেটা হওয়াও খুব ডিফিকাল্ট। এটা (একুশে অগাস্টের হামলার ঘটনা) বিএনপির জন্য খুব অস্বস্তিকর আর আওয়ামী লীগের জন্য একটা শক্তিশালী অস্ত্র।