| |
               

মূল পাতা রাজনীতি অন্যান্য ‘সংঘাত নয়, সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই’


‘সংঘাত নয়, সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই’


রহমত নিউজ ডেস্ক     05 August, 2023     10:14 PM    


বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এম এ মতিন বলেছেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। দেশের মানুষ আতঙ্কিত-শংকিত। জ্বালাও-পোড়াও এবং জানমালের ক্ষতি সাধারণ জনগণ চায় না। অথচ, কেউ ক্ষমতায় থাকার জন্য ও কেউ ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পরস্পর বিরোধী আক্রমণ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে এ দুই বৃহৎ রাজনৈতিক জোট পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিচ্ছে। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। দুই বৃহৎ রাজনৈতিক জোটের এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন রাজনৈতিক আচরণে দেশবাসী আজ শংকিত। 

আজ (৫ আগস্ট) শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মাসুম বিল্লাহ মিয়াজি ও এডভোকেট ইসলাম উদ্দিন দুলালের সঞ্চালনায় মহাসমাবেশে  বক্তব্য দেন, আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত বাংলাদেশ চেয়ারম্যান মাওলানা কাজী মুঈনুদ্দীন আশরাফী, মহাসচিব মাওলানা সৈয়দ মছিহুদ্দৌলাহ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট আবু নাসের তালুকদার, জাতীয় পার্টির কাজী মামুনুর রশিদ, ইসলামী ফ্রন্টের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ তৈয়ব আলি, শায়খ আবু সুফিয়ান খান আবেদী, এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল, এম সোলাইমান ফরিদ, অধ্যক্ষ আবু জাফর মঈনুদ্দিন, শাহজালাল আহমদ আখঞ্জী, সৈয়দ মুজাফফর আহমদ মুজাদ্দেদি, পীরজাদা গোলামুর রহমান আশরফ শাহ, ইঞ্জিনিয়ার আমান উল্লাহ, অধ্যক্ষ আলী মোহাম্মদ চৌধুরী, রেজাউল করিম তালুকদার, এডভোকেট ইকবাল হাসান, যুবসেনা সভাপতি মোহাম্মদ আখতার হোসেন চৌধুরী, ছাত্রসেনা সভাপতি সাইফুদ্দিন আহমদ প্রমূখ। 

এম এ মতিন বলেন, আমরা মনে করি, সহিংস ও সংঘাতময় পরিস্থিতি এড়াতে আলোচনা সর্বোত্তম পথ। দেশের গণতন্ত্রের স্বার্থ সমুন্নত রাখা এবং সংকটময় অর্থনীতি যেন আরো হুমকিতে না পড়ে, সেই বিবেচনাকে প্রাধান্য দেওয়া জরুরি। সব রাজনৈতিক দলের উচিত একটি শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিত করতে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেওয়া। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলছি, এ নির্বাচন কমিশন কার্যকর স্বাধীন না হওয়ায় সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন করতে বারবার ব্যর্থ। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের মূল ক্ষমতা ছিল আরপিও এর ৯১(ক) ধারা। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এর সংশোধন করে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন এখন ‘নখদন্তহীন বাঘে’ পরিণত হয়েছে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা আরও সংকুচিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন কার্যকর স্বাধীন না হলে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই আমরা সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি। 

তিনি বলেন, একদিকে বৈশ্বিক মন্দায় রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতি ও রিজার্ভ সংকট অর্থনীতির নাজুক অবস্থা, অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতিতে খেটে খাওয়া দরিদ্রপীড়িত মানুষগুলো অনাহারে, অর্ধাহারে কঠিন সময় পার করছে। রূঢ় বাস্তব সত্য হলো, কিছু আমলা ও কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তির খাতিরের প্রকল্পে দেশের কোটি কোটি টাকা তছরুপ করা হচ্ছে। এভাবে অসহায় জনতার টাকা আত্মসাৎ, কিছু আমলা ও রাজনীতিবীদ কর্তৃক বিদেশে পাচারকৃত টাকার পাহাড় গড়ার মহোৎসব চলছে। কয়েকজন ব্যক্তির হাতে সব ব্যবসা-বাণিজ্য জিম্মি হয়ে গেছে। বর্তমানে অর্থনীতিক দুরাবস্থা থেকে মুক্তির জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য জাতীয় ঐক্যের পাশাপাশি স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরী।

তিনি আরো বলেন, ইসলামের মূলধারা সুফিবাদী শান্তিপ্রিয় জনতা এদেশে রাষ্ট্রীয় ভাবে এখনো অবহেলিত ও চরম বঞ্চনার শিকার। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ও  ছাত্রসেনার অসংখ্য নেতাকর্মী হত্যাকাণ্ডের কোন বিচার কেউ করেনি। বিচারের বাণী আজো নিভৃতে কাঁদছে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ মসজিদসমুহ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সুন্নী মুসলিম তথা শান্তিপ্রিয় জনতার কোন প্রতিনিধিত্ব নেই। সর্বত্রই ইসলামের নামে স্বাধীনতা বিরোধী উগ্রবাদীদের দখলদারিত্ব বিদ্যমান। অধিকার কেউ দেয় না, আদায় করে নিতে হয়। রাষ্ট্রীয় নিগ্রহের শিকার সুফিবাদী শান্তিপ্রিয় জনতার অধিকার আদায়ের জন্য  আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামী ফ্রন্টের মোমবাতি প্রতীকে ভোট দিয়ে অধিকারহারা শান্তিপ্রিয় জনতার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য  সর্বস্তরের জনতার প্রতিও  আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব অধ্যক্ষ স.উ.ম আবদুস সামাদ বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রভাবশালী কিছু দেশের সক্রিয়তা ও তৎপরতা আমরা দেখতে পাচ্ছি। রাজনৈতিক দলগুলোর এ দায়িত্বজ্ঞান থাকা প্রয়োজন যে, দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি করা যাবে না, যেন বাইরের কোনো শক্তি অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে বা প্রভাব খাটাতে না পারে। এমন রাজনীতি চাই না, যাতে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক দলের নেতাকর্মীদের সবার আগে হতে হবে দেশপ্রেমিক ও দায়িত্বশীল। যেকোনো সংঘাতময় পরিস্থিতি দেশের অর্থনীতিসহ সার্বিকভাবেই যে অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তা আমরা আগেও দেখেছি। ফলে একটি উদার ও পরমতসহিষ্ণু পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেখানে সবার গণতান্ত্রিক অধিকার অনুযায়ী সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ করার অধিকার থাকবে, মত প্রকাশের অধিকার থাকবে, নিজের পছন্দমত ভোট প্রদানের অধিকার থাকবে। এমন রাজনৈতিক আবহ তৈরি করতে পারলে যে কোনো রকমের সংকট, বিশেষ করে চলমান রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলা করা অধিকতর সহজ হবে। এতে দেশ-জাতি উপকৃত হবে।