| |
               

মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন ইসলামী শিক্ষার প্রসারে ১৬ দফা দাবি কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের


ইসলামী শিক্ষার প্রসারে ১৬ দফা দাবি কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের


রহমত নিউজ ডেস্ক     13 June, 2023     12:27 PM    


দেশের শান্তি-শৃঙ্খরা, নিরাপত্তা ও ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষার স্বার্থে ইসলামী শিক্ষার প্রসারের আহবান জানিয়ে কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে পরিষদের ১২ দফা দাবি ও সুপরিশসমূহ উত্থাপন করা হয়।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) দুপুর ১২টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, সাগর-রুনি মিলনায়তনে সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পরিষদের সভাপতি ও দেওনার পীর অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মিজানুর রহমান চৌধুরী এসব দাবি জানান।

কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের দাবি ও সুপরিশসমূহ- 

১. সাধারণ শিক্ষার মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত দ্বীনি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা। একইসঙ্গে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ক্বারী সাহেবদের মাধ্যমে সহিহ-শুদ্ধভাবে কুরআন মাজিদ তেলাওয়াত শেখানো এবং বুনিয়াদি ইসলামি শিক্ষার ব্যবস্থা করা। অন্য ধর্মের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ধর্মের শিক্ষা অর্জন করবে।

২. দ্বীনি শিক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক সকল আইন ও বিধি-বিধান বাতিল বা সংশোধন করা ।

৩. কওমি মাদরাসার স্বকীয়তা ও স্বতন্ত্রতা বজায় রাখা।

৪. মাদরাসা-মসজিদ দাতব্য প্রতিষ্ঠানসমূহে দাতাদের দান সম্পূর্ণভাবে আয়করমুক্ত রাখার পূর্ববৎ আইন চালু অথবা নতুন বিধি-বিধান প্রণয়ন ও কার্যকর করা।

উল্লেখ্য, বিশ্বের অধিকাংশ দেশে দাতব্য ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের দান-অনুদান সম্পূর্ণ আয়করমুক্ত। এমতাবস্থায় দ্বীনি প্রতিষ্ঠানসমূহের দাতারা যেন স্বাচ্ছন্দ্যে দান-খায়রাত করতে পারেন- এ জন্য কওমি মাদরাসা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় দান-অনুদান আয়করমুক্ত রাখার পূর্ববর্তী বিধানটি (Exempted From Income Tax Approved Under Section 15-D of The Income Tax Act 1922, Vide G. No. 71(122-1 Tp/66 Govt. of Pakistan, Ministry of Finance), Central Board of Revenue, Islamabad, The 2nd Jan, 1967) নবায়ন করে কওমি মাদরাসা বোর্ডের অধিভূক্ত সকল মাদরাসায় কার্যকর করা অতীব জরুরি।

৫. মাদরাসা শিক্ষার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মনস্তাত্ত্বিক চাপ। কোনো কোনো মহল অনৈতিকভাবে প্রচারমাধ্যম ব্যবহার করে আলেমদের নানা অভিযোগে অভিযুক্ত করার চেষ্টা করে আসছে, সেসব অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। এ কথা বারবার প্রমাণিত হয়েছে, জঙ্গি আক্রমণ ও জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই জড়িত নন। তারপরও দ্বীনি শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র বন্ধ হয়নি। এগুলো বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অপসংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে জাতিকে রক্ষা করা ।

৬. ভারত আমাদের প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র। তাদের সঙ্গে আমাদের শিক্ষা-সাংস্কৃতিক সকল বিষয়ের চুক্তি বিরজমান থাকা সত্ত্বেও দ্বীনি শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো প্রকার শিক্ষা ভিসা প্রদান করা হয় না। এমতাবস্থায় উচ্চতর দ্বীনি শিক্ষার প্রয়োজনে ভারতে যাওয়ার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা উন্মুক্ত ও সহজতর করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

৭. শিক্ষা কমিশন এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (N.C.T.B) এক তৃতীয়াংশ সদস্য হিসেবে আলেমদের সম্পৃক্ত রাখা। সেই সঙ্গে শিক্ষানীতি প্রণয়নকারী শিক্ষা কমিশনে অভিজ্ঞ গ্রহণযোগ্য কওমি আলেমদের সম্পৃক্ততা খুবই জরুরি, যাদের সংখ্যা কমিশনের মোট সদস্য সংখ্যার এক তৃতীয়াংশ । একই সাথে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে কওমি উলামায়ে কেরামের সম্পৃক্ততা থাকা জরুরি ।

৮. নৈতিক অবক্ষয়রোধে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা বন্ধে প্রয়োজনীয় কার্যকরী আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা। সেই সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে জনসাধারণের মাঝে ধর্মীয় মূলবোধের চেতনা জাগিয়ে তোলা।

৯. কওমি শিক্ষাকে বিশেষায়িত শিক্ষা হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান এবং আধুনিকায়নের নামে মাদরাসা শিক্ষা সংকোচনের যাবতীয় ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করা।

১০. ২০১৮ সালে প্রণীত আল-হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতুল কওমিয়ার অধীনে কওমি মাদরাসাসমূহের দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল) জামাতের সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রীর সমমান প্রদান করা হয়েছে। তবে প্রাথমিক স্তর অর্থাৎ মক্তব, নাজেরা, হেফজ বিভাগ, কিতাব বিভাগের ইবতেদায়ী (প্রথম শ্রেণি) থেকে ধারাবাহিক মিশকাত জামাত পর্যন্ত শ্রেণিসমূহ অন্যকোনো নীতি বা আইন দ্বারা যাতে বাধাগ্রস্থ না হয়- তা উল্লিখিত আইনে সুস্পষ্ট করা।

১১. মুসলিম জনসাধারণের মধ্যে কুরআন ও নামাজ শুমারী করে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে মসজিদভিত্তিক ও মক্তব-মাদরাসা, বয়স্ক পুরুষ, মহিলা ও শিশু-কিশোরদের কোরআন শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং নামাজি বানানোর জন্য দাওয়াতি মেহনত চালু করা।

১২. ধর্মীয় উগ্রবাদ, জঙ্গীবাদ এবং মাদকের আগ্রাসন থেকে জাতিকে সচেতন ও সংগঠিত করার লক্ষ্যে হক্কানি বুজুর্গ আলেমদের মাধ্যমে ওয়াজ- নসিহতের সকল প্রকার প্রতিবন্ধকতা দূর করা।

১৩. জাতি গঠনে সবধরনে র উগ্রতা ও জঙ্গি বাদে র বি রুদ্ধে কওমি উলামায়ে কে রাম কার্যকর ভূমি কা রে খে ছে ন। এটাকে সরকার প্রধানসহ দে শবাসী স্বতস্ফূর্তভাবে স্বীকার করা সত্ত্বে ও প্রশাসনে র মধ্যে ঘাপটি মে রে থাকা একশ্রে ণি র অতি উৎসাহী ইসলাম বি দ্বে ষী চক্র কওমি মাদরাসাসমহেূহে নতুনভাবে চি ঠি পাঠিয়ে মাদরাসার আয়-ব্যয়, কমি টির সদস্য ও দাতারে পরি চয়সহ নানা তথ্য চাওয়া হচ্ছে । এভাবে ভীতি কর পরি বে শ সৃষ্টি করে প্রকারান্তরে দ্বীনি শি ক্ষাকে বাঁধাগ্রস্থ করা হচ্ছে । তাদে র এমন আচরণ অতি দ্রুত বন্ধ করতে হবে ।

১৪. যেহেতু মুসলিম জনগণের অর্থায়নে কওমি মাদরাসাসমহূ পরিচালিত হয় এবং মাদরাসাগুলোর আয়ের একটি বড় উৎস কোরবানির চামড়া। এমতাবস্থায় কোরবানির চামড়ার ন্যায্যমলূ্য প্রাপ্তির বিষয়ে সঠিক কর্মপর্ম ন্থা নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন করা।

১৫. মাওলানা মামনুলু হকসহ এ যাবৎ আলেম-উলামাদের নামে দায়েরকৃত সকল প্রকার মামলা প্রত্যাহার এবং কারাবন্দি আলেমদের নিঃশর্ত মুক্তি প্রদান করা ।

১৬. যেকোনো সময়, যে কোনো পরিবেশে আলেম উলামাদের উপর আক্রমন করা, হামলা করা ও হেনস্তা করা নিন্দনীয় কাজ। আমরা কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ সব সময় মাজলমু আলেমদের পাশে আছি, থাকব ইনশাআল্লাহ। বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মুফতি ফয়জুল করীমের উপর হামলা করার তীব্র নিন্দা এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানগু ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহবান জানাই।

লিখিত বক্তব্যে দেওনার পীর বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন, দ্বীনি অবস্থা ও ধর্মীয় বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে বর্তমান মুসলমানদের জীবন মান প্রায় শূণ্যের কোটায়। মুসলমানরূপে অভিহিতরা বংশীয়ভাবে যদিও মুসলমান, কিন্তু ইসলামের সঙ্গে তাদের রয়েছে না কোনো ইলমি (জ্ঞানগত) সম্পর্ক, না আছে আমলি (আচরণগত) সম্পর্ক। তাদের এ কথা জানার যেমন কোনো চিন্তা ভাবনা নেই, ইসলাম কী জিনিস এবং আমাদের কাছে ইসলাম কী চায়? ঠিক তেমনি তাদের বাস্তব জীবনেও গ্রহণ করেনি ইসলামি বিধি-বিধানের আনুগত্য। এর মূল কারণ ইসলামের শিক্ষা থেকে অধিকাংশ মুসলিম বঞ্চিত। দীর্ঘদিন বৃটিশ শাসনের করালগ্রাসে ইসলামি শিক্ষা ও সংস্কৃতি এবং মুসলিম জাতিসত্ত্বার অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হয়েছিলো। এমতাবস্থায় যদি ইসলাম বিবর্জিত বাধ্যতামূলক প্রস্তাবিত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন হয়ে যায়, তাহলে প্রজন্ম ইসলাম শূণ্য হয়ে যাবে । আমরা জানি, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে ৭ টি শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টে ধর্মীয় শিক্ষাকে উপেক্ষা করা হয়েছে। এমতাবস্থায় শৃঙ্খলমুক্ত সবার জন্য সার্বজনীন ধর্মীয় শিক্ষার অধিকার পুণরুদ্ধার, কওমি শিক্ষাব্যবস্থার সুরক্ষা, স্বকীয়তা বজায়, কওমি শিক্ষা ও শিক্ষকের মানোন্নয়নে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের মধ্যে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলা। সেই সঙ্গে শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধি, উদ্ভুত প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধান, জীবন ব্যবস্থার সর্বক্ষেত্রে কোরআন-সুন্নাহ অনুসরণের মধ্যমপন্থা নীতি অনুসরণ এবং সাধারণ শিক্ষার ক্ষেত্রে ধর্মীয় শিক্ষা পাঠ্যক্রম এবং অনুশীলন, জ্ঞানের সকল শাখা-প্রশাখাকে ইসলামি করণ, ঈমান-ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিষয়গুলো চিহ্নিত করে তা বাতিলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছে কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ। কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ হচ্ছে- কওমি মাদরাসাভিত্তিক দ্বীনি খেদমতে নিয়োজিত শিক্ষকদের একটি পেশাজীবী অরাজনৈতিক শিক্ষক সংগঠন। এই সংগঠনে দারুল উলূম দেওবন্দের অনুকরণে প্রতিষ্ঠিত এবং বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ ও অন্যান্য স্বীকৃত বোর্ডের কারিকুলাম অনুযায়ী পরিচালিত মক্তব, নূরানি, নাজেরা, হেফজ বিভাগ ও ইবতিদায়ি জামাত থেকে তাকমিল এবং তদুর্ধ্ব জামাত পর্যন্ত শিক্ষাদানকারী কওমি মাদরাসার মুহতামিম, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলগণ সদস্য হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাকাল ২০২২ খ্রিস্টাব্দ মোতাবেক ১৪৪৪ হিজরি সাল।

যে প্রেক্ষাপটে এই সংগঠন
এক. উলূমে শরঈয়্যার নির্ভেজাল পঠন-পাঠন বর্তমানে বাংলাদেশের কওমি মাদরাসায় হয়। আর শিক্ষকরা হচ্ছেন যেকোনো শিক্ষা ব্যবস্থার প্রাণ। তাদের মানোন্নয়নের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতার কারণে এই অঙ্গনে কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। কওমি মাদরাসার শিক্ষকদের জীবনমান, জীবন-জীবিকার ন্যূনতম চাহিদার প্রতি লক্ষ্য করে বেতন-ভাতা নির্ধারণ, তা নিয়মিত পরিশোধ এবং অংশিদারিত্বমূলক প্রভিডেন্ড ফান্ড চালু করা। এমতাবস্থায় বেসরকারি উদ্যোগে শিক্ষকদের জ্ঞান দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য উন্নত ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ দরকার। সেই সঙ্গে তাদের উন্নত সেবা বা উদ্ভাবন, বিরল কৃতিত্বের জন্য পুরষ্কৃত করার ধারা তৈরি করা অপরিহার্য এবং একটি শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য এগুলো আবশ্যক।

দুই. উল্লেখিত দুই ধারার শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে রয়েছে সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থা। সেখানেও দ্বীন শেখার দ্বার উন্মুক্ত নয়। ধরে নেয়া যাক, দেশের সাড়ে তিন কোটি শিশু-কিশোর বিদ্যালয়গামী। এখান থেকে মাত্র দশ লক্ষ শিক্ষার্থী মাদরাসায় আর বাকী তিন কোটি চল্লিশ লক্ষ শিক্ষার্থী স্কুলগামী। এই বিপুল পরিমাণের শিক্ষার্থীদের জন্য বুনিয়াদি দ্বীনি শিক্ষা, আমল-আখলাক গঠন নিয়ে আমাদের চিন্তা করা আবশ্যক।

তিন. বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মসজিদভিত্তিক শিক্ষা এখন ম্রিয়মান। গতানুগতিক ধারায় চলার কারণে এবং উপযুক্ত পরিচর্যা এবং সমন্বিত উদ্যোগের অভাবে এই বরকতময় শিক্ষা থেকে শিশুরা উপকৃত হতে পারছে না। এমতাবস্থায় মসজিদকে নতুন উদ্যোগে বুনিয়াদি দ্বীনি শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে সক্রিয় করা এবং প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগ করে বিনামূল্যে পাঠদানের ব্যবস্থা করা ।

চার. সাধারণ শিক্ষাধারায় সময়ের চাহিদাপূরণে শিক্ষা ব্যবস্থা, কারিকুলাম ও সিলেবাসের উন্নয়ন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু এটা করতে যেয়ে এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল ধর্মকে হেয়-প্রতিপন্ন করতে চায়। এ বিষয়ে শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞজনদের সচেতন থাকতে হবে। দেশ ও জাতির স্বার্থে দেশবাসী ও সরকারের সামনে উপযুক্ত সিলেবাস ও শিক্ষা কারিকুলাম তৈরি করে বাস্তবায়নের জন্য পেশ করা দরকার।

পাঁচ. এছাড়া দেশে রয়েছে হাজার হাজার কিন্ডার গার্টেন স্কুল। সেখানে লক্ষ লক্ষ শিশু-কিশোর লেখাপড়া করছে। কি শিখছে তারা? তাদের নিয়েও ভাবতে হবে।

ছয়. আপনারা জানেন, প্রবাসে থাকা কওমি মাদরাসার শিক্ষিত হাফেজ ও আলেমদের দ্বারা যে পরিমাণ রাজস্ব অর্জিত হয়, তা অন্যকোনো শ্রেণি পেশাজীবিদের তুলনায় কম নয়। পৃথিবীর সাত মহাদেশেই তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। বিশ্বের অনেকগুলো দেশে মসজিদ মাদরাসার খেদমতে নিয়োজিত কওমি মাদরাসার শিক্ষকরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।

সাত. জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস দমন, মাদকের প্রসাররোধ ও কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে আলেম-উলামা, মসজিদের ইমাম-খতিবদের ভূমিকা সর্বজন স্বীকৃত। সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয় প্রতিকারে মসজিদে মসজিদে, মাঠে-ময়দানে উলামায়ে কেরামের ওয়াজ-নসিহত সর্বাধিক কার্যকর ও ফলপ্রসূ হয় । বিষয়গুলোকে জাতির সমানের স্পষ্ট করা দরকার। কওমি আলেমদের অবদান, সমাজসেবা ও আত্মত্যাগের কথাগুলো সেভাবে কোথাও উচ্চারিত হয় না। বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ কওমি মাদরাসার শিক্ষকদের একক বৃহত্তর জাতীয় পেশাজীবি সংগঠন। উল্লেখিত বিষয়গুলোতে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করবে। তাই আমাদের স্লোগান হচ্ছে-  (মতপার্থক্য স্বত্ত্বেও ঐক্য, বৈচিত্রের মাঝে ঐক্যের সুর)।