| |
               

মূল পাতা জাতীয় গণমাধ্যম ‘কোনো সংশোধন নয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পুরোপুরি বাতিল করতে হবে’


‘কোনো সংশোধন নয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পুরোপুরি বাতিল করতে হবে’


রহমত নিউজ ডেস্ক     29 May, 2023     03:38 PM    


‌‌‌ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থি। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণকারী ও ভিন্নমতাবলম্বীর মত রুখতে এই আইন স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী। এই আইনের মাধ্যমে সংবিধান পরিপন্থি প্রক্রিয়ায় গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ তথা আপামর জনগণের জন্য আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীন পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। কোনো সংশোধন নয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি পুরোপুরি বাতিল করতে হবে।

আজ (২৯ মে) সোমবার সকালে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রুরাল ডেভেলপমেন্ট সংস্থা-আরডিআরএসের হলরুমে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়ন ও প্লান ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘আর্টিকেল নাইনটিন’ আয়োজিত ‘আমাদের কণ্ঠস্বর আমাদের পছন্দ: নারী এবং যুব গণতান্ত্রিক নাগরিক স্থান‌‌’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন রংপুর মহানগরের সভাপতি অধ্যক্ষ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু, রংপুর প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পী, রিপোর্টার্স ক্লাব রংপুরের সাধারণ সম্পাদক শাহ্ বায়েজীদ আহম্মেদ, বদরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি রুহুল আমিন সরকার। সঞ্চালনা করেন আর্টিকেল নাইনটিনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার রুমকি ফারহানা, দৈনিক দাবানলের বার্তা সম্পাদক ও ঢাকা পোস্টের নিজস্ব প্রতিবেদক ফরহাদুজ্জামান ফারুক, রিপোর্টার্স ক্লাব রংপুরের যুগ্ম সম্পাদক আজম পারভেজ, জাগোনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের নিজস্ব প্রতিবেদক জাহাঙ্গীর কবির জিতু, দৈনিক যুগের আলোর রিপোর্টার বর্ণালী জামান বর্ণা, ন্যায় অধিকার ট্রান্সজেন্ডার উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি আনোয়ারা ইসলাম রানী, মানবাধিকার কর্মী ও সংগঠক আফরোজা সরকার প্রমুখ।

সংলাপে বক্তারা বলেন,  ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের পর থেকেই আইনটির বিভিন্ন বিবর্তনমূলক ধারার যথেচ্ছ অপব্যবহার হয়ে আসছে। আইনটি মুক্তচিন্তা, ধর্ম নিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ দমনের কৌশল হিসেবে বৈষম্যমূলকভাবে এই আইনের ব্যাপক অপব্যবহার হচ্ছে। এই আইন সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী ও উগ্র ধর্মান্ধতার শঙ্কাজনক বিকাশে সহায়কের ভূমিকা পালন করছে। সরকারের তরফ থেকে এই আইনের সংশোধনের কথা বলা হলেও, এই আইনটি পুরোপুরি বাতিল করা ছাড়া আর কোনো পথ নেই। 

অনুষ্ঠানে বৈষম্য, নিপীড়ন, শোষণ, দুর্নীতি, অনিয়মের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমসহ সব নাগরিকের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা করা হয়। অংশগ্রহণকারীরা তরুণ প্রজন্ম, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও আদিবাসীসহ তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রতিবন্ধকতা ও রাষ্ট্রসৃষ্ট সমস্যাগুলো তুলে ধরেন। এ অনুষ্ঠানে রংপুরের বিভিন্ন মানবাধিকার, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, স্বেচ্ছাসেবী ও পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। 

নুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পুরোপুরি বাতিল নয় বরং সংশোধন ও সংস্কার প্রয়োজন। আইন কখনো কাউকে শায়েস্তা করার জন্য হয়নি। আইন হয়েছে দেশ, সমাজ ও মানুষের প্রয়োজনে। শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার প্রয়োজনে আইন তৈরি হয়। আমরা আজ যে স্বাধীনতা ভোগ করছি, তা মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে অর্জিত হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশপ্রেমের ঘাটতির কারণে রাষ্ট্রবিরোধী অপশক্তিরা বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার, অপতৎপরতা চালানোর সুযোগ পাচ্ছে। আইনের কোনো দোষ দেখি না। আইন আইনের গতিতে চলছে, চলবে। আইনের অপব্যবহার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে অনেকভাবে কথাবার্তা হচ্ছে। কেউ এর পক্ষে, আবার কেউ এ আইনের বিপক্ষে। সাংবাদিক নেতাদের অনেকেই এই আইনের খসড়া তৈরির সময় মতামত দিয়েছে। তাদের প্রস্তাবিত মতামত, পরামর্শ ছাড়া তো আইন আপনাআপনি তৈরি হয়নি। তবে সরকার এই আইন সংশোধন ও সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছে এবং এটি বাস্তবায়নও হবে।  

আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পরিস্থিতি বর্তমানে সবচেয়ে খারাপ উদাহরণগুলোর একটি। আর্টিকেল নাইনটিন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের অবনমনের বিষয়ে উদ্বিগ্ন। এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান বিব্রতকর। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যম ও ইন্টারনেট উভয়ের স্বাধীনতার জন্যই হুমকি।