রহমত নিউজ ডেস্ক 24 May, 2023 05:52 PM
বহুজাতিক তামাক কোম্পানির অর্থায়নে ধূমপানের বিকল্প বিষয়ে গবেষণার নামে বাংলাদেশে ই-সিগারেট ও ভেপিং পণ্য উব্দুদ্ধকরণ ও বাজারজাতকরণের চেষ্টা করা হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।
ফিলিপ মরিস-পিএমআইর অর্থপুষ্ট ফাউন্ডেশন ফর এ স্মোক-ফ্রি ওয়ার্ল্ড-এফএসএফডব্লিউর সহায়তায় বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগীদের ধূমপানের ক্ষতি কমানোর বিষয়ে তথাকথিত গবেষণা প্রোটোকল তৈরি করে তা প্রচার করছে অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি এমপাওয়ারমেন্ট-এইস বাংলাদেশ এবং যুক্তরাজ্য ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর সাবস্ট্যান্স ইউজ রিসার্চ লিমিটেড সিশুর এবং এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এর আগেও তারা এ বিষয়ে প্রচারণা চালিয়েছে। তামাক কোম্পানির অর্থায়নে এমন এক সময়ে এসব প্রচারণা চালানো হচ্ছে যখন দেশে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের মাধ্যমে ই-সিগারেট ও ভেপিংজাতীয় পণ্য নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, পিএমআই এর অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত ‘ফাউন্ডেশন ফর এ স্মোক-ফ্রি ওয়ার্ল্ড’ এর নানা তৎপরতা জনস্বাস্থ্য এবং তামাকবিরোধী কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এফএসএফডব্লিউ মূলত ই-সিগারেটসহ বিভিন্ন ধরনের ভ্যাপিং পণ্যের ব্যবহার ও বাজারজাতকরণকে উৎসাহিত করে থাকে। একারণেই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পরপই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানায়, তামাক কোম্পানির অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত এই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে জনস্বাস্থ্যের সুস্পষ্ট স্বার্থ সংঘাত (conflict of interest) রয়েছে। এ কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ফাউন্ডেশনের সব ধরনের সহযোগিতা কিংবা যৌথ উদ্যোগ প্রত্যাহার করবে। সরকার এবং জনস্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠানসমূহকেও এই নীতি অনুসরণের আহ্বান জানানো হয়। এছাড়াও ডব্লিউএইচও এফসিটিসি সেক্রেটারিয়েট এক পৃথক বিবৃতিতে বলে, ‘তামাক কোম্পানির অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত এই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যেকোন সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড হবে এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
উদ্বেগের বিষয় হলো, বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশেও সংগঠনটির তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতসহ বেশকিছু দেশ ‘ফাউন্ডেশন ফর এ স্মোক-ফ্রি ওয়ার্ল্ড’ এর বিতর্কিত কার্যক্রম প্রতিহত করতে সরকারিভাবে সংগঠনটির সাথে কাজ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও বাংলাদেশে এ ধরনের কোন পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়নি। এফসিটিসি এর স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশেরও উচিত হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী বিতর্কিত এই সংগঠনটির সাথে সম্পৃক্ত না হওয়া এবং এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা। একইসাথে এইস, এনাম মেডিক্যাল কলেজসহ সকল বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানের উচিত হবে জনস্বাস্থ্যবিরোধী এধরনের প্রতিষ্ঠানের সাথে নিজেদের সম্পৃক্ততা প্রত্যাহার করা।