আত্মসমর্পণকারীদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

চরমপন্থা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণকারীদের সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন,  সর্বহারা ও চরমপন্থীদলের যে সকল সদস্য আত্মসমর্পণ করেছে, তাদের আর্থিক সহযোগিতা থেকে শুরু করে সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো পর্যালোচনা করে আইনী পদক্ষেপসহ দায়মুক্তির ব্যবস্থা করা হবে। প্রধানমন্ত্রী আজকেও আমাকে আসার আগে বলেছেন, আপনারা যারা আজ আত্মসমর্পণ করে আলোর পথে ফিরে আসছেন তাদের আর্থিক সহযোগিতা থেকে শুরু করে সার্বিক ও সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।

আজ (২১ মে) রবিবার দুপুর দেড়টায় সিরাজগঞ্জ র‌্যাব-১২ সদর দপ্তরে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি-এমএল লাল পাতা ও সর্বহারাসহ বেশ কয়েকটি চরমপন্থী দলের ৩১৫ সদস্যের অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন এলাকার চরমপন্থী নেতা ও সদস্যদের অন্ধকার থেকে আলোতে ফেরাতেই র‍্যাবের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে র‌্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন এর সভাপতিত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমেদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, র‍্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, পুলিশ মহা-পরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, র‌্যাব-১২ অধিনায়ক অ্যাডিশনাল ডিআইজি মারুফ হোসেন, সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট কে.এম হোসেন আলী হাসান, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ তালুকদার, সিরাজগঞ্জ-১ (কাজিপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়,  সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না, সিরাজগঞ্জ-৩ (তাড়াশ-রায়গঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ডা. আব্দুল আজিজ, সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম, সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের সংসদ সদস্য মেরিনা জাহান কবিতা, সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানসহ র‍্যাব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অপরাধীদের হুঁশিয়ারি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কেউ যদি মনে করেন আমরা দুর্গম এলাকায় বসে থাকবো, অপরাধ করবো আর আপনারা ধরতে পারবেন না তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। বিপথগামীদের ফেরাতে নানান পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আর্থিক সহযোগিতা থেকে শুরু করে কর্মসংস্থানের সুযোগ পর্যন্ত করে দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনকে দস্যু মুক্ত ঘোষণা করেছেন।র‍্যাব নানাবিধ ভালো কাজ করে যাচ্ছে, আস্থা অর্জন করেছে। এ জন্যই চরমপন্থীরা আত্মসমর্পণের জন্য র‍্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। র‍্যাব আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি মাদক ও সন্ত্রাস নির্মুলে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি নানান মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ৮০'র দশক থেকে সিরাজগঞ্জসহ দেশের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ পশ্চিম কয়েকটি জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় সর্বহারা ও চরমপন্থীরা এসব এলাকায় ঘাটি তৈরি করে। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ‘সন্ত্রাসের জীবন ছাড়ি-আলোকিত জীবন গড়ি’- শ্লোগানে সর্বহারা-চরমপন্থীরা আলোর পথে ফিরে আসেন। এ অঞ্চলেও সাবেকমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের কাছে শতাধিক সর্বহারা-চরমপন্থী আত্মসর্মপন করেছে।