রহমত নিউজ ডেস্ক 15 May, 2023 10:34 PM
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও মানবাধিকারকর্মী এবং রাজনীতিবিদ সুলতানা কামাল বলেছেন, সরকার বলে দিয়েছে বাংলাদেশে আদিবাসী বলতে কিছু নেই। কিছুদিন পরে সরকার বলবে নির্যাতিত নারী বলতে কিছু নেই। আজকে আমরা সবচেয়ে বেশি সংকটে আছি বিচ্ছিন্নতা নিয়ে। নাগরিক সমাজের মধ্য থেকে কী আসছে সেটা সরকারের শোনার প্রয়োজন হয় না। তাদের সেই মানসিকতা বা সদিচ্ছা আমরা দেখতে পাচ্ছি না।
আজ (১৫ মে) সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ারলগ-সিপিডি ও নাগরিক প্ল্যাটফর্ম যৌথভাবে আয়োজিত ‘আইএমএফ’র সময়কালে অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের কথা জাতীয় বাজেটে কীভাবে প্রতিফলিত হতে পারে?’ বিষয়ক এক নাগরিক সংলাপে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সংসদ সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল, সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, বিল্ড-এর নির্বাহী পরিচালক ফেরদৌস আরা বেগম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টচার্য।
সুলতানা কামাল বলেন, সরকারের ভাতা নিয়ে আমার ব্যক্তিগত আপত্তি আছে। সরকার আমাদের ভাতা নির্ভর করে ফেলতে চাচ্ছেন। কিন্তু কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও নিজের পায়ে দাঁড়ানোর বিষয়ে সরকার নজর দিচ্ছে না। সরকার থেকে দলীয় লোকজনরা সবাই বলে থাকেন এইখানে এতো ভাতা দিচ্ছি, ওখানে এতো ভাতা দিচ্ছি। আমরা তো ভাতা পাওয়ার জন্য দেশ স্বাধীন করিনি। দেশ স্বাধীন করেছিলাম আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে দাঁড়ানোর জন্য, স্বাধীন জাতি হিসেবে দাঁড়ানোর জন্য। এই স্বাধীনতার সঙ্গে কিন্তু বাজেটের একটা সম্পর্ক আছে। এই দেশটা যে আমাদের সেটা আমরা কেউই মনে করি না। আমরা প্রতিদিন জাতীয় সংগীত গাই। এটা শুধু কণ্ঠে থেকেই গাই। বিশ্বাস থেকে গাই কি না নিঃশ্বাস থেকে গাই কি না এই প্রশ্নটা রাখতে চাই। মন থেকে যদি গাইতাম তাহলে তো আমার কর ফাঁকি দেওয়ার প্রশ্ন আসে না। কর দিয়ে দেশের উন্নয়নে অংশগ্রহণ করতে পারা একটা গর্বের ও অহংকারের বিষয়। কিন্তু আমরা সেই অহংকারের বিষয়টা থেকে নিজেদের বঞ্চিত করি।
সরকারের উদ্দেশে সুলতানা কামাল বলেন, ‘ভোটের পরোয়া করেন আপনারা? কারণ আপনাদের তো ভোটের প্রয়োজনই নেই, সাধারণ মানুষকেও চেনার প্রয়োজন নেই। কাজেই সাধারণ মানুষদেরও আপনাদের চেনার প্রয়োজন নেই। আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক বা আশেপাশে যারা আছেন তারা যা চাইছে তাই করছেন। জনপ্রিয়তার একটা কথা এসেছে। আপনারা কোন জনপ্রিয়তার কথা বলছেন? সেই জনগণকে কি আপনার কাছে চেনেন? কার জন্য আসন ঠিক রাখতে হবে? কাকে ঠিক রেখে আসন ঠিক রাখতে চান আপনারা। বিচ্ছিন্নতা বন্ধ করে মানুষের কাছে এসে মানুষকে স্বীকার করলে দেখবেন আপনাদের অনেক সমস্যার সমাধান মানুষই করে দেবে।’