রহমত নিউজ ডেস্ক 08 May, 2023 10:40 PM
সাত বছর পর ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নিচে নেমেছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। গত বৃহস্পতিবার রিজার্ভ ছিল ৩০ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার। এ নিয়ে একবছরে রিজার্ভ কমল ১৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি। ২০১৬ সালের জুনে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। এরপর বাড়তে বাড়তে ৪৮ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত ওঠে এবং তা থেকে কমেও যায়। কিন্তু ৩০ বিলিয়ন ডলারে নিচে নামেনি।আজ (৮ মে) সোমবার এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন-আকু ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলারের দায় সমন্বয়ের পর রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারে।
আকু হলো একটি আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিস্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তানের মধ্যে লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। এসব দেশ প্রতি দুই মাস অন্তর নিজেদের মধ্যে বাড়তি দায় নিস্পত্তি করে। এর আগে গত মার্চে আকুতে বাংলাদেশের পরিশোধ ছিল ১ দশমিক শুন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। গত জানুয়ারিতে পরিশোধ হয় ১ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার। সাম্প্রতিক সময়ে সর্বোচ্চ ২২৪ কোটি ডলার পরিশোধ হয় গত বছরের মে মাসে।
দেশের ইতিহাসে রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে ২০২১ সালের আগস্টে। করোনা পরবর্তী বৈশ্বিক চাহিদা বৃদ্ধি এবং রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসছে, খরচ হচ্ছে সে তুলনায় বেশি। বাড়তি চাহিদা মেটাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গতবছরের ৩০ এপ্রিল দেশের রিজার্ভ ছিল ৪৪ দশমিক শুন্য ২ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে কমে গত ডিসেম্বর শেষে ৩৩ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলারে নামে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১২ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। গত অর্থবছর বিক্রি করা হয় ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। এভাবে ডলার বিক্রির বিপরীতে বাজার থেকে টাকা উঠে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। এতে করে বৈদেশিক মুদ্রার পাশাপাশি টাকা তারল্যেও চাপ তৈরি হয়েছে। এ অবস্থার উন্নয়নে আমদানি কমানোর বিভিন্ন উপায় খুঁজছে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এলসি খোলায় কড়াকড়ি, ডলার না পাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ মাসে আমদানি কমেছে ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ। এর ফলে বাণিজ্য ঘাটতি আগের বছরের একই সময়ের ২২ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন থেকে কমে ১৩ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। চলতি হিসাবের ঘাটতি নেমেছে ৪ দশমিক ৩৯ বিলিয়নে। আগের বছরের একই সময়ে যা ১২ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ছিল। তবে বিদেশি ঋণ পরিশোধ বেড়ে যাওয়া, নতুন ঋণ কমাসহ বিভিন্ন কারণে সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। গত ফেব্রুয়ারি শেষে লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি ৭ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন হয়েছে। আগের বছরের একই সময়ে যা ২ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার ছিল।