| |
               

মূল পাতা জাতীয় ঈদযাত্রার ১৪ দিনে ২৪০ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৮৫, আহত ৪৫৪


ঈদুল ফিতর উদযাপনকালে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন প্রকাশ

ঈদযাত্রার ১৪ দিনে ২৪০ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৮৫, আহত ৪৫৪


রহমত নিউজ ডেস্ক     02 May, 2023     05:47 PM    


ঈদুল ফিতরের আগে-পরে ১৪ দিনে (১৬ এপ্রিল থেকে ২৯ এপ্রিল) দেশে ২৪০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৮৫ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ৪৫৪ জন (আহতের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ার আশংকা আছে)। নিহতের মধ্যে নারী ২৬, শিশু ৫৩। ১২৭ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৩৩ জন, যা মোট নিহতের ৪৬.৬৬ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৫২.৯১ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ৫২ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ১৮.২৪ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ২৭ জন, অর্থাৎ ৯.৪৭ শতাংশ। এই সময়ে ৫ টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৮ জন নিহত ও ২ জন নিখোঁজ রয়েছে। ১১ টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত এবং ৬১ জন আহত হয়েছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯ টি জাতীয় দৈনিক, ৭ টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্টনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

আজ (২ মে) মঙ্গলবার  দুপুরে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত  সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

যানবাহনভিত্তিক নিহতের চিত্র : দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়- মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৩৩ জন (৪৬.৬৬%), বাস যাত্রী ৯ জন (৩.১৫%), ট্রাক-পিকআপ-ট্রলি আরোহী ১৫ জন (৫.২৬%), প্রাইভেটকার আরোহী ২ জন (০.৭০%), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা) ৫১ জন (১৭.৮৯%), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-চাঁন্দের গাড়ি- টমটম-লাটাহাম্বা) ১০ জন (৩.৫০%) এবং প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান-বাইসাইকেল আরোহী ১৩ জন (৪.৫৬%) নিহত হয়েছে।

দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন : রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৩৬.৬৬% জাতীয় মহাসড়কে, ৩৪.৫৮% আঞ্চলিক সড়কে, ১৭.৯১% গ্রামীণ সড়কে এবং ১০.৮৩% শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে।

দুর্ঘটনার ধরন : দুর্ঘটনাসমূহের ১৮.৩৩% মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৪৬.৬৬% নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ২২.০৮% পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৯.১৬% যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং  ৩.৭৫% অন্যান্য কারণে ঘটেছে।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ধরন ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ : ঈদুল ফিতর উদযাপনকালে ১২৭ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ১৩৩ জন, যা মোট নিহতের ৪৬.৬৬ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৫২.৯১ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৫.১১%, মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটেছে ২১.২৫%, অন্য যানবাহন দ্বারা মোটরসাইকেলে ধাক্কা/চাপায় দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৩.৬২%। উল্লেখ্য, বেপরোয়া মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ১৬ জন পথচারী নিহত হয়েছে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ৫১ শতাংশ ১৩ থেকে ২০ বছর বয়সী। ২০২২ সালের ঈদুল ফিতর উদযাপনকালে ১২৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৫৬ জন নিহত হয়েছিল। এই হিসাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণহানি কমেছে ১৪.৭৪%।

দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহন : দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে- ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি-ড্রামট্রাক-পুলিশের পিকআপ-ওয়াসার পানির গাড়ি-তেলের ট্যাঙ্কার-চব্বিশ চাকার লরি ও অজ্ঞাত  গাড়ি ১৯.৮১%, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স ৬.৬০%, যাত্রীবাহী বাস ১৪.১২%, মোটরসাইকেল ৩২.১১%, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা) ১৬.৮৫%, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন-ভটভটি-চাঁন্দের গাড়ি-টমটম-মাহিন্দ্র-লাটাহাম্বা) ৫.৯২% এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান ৪.৫৫%।

দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা : দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৪৩৯ টি। (ট্রাক ৩৪, বাস ৬২, কাভার্ডভ্যান ৯, পিকআপ ১৬,  ট্রলি ৬, লরি ৩, ট্রাক্টর ৭, ড্রামট্রাক ৫, পুলিশের পিকআপ ১, ওয়াসার পানির গাড়ি ১, তেলের ট্যাঙ্কার ২, চব্বিশ চাকার লরি ১, অজ্ঞাত গাড়ি ২, মাইক্রোবাস ১২, প্রাইভেটকার ১৬, অ্যাম্বুলেন্স ১, মোটরসাইকেল ১৪১, থ্রি-হুইলার ৭৪ (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ২৬ (নসিমন-ভটভটি-চাঁন্দের গাড়ি-টমটম-মাহিন্দ্র-লাটাহাম্বা) এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান ২০টি।

দুর্ঘটনার সময় বিশ্লেষণ : সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাসমূহ ঘটেছে ভোরে ৩.৭৫%, সকালে ২৫.৮৩%, দুপুরে ২২.৫%, বিকালে ১৮.৩৩%, সন্ধ্যায় ১২.৫% এবং রাতে ১৭.০৮%।

দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান : দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২৮.৩৩%, প্রাণহানি ২৬.৩১%, রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৫%, প্রাণহানি ১৪.৭৩%, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ১৫.৪১%, প্রাণহানি ১৫.০৮%, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ১১.২৫%, প্রাণহানি ১১.২২%, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৭.৯১%, প্রাণহানি ৭.০৭%, সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৩.৭৫%, প্রাণহানি ৩.৫০%, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ৯.৫৮%, প্রাণহানি ১১.২২% এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৮.৭৫%, প্রাণহানি ৯.৮২% ঘটেছে। ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ৬৮ টি দুর্ঘটনায় ৭৫ জন নিহত। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৯ টি দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত। একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রাম জেলায় সবচেয়ে বেশি ১৩ টি দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত হয়েছে। সবচেয়ে কম চাঁদপুর, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, মাগুরা ও বরগুনা জেলায়। এই ৫টি জেলায় স্বল্প মাত্রার কিছু দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রাণহানির সংবাদ পাওয়া যায়নি। রাজধানীতে ১৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত ও ২৪ জন আহত হয়েছে।

ঈদযাত্রা ও দুর্ঘটনা পর্যালোচনা : এবারের ঈদুল ফিতরে রাজধানী ঢাকা থেকে কমবেশি ১ কোটি মানুষ ঘরমুখী যাত্রা করেছে এবং দেশের অভ্যন্তরে প্রায় ৪ কোটি মানুষ যাতায়াত করেছে।  ঈদের আগে-পরে যথেষ্ট ছুটি থাকা, পদ্মা সেতু চালু হওয়া, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক কয়েকটি ওভারপাস-সহ ফোর লেন হওয়া, দেশের বিভিন্ন  সড়কের অবস্থা ভালো থাকা, বৃষ্টিপাত না হওয়া এবং সরকারের বাড়তি তৎপরতা থাকা ইত্যাদি কারণে ঈদযাত্রা তুলনামূলক স্বস্তিদায়ক ছিল। কোথাও তেমন অসহনীয় যানজট হয়নি। দুর্ঘটনাও অনেকটা কম ঘটেছে।  গত বছর ঈদুল ফিতর উদযাপনকালে ২৮৩টি দুর্ঘটনায় ৩৭৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। এই হিসাবে এবছরের ঈদুল ফিতরে দুর্ঘটনা কমেছে ১৫.১৯% এবং প্রাণহানি কমেছে ২৪.২০%। তবে ট্রেনের টিকেট শতভাগ অনলাইন করায় টিকেট সংগ্রহ করতে মানুষের ভোগান্তি হয়েছে। ঈদে ঘরমুখী যাত্রার চেয়ে ফিরতি যাত্রায় যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়েছে। যেটা মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রণ করা হয়নি।

ঈদ যাত্রায় ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে’তে ৭টি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছে। সবগুলো দুর্ঘটনা ঘটেছে অতিরিক্ত গতির কারণে। যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা নেই। ঈদ যাত্রায়  মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচলে বিধি-নিষেধ না থাকা এবং পদ্মা সেতুতে গতি নিয়ন্ত্রণ ও লেন মানার শর্ত সাপেক্ষে মোটরসাইকেল চলাচলের সুযোগ থাকার কারণে সবগুলো মহাসড়ক ধরে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লাখ মানুষ মোটরসাইকেলে গন্তব্যে ফিরেছে।  ফলে বাস ও ট্রেনের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়েনি। উল্লেখ্য, মানসম্পন্ন গণপরিবহন সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী না হওয়ার কারণেই মানুষ মোটরসাইকেলে দূরের গন্তব্যে যাতায়াত করছে। এটা উদ্বেগের বিষয়। কারণ মোটরসাইকেল ৪ চাকার যানবাহনের চেয়ে ৩০ গুণ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই মোটরসাইকেল কোনোভাবেই গণপরিবহনের বিকল্প হতে পারে না। ঈদের পরের দিন ২৩ এপ্রিল ফেনি সদর উপজেলায় শাহীন নামে ৩৮ বছর বয়সী এক দরিদ্র ব্যক্তি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে ফেনি, চট্টগ্রাম ও ঢাকার কোনো সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ চিকিৎসা সেবা না পেয়ে বাড়ি ফিরে মৃত্যুবরণ করেছেন। এই নির্মম ঘটনা আমাদের সামনে দু’টি চিত্র তুলে ধরছে। এক. দেশে দরিদ্র মানুষের আধুনিক চিকিৎসা প্রাপ্তির সুযোগ খুবই কম। দুই. মোটরসাইকেল চালকদের মানসম্পন্ন হেলমেট ক্যবহার না করা। এসব বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।

ঈদ উদযাপনকালে সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যাপক সংখ্যক মানুষ আহত হয়েছে। বাস্তবতা হলো, যেসব দুর্ঘটনায় শুধু আহত হয়েছে, বা পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে, সেসব দুর্ঘটনার খবর অধিকাংশই গণমাধ্যমে আসেনি। ফলে দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতের প্রকৃত চিত্র জানা যাচ্ছে না। তবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে যে পরিমাণ মানুষ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল-সহ ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসা নিয়েছে এবং নিচ্ছে- তা থেকে অনুমান করা যায়, এবারের ঈদুল ফিতর উদযাপনকালে কয়েক হাজার মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে। কিশোর-যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারণে তারা নিজেরা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে এবং অন্যদের আক্রান্ত করছে। অপ্রাপ্ত বয়স্করা যাতে মোটরসাইকেল চালাতে না পারে সেজন্য কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা-সহ এ বিষয়ে পারিবারিক সচেতনতা সৃষ্টির জন্য গণমাধ্যমে প্রচারণা চালানো প্রয়োজন। মোটরসাইকেল উৎপাদন ও বিপণন প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই প্রচারণার দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। মোটরসাইকেল বাজারজাতকরণে উচ্ছৃঙ্খল ভাষাভঙ্গিতে চটকদার বিজ্ঞাপন নির্মাণ ও প্রচার বন্ধ করতে হবে। কারণ কিশোর-যুবকরা এসব বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মোটরসাইকেলে গতির প্রতিযোগিতা করতে উৎসাহিত হচ্ছে।  সরকারের উচিত গণপরিবহন উন্নত, সহজ ও সাশ্রয়ী করে এবং রাজধানীর যানজট নিয়ন্ত্রণ করে মোটরসাইকেল নিরুৎসাহিত করা। মোটরসাইকেল উৎপাদন ও আমদানীর ক্ষেত্রে সরকার নানা প্রকার সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। ফলে দেশে মোটরসাইকেলের ব্যবহার ব্যাপকহারে বাড়ছে। এটা আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত। বছরে ৫ হাজার কোটি টাকার মোটরসাইকেলের ব্যবসা করতে যেয়ে ১৫ হাজার কোটি টাকার মানব সম্পদ হারিয়ে যাচ্ছে।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণসমূহ : ১.ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; ২. বেপরোয়া গতি; ৩. চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; ৪. বেতন-কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট না থাকা; ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; ৬. তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; ৭. জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; ৮. দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; ৯. বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি; ১০. গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।

সুপারিশসমূহ : ১.দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; ২. চালকদের বেতন-কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; ৩. বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; ৪. পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য সার্ভিস রোড তৈরি করতে হবে; ৬. পর্যায়ক্রমে সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; ৭. যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে;  ৮. গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; ৯. রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের উপর চাপ কমাতে হবে; ১০. গণপরিবহন উন্নত, সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করে মোটসাইকেল ব্যবহার নিরৎসাহিত করতে হবে; ১১. ঈদের আগে-পরে সড়ক, নৌ ও রেলপথে কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে; ১২. টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে; ১৩. “সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮”বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের জীবনে নিত্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগের ধারাবাহিকতা নেই। সবকিছু চলছে দায়সারাভাবে।“সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮”বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে সড়ক পরিবহন খাতের অব্যবস্থাপনার কারণে। এই অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা।