| |
               

মূল পাতা জাতীয় ‘প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নিয়ে বন্ধু রাষ্ট্রের উদ্বেগের নৈতিক অধিকার নেই’


‘প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নিয়ে বন্ধু রাষ্ট্রের উদ্বেগের নৈতিক অধিকার নেই’


রহমত নিউজ     22 March, 2023     08:51 AM    


পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বাংলাদেশ হচ্ছে, একটি সংসদীয় গণতন্ত্রের একটি রাষ্ট্র। আমাদের যাত্রাপথ যে কতটা কন্টকাকীর্ণ ছিল বা এখনও আছে সেটা যে কোনো রাষ্ট্র বোঝেন এবং জানেন। এভাবে ঢালাওভাবে একটি সাংবিধানিক পদকে ছোটো করে দেখানো খুবই দুঃখজনক। আমাদের দেশে পার্লামেন্টারি সরকার ব্যবস্থায় কিভাবে আইন প্রণয়ন হয় সেটা আপনারা দেখেছেন। সেখানে এভাবে ঢালাওভাবে একটা পজিশনকে, সাংবিধানিক অফিসকে আন্ডারমাইন্ড করার ক্ষমতা আমরা দেখেছি, যেটা খুবই দুঃখজনক। এটা বলতে গেলে আমাদের অনেক কিছু বলতে হবে, যেটা অপ্রত্যাশিত হয়ে যেতে পারে। একজন প্রধানমন্ত্রীর যেটুকু ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন, ঠিক ততটুকুই আছে। এটার ডিগ্রি বা অন্য কিছু নিয়ে একটা বন্ধু রাষ্ট্রের উদ্বেগ বা প্রশ্ন উত্থাপন করার কোনো নৈতিক অধিকার নেই।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সদ্য প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক মানবাধিকার প্রতিবেদন নিয়ে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, মার্কিন প্রতিবেদন ত্রুটিপূর্ণ হলেও বিশ্লেষণ করে দেখা হবে। এক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোকে আমলে নেওয়ার মতো উপাদান থাকবে সেটি গ্রহণ করা হবে। আর এ রিপোর্টগুলো প্রতি বছর একবার করে বের করা হয় এবং এই রিপোর্টগুলোর মৌলিক কিছু ত্রুটি আছে। একটি দেশের প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে, একটি বন্ধু রাষ্ট্র করছে; আমরা আমাদের যোগাযোগে বলি রিপোর্ট প্রকাশ করার আগে আমাদেরকে জানানোর জন্য। একটা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া। বিভিন্ন সময়ে এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। অন্য সময়ে হয়নি, এবারও হয়নি। আমি মনে করি এটা মেজর ত্রুটি। ২০২১ এবং ২০২২ সালের রিপোর্টের গুণগত বা কাঠামোগত কোনো পরিবর্তন নেই।

তিনি বলেন, ওপেন সোর্স থেকে তথ্য নেওয়া এবং এটা স্ববিরোধী একটা বিষয় প্রকাশ হয়। অনেক সময় বলা হয় মিডিয়ার স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে, বাক স্বাধীনতা খর্ব করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু এই প্রতিবেদনে অজস্র উদাহরণ আছে ওপের সোর্সের। এটাই প্রমাণ করে যে, কোনো সংবাদমাধ্যমকে কোনো খবর তৈরিতে সরকার বাধা প্রদান করে না। এখানে বেশ কিছু এনজিও, আইএনজিও, সিএসও’র রেফারেন্স দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অধিকার। পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই, অধিকারকে বর্তমানে বাংলাদেশে অপারেট করার বা তাদের কাছে কোনো ভ্যালিড ডকুমেন্ট নাই বা লাইসেন্স নাই। সে জায়গায় আমরা পরিস্কার করে বলেছি, কোনো সিভিল সোসাইটি বা এনজিও যার রাজনৈতিক পরিচয় আছে তাদেরকে নিরপেক্ষতার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার কোনো সুযোগ নেই। এরকম ত্রুটি যদি অব্যাহভাবে থাকে তাহলে রিপোর্টগুলোর যোগ্যতা হারিয়ে যায়। যেসব সংগঠন রেজিস্টার্ড না সেসব সংগঠনকে আমলে নিয়ে কাজ করাটা একটা বেআইনি বা নর্মসের বাহিরে পড়ে। আমরা অনুরোধ করব, শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়, বন্ধু রাষ্ট্রগুলোও যেন এসব বিষয় থেকে দূরে থাকে। আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী, যাকে যেভাবে স্বীকৃতি দিয়েছি সেটা আমলে নিয়ে তারা যেন তাদের সামনের দিনের কার্যক্রম পরিচালনা করে।

তিনি আরো বলেন, আমরা এ বিষয়গুলো (প্রতিবেদন) আরেকটু বিশ্লেষণ করে দেখব, আমলে নেওয়ার মতো কোনো বিষয় আছে কিনা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের যে যোগাযোগ, সামনে উচ্চ পর্যায়ের সফরও আছে। বিভিন্ন পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলো আছে। সেখানে আমরা এ রিপোর্টের ত্রুটিগুলো তুলে ধরব, যেন ২৪ সালের রিপোর্ট অন্তত ত্রুটিগুলো না থাকে। প্রতিবেদনে কিছু প্রশংসার জায়গা আছে। আমরা ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমরা কিছু জায়গায় যে উন্নতি করেছি, তার একটি প্রতিফলন এ প্রতিবেদনে আছে।  প্রতিবেদনটা বেশ বড়। এটা স্টাডি করতে সময় লাগে। তবে আমরা ইতোমধ্যে কিছু ভুল পেয়েছি। যেমন- গুমের সংখ্যা প্রতিবেদনে ৮১ উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এটি ৭৬, প্রতিবেদনে ৭৬ এর জায়গায় খুবই অস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশ দাবি করেছে। এর মধ্যে ১০ জনকে খুঁজে পাওয়া গেছে। তবে প্রতিবেদনে এর সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। জাতিসংঘ এ ১০ জনের তথ্য যাচাই–বাছাই করেছে এবং ৭৬ এর তালিকা থেকে ১০ জনকে বাদ দিয়েছে। বাংলাদেশ এখানে শুধুমাত্র দাবি করেনি। এ ধরনের মৌলিক ত্রুটি প্রতিবেদনে রয়েছে।