নারী উদ্যোক্তাদের কখনো ব্যর্থ হতে দেখিনি : পলক

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারী আরেকটি সিদ্ধান্ত হলো প্রতিটি ডিজিটাল সেন্টারে এক পুরুষ উদ্যোক্তার পাশাপাশি নারী উদ্যোক্তাকে যুক্ত করা।  গত ১৪ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আমাদের নারী উদ্যোক্তাদের কখনো ব্যর্থ হতে দেখিনি। একটি উদ্যোগ ক্ষতিগ্রস্থ হলেও নতুন অন্য একটি উদ্যোগ নিয়ে নারী উদ্যোক্তারা সফল হয়েছেন। উদ্যোক্তাদের অসামান্য অবদানের ফলে এটুআই, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও আইসিটি বিভাগের সহযোগিতায় আমরা দেশে এবং প্রবাসে অনেকগুলো ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি। প্রতিটি ডিজিটাল সেন্টারে এক পুরুষ উদ্যোক্তার পাশাপাশি নারী উদ্যোক্তাকে যুক্ত করার সিদ্ধান্তের ফল হচ্ছে আজকের বৈপ্লবিক পরিবর্তন। বাড়ছে সেবার বহর, গ্রাম হবে শহর এই স্লোগানকে সামনে নিয়ে গ্রামকে শহরের নাগরিক সেবা পৌঁছে দেয়ার কাজটি করছেন সাথী নেটওয়ার্কের সব স্মার্ট নারী উদ্যোক্তারা।

গতকাল (১৫ মার্চ) বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারের বিসিসি অডিটোরিয়ামে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে এটুআই’র ‘সাথী’ নেটওয়ার্কের নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে প্রান্তিক নারীদের আর্থিক অন্তর্ভূক্তি ও আর্থিক সাক্ষরতা বৃদ্ধিতে দেশব্যাপী সম্পৃক্ত ডিজিটাল সেন্টারের নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত নারী উদ্যোক্তা সম্মেলনে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।  বছরব্যাপী প্রান্তিক নারীদের আর্থিক সেবার আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৩ জন নারী উদ্যোক্তাকে ‘শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তা সম্মাননা’ প্রদান করা হয়। শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তাদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন পলক। 

সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন, ইউএনডিপি, বাংলাদেশ-এর আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আবুল বশর, ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়রা আজম এবং বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার ও জেন্ডার এডভাইজার স্নিগ্ধা আলী। এটুআইর যুগ্ম-প্রকল্প পরিচালক নাহিদ সুলতানা মল্লিক (যুগ্মসচিব) এর সভাপতিত্বে নানা সেশনের মধ্য দিয়ে সম্মেলন সম্পন্ন হয়। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন এটুআই এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী। 

উল্লেখ্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতায় বাস্তবায়নাধীন ও ইউএনডিপি’র সহায়তায় পরিচালিত এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিভিন্ন উদ্ভাবনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালের ১৪ মার্চ ‘সাথী’ নেটওয়ার্ক আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। গত ১ বছরে ৪৫ হাজারের অধিক প্রান্তিক নারীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণের আওতায় আনা হয়েছে। নারীদের আর্থিক সাক্ষরতা বৃদ্ধিতে প্রান্তিক পর্যায়ে দু’টি আর্থিক সাক্ষরতা প্রচারাভিযান ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হয়েছে। এই ক্যাম্পেইনের আওতায় প্রায় এক লক্ষ নারীদের মাঝে প্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক সেবা বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে প্রতিটি উপজেলায় অন্তত ১ জন এবং ২০২৬ সালের মধ্যে প্রতিটি ইউনিয়নে অন্তত ১ জন করে নারী উদ্যোক্তা তৈরি করার লক্ষ্য ‘সাথী’ নেটওয়ার্কের। শ্রেষ্ঠ ৩ নারী উদ্যোক্তা হলেন সিরাজগঞ্জের রায় দৌলতপুর ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মোছাঃ মারুফা ইয়াসমিন, সুনামগঞ্জের আটগাঁও ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের শেফালী খাতুন এবং কুমিল্লার আগানগর ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মোসাঃ শামছুন্নাহার।