রহমত নিউজ ডেস্ক 13 March, 2023 07:42 PM
পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলার সুষ্ঠু তদন্ত, বিচার, জবাবদিহিতা ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ৫ দাবি জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ।
দাবিগুলো হলো- ১. এ হামলার সঙ্গে জড়িতদের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে চিহ্নিত করে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও বিচার নিশ্চিত করা। ২. হামলার আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও আহমদিয়া সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও জলসা আয়োজনের ক্ষেত্রে যথাযথ পরিবেশ নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা কী ছিল তা নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে খতিয়ে দেখে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। ৩. আহমদিয়া সম্প্রদায়ের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত নারী, পুরুষ, শিশু নির্বিশেষে সবার জন্য পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা। ৪. আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অনলাইন ও অফলাইনে যারা ঘৃণা ছড়াচ্ছে এবং এ সম্প্রদায়ের ওপর হামলায় প্ররোচনা দিচ্ছে, সেসব ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কী ধরনের আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জনগণকে জানানো। আইনানুগ ব্যবস্থা না নেওয়া হলে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ৫. আগের সব হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার বিচার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি জনসমক্ষে প্রকাশ করা। একইসঙ্গে দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা।
আজ (১৩ মার্চ) সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা এ দাবি জানান। ফোরামের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল ইতোমধ্যে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ঢাকার অফিস পরিদর্শন করেছে। পরে তাদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
বক্তারা বলেন, গত ৩ মার্চ পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালান জালসা বন্ধের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ, তাদের ওপর হামলা, ঘর-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, লুটপাট ও আগুনে পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে একজন ও বিক্ষোভকারীদের আঘাতে অপর এক তরুণ নিহত হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ, তথ্যানুসন্ধান ও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় মানবাধিকার ফোরামের কাছে এটা স্পষ্ট যে, এটি পূর্বপরিকল্পিত ও আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জালসাকে কেন্দ্র করে সংগঠিত। যা প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সম্মেলনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আহমদিয়া সম্প্রদায় যে অনুষ্ঠান করবে তা প্রশাসনকে আগেই জানানো হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে কেন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এর পরও কেন এমন ঘটনা ঘটল স্বাভাবিকভাবেই দেশবাসীর মনে এমন প্রশ্ন জাগছে। আমাদের সংবিধানের যে মূলনীতি আছে, তার সঙ্গে এই ঘটনা পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। অসাম্প্রদায়িক ও সব নাগরিকের সমঅধিকারের কথা সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। এমন ঘটনার মাধ্যমে সাংবিধানিক চেতনা ও স্বাধীনতা চেতনাকে পদদলিত করা হচ্ছে। দেশের বৃহৎ দুটি দল অনেক আগে থেকেই এ ধরনের ঘটনাগুলোকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করায় আমরা এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি বারবার দেখছি। এসব ঘটনা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করায় দলগুলো মনে করছে এটা সমাধান হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এ ধরনের ঘটনা আরো বড় সমস্যায় পরিণত হবে।