রহমত নিউজ 28 February, 2023 04:20 PM
আর্জেন্টিনার সঙ্গে যোগাযোগ জোরদারে সরকারের আগ্রহ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা বুয়েন্স আয়ার্সের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে খুবই আগ্রহী। বর্ধিত সহযোগিতার মাধ্যমে দুই দেশ আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির মাধ্যমে তাদের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে। আর্জেন্টিনা বাংলাদেশ থেকে তৈরী পোশাকের পাশাপাশি উচ্চমানের ফার্মাসিউটিক্যালস, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য পণ্য কিনতে পারে। অন্যদিকে বাংলাদেশ আর্জেন্টিনা থেকে সয়াবিন, এনিমেল ভেজিটেবল ফ্যাটস এন্ড ওয়েল, তৈলবীজ, ফলমূল, দুগ্ধজাত পণ্য এবং প্রাকৃতিক মধু আমদানি করে।
আজ (২৮ ফেব্রুয়ারি) মঙ্গলবার সকালে গণভবনে আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী সান্তিয়াগো আন্দ্রেস ক্যাফিয়েরো সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) সাব্বির আহমেদ চৌধুরী এবং বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত হুগো গোবি এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
দেশের ফুটবল খেলার উন্নয়নে বর্তমান বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার সহযোগিতা চেয়েছেন। বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়নে আর্জেন্টিনা বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে পারে অভিমত ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, “মেসির নাম এবং আর্জেন্টিনার ফুটবল খেলা বাংলাদেশের ঘরে ঘরে খুবই জনপ্রিয়।” প্রধানমন্ত্রী পারস্পরিক সুবিধার জন্য বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনৈতিক, সামাজিক, ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও পর্যটনসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন।
ঢাকায় আর্জেন্টিনার দূতাবাস পুনরায় খোলার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করে সান্তিয়াগো আন্দ্রেস ক্যাফিয়েরো বলেন, ঢাকায় তাদের দূতাবাস পুনরায় চালু হওয়ায় আর্জেন্টিনা খুবই খুশি এবং এ লক্ষ্যে সহযোগিতা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। আর্জেন্টিনা প্রথম ১৯৭৪ সালে ঢাকায় তার দূতাবাস খোলে। কিন্তু ১৯৭৮ সালে সামরিক জান্তার শাসনামলে সেটি বন্ধ করে দেয়া হয়। সোমবার ঢাকার বনানীতে আর্জেন্টিনা দূতাবাস পুণরায় খোলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং শিল্পায়নের লক্ষ্যে সারা দেশে ১শ’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ায় একটি বিপণন কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার শুধু দেশের মধ্যেই নয়, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গেও শক্তিশালী যোগাযোগ অবকাঠামো গড়ে তুলছে। কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে সারা বিশ্ব দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বে খাদ্য দ্রব্যের দাম এবং মূদ্রাস্ফীতি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাওয়ায় শুধু বাংলাদেশ নয়, অনেক উন্নত দেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা ও সম্পর্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধ ও কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে আর্জেন্টিনার জনগণও উচ্চ মূদ্রাস্ফীতিতে ভুগছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সম্মিলিত ভাবে গ্লোবাল সাউথ ফোরামের সদস্য দেশগুলোর সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকার ও প্রশংসা করেন। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন দেখে মুগ্ধ। এটি প্রথম সফর, বাংলাদেশ এত সুন্দর হবে তা কখনোই ভাবিনি।