| |
               

মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন লাঞ্ছিত করে বিদ্যালয় থেকে প্রধান শিক্ষককে বের করে দিলেন যুবলীগ নেতা


লাঞ্ছিত করে বিদ্যালয় থেকে প্রধান শিক্ষককে বের করে দিলেন যুবলীগ নেতা


রহমত নিউজ     10 February, 2023     06:30 AM    


রাজশাহীতে পছন্দের প্রার্থীদের চাকরি না দেওয়ায় এক প্রধান শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে বিদ্যালয় থেকে বের করে দিয়েছেন যুবলীগ নেতা। স্থানীয় সংসদ সদস্য বিষয়টি সুরাহা না করা পর্যন্ত স্কুলে না আসার হুমকি দিয়েছেন তিনি। এই হুমকির পর স্কুল ছেড়েছেন প্রধান শিক্ষক। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ।

বৃহস্পতিবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী মহানগরীর গোলজারবাগ উচ্চ বিদ্যালয়ে সকাল এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত নাহিদ আক্তার নাহান মহানগর যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। আগামী কমিটিতে তিনি সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, সম্প্রতি গোলজারবাগ উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মচারী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগে পছন্দের প্রার্থীদের জন্য সুপারিশ করেছিলেন যুবলীগ নেতা নাহান। কিন্তু তার সুপারিশের প্রার্থীরা চাকরি পায়নি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে আজ সকালে নাহিন আক্তার নাহানের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা গোলজারবাগ স্কুলে যান। এ সময় তারা প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে খুঁজতে থাকেন। তাকে পেয়েই ক্ষিপ্ত হয়ে তারা জানতে চান, তাদের প্রার্থীদের চাকরি দেওয়া হয়নি কেনো। এ নিয়ে সেখানে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। 

এ ঘটনার পর যুবলীগ নেতা নাহান উত্তেজিত অবস্থায় প্রধান শিক্ষককে স্কুল থেকে জোর করে বের করে দেন। এ সময় প্রধান শিক্ষককে বলে দেন, তিনি যেন আপাতত স্কুলে না আসেন। ওয়াকার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ফজলে হোসেন বাদশা ঢাকা থেকে ১৩ তারিখে ফেরার পর এ বিষয়ে সুরাহা হলে স্কুলে আসবেন। এর আগে স্কুলে আসা যাবে না।

যুবলীগ নেতা নাহিদ আক্তার নাহান বলেন, ‘মারধরের মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি ধাক্কা দিয়ে কেবল সরিয়ে দিয়েছি। আমি প্রধান শিক্ষককে বলেছি, এলাকাবাসী এখন উত্তেজিত। এখন কয়েকদিন আপনার স্কুলে আসার দরকার নেই। এমপি সাহেবের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি ১৩ তারিখে ঢাকা থেকে রাজশাহী আসবেন। তারপর যেনো তিনি স্কুলে আসেন। তা না হলে কেউ যদি মেরে দেয়, তার দায় নিতে পারব না।’

তিনি অভিযোগ করেন,  প্রধান শিক্ষকের মন শুধু নিয়োগে। তিনি শ্যালিকা, ভাইরা ভাই, ভাতিজা ও পুত্রবধূকে নিয়োগ দিয়েছেন। এরা সবাই বাইরের প্রার্থী। কথা ছিল স্থানীয় গরীব মানুষদের চাকরি দেবেন। কিন্ত কথা রাখেননি তিনি। এতে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ। সম্প্রতি চারটি পদের বিপরীতে আবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘আমি কি গভর্নিং বডির সভাপতি। আমি এ নির্দেশ কেনো দেব। আমার কথা কেনো বলেছে তা বলতে পারব না। তবে আমি মনে করি, এটা জটিল কোনো বিষয় না। এটা সমাধান হয়ে যাবে।’

গোলজারবাগ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন জানান, তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ সব বিষয়ে তিনি কথা বলতে চান না। এরপরই তিনি ফোন কেটে দেন।

রাজশাহী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহা. নাসির উদ্দিন  বলেন, ‘প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিতের খবর পেয়ে কয়েকবার তাকে ফোন করেছিলাম। কিন্তু তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। আমি খোঁজ নিয়ে দেখব। শিক্ষক কোনো অপরাধ করলে আমাদের কাছে অভিযোগ করতে পারে। কিন্তু স্কুল থেকে তাকে কোনভাবেই বের করে দেওয়া যায় না।’ -আমাদের সময় ডটকম।