রহমত নিউজ ডেস্ক 01 February, 2023 09:07 PM
বায়ুমানের সূচক অনুযায়ী পৃথিবীর চারটি দূষিত নগরীর একটি হচ্ছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। জানুয়ারি মাসের বেশ কয়েকদিন বায়ুদূষিত নগরীর এক নম্বরে অবস্থান করেছে এ শহর। এতে করে মানুষ নানা প্রাকারের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। ঢাকায় বসবাস করা মানুষকে সুস্থ রাখতে ১২ দাবি তুলে ধরেছে পরিবেশবাদী সাতটি সংগঠনের নেতারা।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সম্পাদক ডা. লেলিন চৌধুরী, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম-নাসফের পরিচালক গাউস পেয়ারী, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার, আজিজুর রহমান খান। সঞ্চালনা করেন জন উদ্যোগের সদস্য সচিব তারিক হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, অ্যায়ারভিস্যুয়াল-র তথ্য অনুযায়ী গত জানুয়ারির প্রথম ২৪ দিনের মধ্যে ২৩দিন ঢাকার বায়ুমান বিপজ্জনক পর্যায়ে ছিল। বায়ুমান পরিমাপের একটি বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি রয়েছে। এটি একিউআই (এড অ্যায়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। বায়ুমানের সূচক বা একিউআই ০.৫০ হচ্ছে ভালো বা স্বাস্থ্যকর, ৫১-১০০ মধ্যম মানের, ১০১-১৫০ সংবেদনশীল ব্যক্তিদের জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১–২০০ অস্বাস্থ্যকর, ২০১-৩০০ অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর, ৩০১ প্লাস বিপদজনক। গত ১২ জানুয়ারি ঢাকার বাতাসের সর্বোচ্চ মান ছিল একিউআই ৬৩৫। বায়ুমান বিপদজ্জনক পর্যায়ে উপনীত হলে সবাইকে ঘরের ভেতর থাকতে বলা হয়। ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রাখতে বলা হয়। বায়ুমান অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হলে হাঁপানি ও নানা ধরনের শ্বাসতন্ত্রীয় রোগীদের ঘরের বাইরে বের হওয়া যাবে না। অন্যদের জন্য বের না হওয়া এবং বাইরে কাজ না করার জন্য বলা হয়। অস্বাস্থ্যকর বায়ুমানের সময় সংবেদনশীল ব্যক্তিরা পারতপক্ষে বাইরে বের না হওয়া এবং অন্যরা বাইরে বের হলেও কম সময় বাইরে না থাকা এবং শারীরিক শ্রমের কাজ তেমন না করা।
ঢাকার বাতাস দূষিতমুক্ত ও সুস্থভাবে মানুষের বসবাসের উপযোগী করে তুলতে ১২ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে- ১. ঢাকার মধ্যে মাটি বহনকারী ট্রাকগুলো ঢেকে মালামাল বহন করা ও নির্মাণস্থান ঢেকে কাজ করা। ২. সড়কে সব এলকায় পানি ছেটানোর ব্যবস্থা করা। ৩. সড়কের মেগা প্রজেক্টের নির্মাণ এবং কার্পেটিং কাজ আইন কানুন মেনে করা। ৪. যেসব গড়ি কালো ধোঁয়া ছাড়ে সেগুলো জব্দ করা। ৬. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ির ইকোনোমিক লাইফ নির্ধারণ এবং গাড়ি পুরোনো হয়ে গেছে সেগুলো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ। ৭. লাইসেন্সবিহীনভাবে চলাচলরত গাড়ি বন্ধ করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করা। ৮. পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া টায়ায় পোড়ানো এবং ব্যাটারি ডিসাইকিপিং না করা। ৯ মার্কেট এবং দোকানের বর্জ্য প্যাকেট করে রাখা। সেগুলো সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে অপসারণ করা। ১০. রাজধানীর প্রবেশমুখসহ বিভিন্ন পয়েন্টে পানি ছিটানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। ১১. ঢাকার রাস্তার ওপর থাকা গাছে জমে থাকা ধুলা-ময়লা পরিষ্কার হয়। ১২. পানির ঘাটতি তৈরি হলে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে পানি সরবরাহ করতে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে দেওয়া আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নের দাবি করা হয়েছে।