রহমত নিউজ ডেস্ক 22 January, 2023 03:47 PM
মাঠ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক-ডিসিদের নিয়ে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক-ডিসি সম্মেলন শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি)। এবার ডিসি সম্মেলন ২৬ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) শেষ হবে। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দু-বছর পর গত বছর ১৮ থেকে ২০ জানুয়ারি ডিসি সম্মেলন হয়েছিল। গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। তবে এবার সরাসরি উপস্থিত হয়ে ডিসি সম্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে তিনি সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। গত বছরের মতো এবার জেলা প্রশাসক সম্মেলনের মূল ভেন্যু রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন। ডিসি সম্মেলনকে সামনে রেখে এবার ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে ২৪৫টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
আজ (২২ জানুয়ারি) রবিবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২৩ উপলক্ষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসবকথা জানান। সরকারের নীতি-নির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনা-সামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতি বছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এবারের সম্মেলন তিন দিনব্যাপী হচ্ছে। গত সম্মেলনও তিন দিনব্যাপী ছিল। এবারে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং নির্দেশনা গ্রহণের পাশাপাশি স্পিকার ও বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে জেলা প্রশাসকরা সৌজন্য সাক্ষাৎ, নির্দেশনা গ্রহণ ও মতবিনিময় করবেন। তাছাড়া সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সামরিক-বেসামরিক সমন্বয় বিষয়ক অধিবেশন সংযুক্ত করা হয়েছে। এবার সম্মেলনে মোট ২৬টি অধিবেশন হবে। এরমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কার্য অধিবেশন ২০টি। এছাড়া একটি উদ্বোধন অনুষ্ঠান, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ নিয়ে একটি, স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষৎ নিয়ে একটি ও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা নিয়ে দুটি অধিবেশন হবে। সম্মেলনে মোট ৫৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অংশগ্রহণ করবে। কার্য অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত থাকবেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জেলা প্রশাসক সম্মেলন উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে ২৪৫টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে, সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রস্তাব পাওয়া গেছে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ সংক্রান্ত, এ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রস্তাব ২৩টি। এরপর ভূমি মন্ত্রণালয় (১৫টি প্রস্তাব) ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত (১৩টি), সুরক্ষা সেবা বিভাগ সংক্রান্ত (১১টি), গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত (১০টি) প্রস্তাব বেশি পাওয়া গেছে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম জোরদারকরণ; ভূমি ব্যবস্থাপনা; আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম; স্থানীয় পর্যায়ে কর্ম-সৃজন ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন; সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি বাস্তবায়ন; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্নেন্স; শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ; স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ; পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধ; ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন; এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়। গত বছরের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হারের বিষয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, ২০২২ সালে বাস্তবায়ন হার ছিল ৭৩ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, এ সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকেরা কী ম্যাসেজ নিয়ে মাঠ পর্যায়ে ফিরে যাবেন তা আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারবেন। এ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশের প্রশাসনে মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রমে নতুন গতির সঞ্চার হবে। দেশে যত নির্বাচন হয়েছে সব নির্বাচনেই প্রশাসনের তরফ থেকে সেভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। নির্বাচনে সহযোগিতার জন্য আমাদের ঐতিহ্য ও অভিজ্ঞতা আছে। সেই ঐতিহ্য ও অভিজ্ঞতাকে আমরা কাজে লাগাবো। আমরা নির্বাচনে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করে যাবো। এ মুহূর্তে ডিসি সম্মেলনের বাজেটের তথ্য আমার কাছে নেই। তবে আপনারা নিশ্চিত থাকেন যে আমরা ব্যয় সংকোচন করবো। আমি জানি না মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুক্ত আলোচনার কোনো অভিজ্ঞতা আছে কিনা, যদি থাকে তাহলে বুঝতেন কত আন্তরিকতার সঙ্গে উনি আলোচনা করেন। আপনারা তা চিন্তাও করতে পারবেন না। আপনারা যা শুনেছেন তা পূর্ণাঙ্গ চিত্র নয়।