রহমত নিউজ ডেস্ক 02 January, 2023 06:12 PM
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করলে আন্দোলনে জয়ী হওয়া যায় না, ক্ষমতায় যাওয়া যায় না। তারা (আওয়ামী লীগ) জানে এটা। জানার পরেও তারা একই ভুল করছে। ক্ষমতা কি মানুষকে এতই অন্ধ করে! আমরা কাকে ধোঁকা দিতে চাই, যে জনগণ আমাদের এত বিশ্বাস করে, আশায় বুক বাঁধে। তাদের সঙ্গে প্রতারণা করার মতো এই বড় পাপ, এত বড় অপরাধ বোধহয় আর কিছু নাই। আমাদের সংবিধানে সমাজতন্ত্রের কথা বলা আছে। কিন্তু আমরা মুক্তবাজার অর্থনীতি চর্চা করছি।’
সোমবার (২ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। মুসলিম লীগের সভাপতি জুলফিকার আলী বুলবুলের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ ইব্রাহিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা ও বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমসহ আরও অনেকে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধে ছিলাম, আক্ষেপটা বোধহয় তাদেরই বেশি। কী ভেবে, কী চিন্তা করে, কী আশা নিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলাম। আর কী পেয়েছি। কত রঙ, কত রকমের কথা শুনেছিলাম আমরা— বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হবে। বাংলাদেশকে কত কী করা হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ করা হবে। এখন স্মার্ট বাংলাদেশ করা হবে শুনেছি। যে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখেছি, অনাচার দেখেছি, অব্যবস্থাপনা দেখেছি। শেষ পর্যন্ত সে দেশে গণতন্ত্রহীনতা দেখছি। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা দেখেছি। এগুলোর কোনোটাই সোনার মতো মূল্যবান না। বলা হচ্ছে দেশে গণতন্ত্র রয়েছে, কিন্তু গণতন্ত্র চর্চা করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় ব্যবস্থা কায়েম করেছে, তারাই এখন গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন বলে দাবি করে। তখন কষ্ট হয়। গণতন্ত্র তো ক্ষমতায় যাবার বাহন না। গণতন্ত্রের বাহন হলো নির্বাচন। নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। আপনারা সেই নির্বাচন ধ্বংস করে বলবেন— গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন, এটা বলতে পারেন না।
তিনি আরো বলেন, আজকে বাংলাদেশের মানুষ জেগে গেছে, আমাদের এত নেতাকর্মী গ্রেফতার করা হয়েছে। মাত্র তিন মাসের মধ্যে আমাদের ১২-১৩ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। তারপরও আমাদের প্রত্যেকটা প্রোগ্রাম সফল হয়েছে। প্রত্যেকটা আন্দোলনে সাধারণ জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ গ্রহণ করছে। আর সাধারণ জনগণ তখনই অংশগ্রহণ করে, যখন তারা পরিবর্তন চায়। পরিবর্তন চায় কল্যাণের জন্য, সমৃদ্ধির জন্য, শান্তির জন্য। জনগণের শান্তি, কল্যাণ এবং সমৃদ্ধির যে আকাঙ্ক্ষা, যুগে যুগে কেউ কখনও তা দাবিয়ে রাখতে পারে নাই। এই সরকারও পারবে না। আগামী দিনের সেই লড়াইয়ে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।