| |
               

মূল পাতা জাতীয় দেশের গরু-ছাগলের হিসাবে এত ভাগাভাগি কেন? পরিকল্পনামন্ত্রী


দেশের গরু-ছাগলের হিসাবে এত ভাগাভাগি কেন? পরিকল্পনামন্ত্রী


রহমত নিউজ ডেস্ক     27 December, 2022     09:47 PM    


দেশে গরু-ছাগলের হিসাব নিয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএস যে তথ্য দিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, গরু মানে তো দেশের অভ্যন্তরে থাকা সব গরু। ছাগল মানে তো দেশের ভেতরে থাকা সব ছাগল। কিন্তু সেই গরু-ছাগল নিয়ে এত ভাগাভাগি কেন? বিবিএস কেন বাণিজ্যিক খামার বাদ দিয়ে শুধু পরিবারভিত্তিক গরু-ছাগলের তথ্য প্রকাশ করেছে? বাংলাদেশে পরিবারভিত্তিক যেমন গরু-ছাগল পালন করা হয়, তেমনি বাণিজ্যিকভাবেও গরু-ছাগল পালন করা হয়। কিন্তু বিবিএস তাদের কৃষিশুমারিতে বাণিজ্যিক ফার্মের গরু–ছাগলের হিসাব যোগ করেনি। শুধু খানাভিত্তিক গরু–ছাগলের হিসাব যুক্ত করেছে।

আজ (২৭ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত  ‘কৃষিশুমারি ২০১৯’–এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।  প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব শাহনাজ আরেফিন, বিবিএস মহাপরিচালক মতিয়ার রহমান। অনুষ্ঠানে কৃষিশুমারির মূল প্রতিবেদন তুলে ধরেন প্রকল্প পরিচালক আলাউদ্দিন আল আজাদ।

 

মূল প্রবন্ধে প্রকল্প পরিচালক আলাউদ্দিন আল আজাদ বলেন, এক দশকে দেশে গরু-ছাগলের সংখ্যা বেড়েছে। দেশে এখন গরুর সংখ্যা ২ কোটি ৯৫ লাখ। ১১ বছর আগে ২০০৮ সালে করা কৃষিশুমারিতে গরুর সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৫৭ লাখ। অন্যদিকে ছাগলের সংখ্যা বেড়ে ১ কোটি ৯৪ লাখে উন্নীত হয়েছে, যা আগে ছিল ১ কোটি ৬৩ লাখ। যদিও গরু-ছাগলের এই তথ্য নেওয়া হয়েছে শুধু পরিবার (খানাভিত্তিক) থেকে।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, দেশে অস্থায়ী ফসলের জমির পরিমাণ এখন ১ কোটি ৬৪ লাখ একর, যা আগে ছিল ১ কোটি ৭৬ লাখ একর। অস্থায়ী ফসলের জমি বলতে কী বোঝায়, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পরিকল্পনামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি গ্রামের মানুষ। গ্রামেই আমার বেড়ে ওঠা। কিন্তু কখনো শুনিনি। অস্থায়ী ফসলের জমি কী?’

প্রকল্প পরিচালক জানান, শুমারিতে কৃষকের সংখ্যা বের করা হয়নি। প্রশ্নপত্র সেভাবে তৈরি করা হয়নি। তাঁরা শুধু কৃষিখানার সংখ্যা বের করেছেন। কৃষিমজুরখানার হিসাব বের করেছেন। যুক্তি হিসেবে আলাউদ্দিন আল আজাদ বলেন, অনেক পরিবারে সন্তান তাঁর পিতাকে কৃষিকাজে সহায়তা করেন। তাই সন্তানকে কৃষক হিসেবে যোগ করা যায় না। এ কারণে শুমারিতে কৃষকের সংখ্যা বের করা হয়নি।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এসব আমাদের পুরোনো অভ্যাস। আমরা আমলা। গতানুগতিক কাজ করতে আমরা অভ্যস্ত। এই ধারা আমাদের ভাঙতে হবে।’ গরু–ছাগলের তথ্য নিয়ে সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সঙ্গে বিবিএসের সমন্বয়হীনতা রয়েছে বলে স্বীকার করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

অন্যদিকে বিবিএসের কৃষিশুমারি কেন এত দেরিতে প্রকাশ করা হলো, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, ১০ বছর পরপর কৃষিশুমারি হওয়ার কথা। কিন্তু বিবিএস তা করতে পারছে না। আবার সঠিক সময়েও শুমারির ফল প্রকাশ করতে পারছে না। সঠিক সময়ে শুমারি করতে বিবিএসকে নির্দেশ দেন তিনি।  জাতীয় তথ্য দেওয়ার দায়িত্ব বিবিএসের। সরকারের যেকোনো সংস্থা তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। তবে তাদের উচিত সেই তথ্য বিবিএসকে দেখিয়ে নেওয়া। কিন্তু প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর তা করে না। তারা নিজেরা গরু–ছাগলের তথ্য প্রচার করে। আমি মনে করি, তাদের উচিত তথ্য প্রচারের আগে বিবিএসকে জানানো। তখন তথ্যগত বিভ্রান্তি দূর করা সম্ভব হবে। প্রতি ১০ বছর পরপর কৃষিশুমারি হওয়ার কথা। কিন্তু বিবিএস এই নিয়ম পালন করে না। এর আগে ২০০৮ সালে কৃষিশুমারি হয়েছিল।  নিয়ম অনুযায়ী ২০১৮ সালে শুমারি হওয়ার কথা। কিন্তু তারা সেটা শুরু করল ২০১৯ সালে। আর ফল প্রকাশ করছে ২০২২ সালে। এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। দেরিতে শুমারির ফল প্রকাশ করার কারণে সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ১০ বছর আগের তথ্য দিয়ে প্রণয়ন করতে হয়েছে।