মূল পাতা আন্তর্জাতিক উপমহাদেশ পাকিস্তানে ২ প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা ইমরান খানের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 18 December, 2022 03:27 PM
পাকিস্তানে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। একদিকে দেশটির ক্ষমতাসীন জোট এবং অন্যদিকে বিরোধীদল পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ-পিটিআই চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিপরীতধর্মী অবস্থানে উত্তেজনা যেন বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের দু’টি প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙে দেওয়ার তারিখ ঘোষণা করেছেন তিনি।
আজ (১৮ ডিসেম্বর) রবিবার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। পাঞ্জাব প্রদেশটি ইমরান খানের দল পিটিআই নিয়ন্ত্রিত। পাঞ্জাব পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ এবং দেশটির ২২ কোটি জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই এই প্রদেশে বাস করে। আর তাই প্রাদেশিক পরিষদ বিলুপ্তির ফলে পাকিস্তানে নতুন করে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান জানিয়ে এবং বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক করে বলেছেন, অন্যথায় দেশ ডুবে যেতে পারে।আগামী ২৩ ডিসেম্বর পাঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনখাওয়া বিধানসভা ভেঙে দেওয়া হবে। শনিবার লাহোরে নিজের বাসভবন থেকে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে তার কর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এই ঘোষণা দেন। এসময় ইমরানের সঙ্গে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ এলাহি ও খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী মেহমুদ খান উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদমাধ্যম বলছে, পাকিস্তানের চারটি প্রাদেশিক পরিষদের মধ্যে দু’টি নিয়ন্ত্রণ করে ইমরান খানের দল। অন্য দু’টি প্রাদেশিক পরিষদ তার রাজনৈতিক বিরোধীরা নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের অধীনে ফেডারেল সরকারও নিয়ন্ত্রণ করছে বিরোধীরা। ইমরান খান আগাম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ফেডারেল সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতে নির্ধারিত সময়ের আগে দু’টি প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিলেও সাবেক এই তারকা ক্রিকেটারের বিরোধীরা বলছে, তারা ২০২৩ সালের নভেম্বরে নির্ধারিত জাতীয় এবং স্থানীয় নির্বাচনের আগে কোনও নির্বাচনের আয়োজন করবে না।
শনিবার পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোরে নিজের সমর্থকদের এক সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় ইমরান খান বলেন, আগামী শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) আমরা পাঞ্জাব এবং খাইবার-পাখতুনখাওয়া প্রদেশের পরিষদ দু’টি ভেঙে দেবো। দেশের ভবিষ্যতের স্বার্থে দু’টি প্রাদেশিক সরকারের ক্ষমতা ‘ত্যাগ’ করছেন তারা। দু’টি প্রদেশে নির্বাচনের অর্থ হবে পাকিস্তানের ৬৬ শতাংশেরও বেশি এলাকায় ভোটগ্রহণ, তাই সরকার সাধারণ নির্বাচনও আয়োজন করতে পারে।
ঐতিহাসিকভাবে, কেন্দ্রীয় এবং প্রাদেশিক সরকারের জন্য প্রতি পাঁচ বছর অন্তর একই সময়ে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যদি ওই দু’টি প্রাদেশিক পরিষদ আগেই ভেঙে দেওয়া হয়, তাহলে ৯০ দিনের মধ্যে তাদের জন্য আলাদা নির্বাচন করতে হবে, যা আইনি সমস্যা তৈরি করতে পারে।এদিন ইমরান পাকিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) কামার জাভেদ বাজওয়াকে তার দলের বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্রে’ জড়িত থাকার জন্য দায়ী করেন। জেনারেল বাজওয়াই পিটিআই সরকারকে পতনের জন্য দায়ী একমাত্র ব্যক্তি। পাকিস্তানের সাধারণ একজন নাগরিকের মতো তিনি তার সম্পদের বিষয়ে আদালতে সমস্ত বিবরণ দাখিল করেছেন। যারা জনসাধারণের অর্থ চুরি করে বিদেশে পাচার করেছে এটা তাদের থেকে ভিন্ন। ক্ষমতাসীন পিডিএম নেতাদের সব টাকা, ব্যবসা ও সন্তানরা বিদেশে। তারা দেশের টাকা চুরি করে পাকিস্তানে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে। তিনি পাকিস্তান ছাড়া অন্য কোথাও বসবাস করার কথা ভাবেননি।