| |
               

মূল পাতা সারাদেশ জেলা ‘মেলান্দহে কর্মসৃজন প্রকল্পের অনিয়ম; কর্মদিবসে নেই শ্রমিক, চলছে কর্মদিবস ফাঁকি!’


মেলান্দহ কুলিয়া ইউনিয়নে কর্মদিবসে শ্রমিক শূন্য ইজিপিপি প্রকল্প। ওসমান হারুনী

‘মেলান্দহে কর্মসৃজন প্রকল্পের অনিয়ম; কর্মদিবসে নেই শ্রমিক, চলছে কর্মদিবস ফাঁকি!’


ওসমান হারুনী     13 December, 2022     08:33 PM    


গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের অধীনে বাস্তবায়নাধীন জামালপুরে মেলান্দহ উপজেলার ইজিপিপি প্রকল্পের ব্যাপক অনিয়ম ও  দূর্নীতি চলছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মানা হচ্ছে না মাঠ পর্যায়ের কর্মসহায়ক নির্দেশিকা গাইড।

জানা যায়, অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি‘ সরকারের অন্যতম সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি। দু:স্থ পরিবারগুলো দারিদ্র নিরসন ও দুর্যোগে ঝুঁকিহ্রাসে সক্ষমতা বৃদ্ধিই এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য। কিন্তু মেলান্দহ উপজেলায় উপজেলা প্রকল্পে বাস্তবায়ন কর্মকর্তার গাফিলতি ও দায়িত্বহীনতা ও ঘোষ বাণিজ্য কারণে এই কর্মসূচি উদ্দেশ্য লক্ষ ভেস্তে গেছে। কাগজে কলমে কর্মসূচির শ্রমিক থাকলেও মাঠে নেই। শ্রমিকের বদলে প্রকল্পের দায়সার কাজ করা হয় ট্রলি গাড়ি আবার কোথাও ভেকুপ মেশিনে। প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নের জন্য সরকার কর্তৃক জারীকৃত অপারেশন ম্যানুয়ালের কোন বাস্তবায়ন নেই মেলান্দহ উপজেলায়।  ফলে সরকারের ইজিপিপি কর্মসূচির সুষ্ঠু,স্বচ্ছ ও সময়োচিত বাস্তবায়ন না হওয়ায় মেলান্দহ ভেস্তে গেছে ইজিপিপি প্রকল্পের উদ্দেশ্য।

উপজেলা প্রকল্পে বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, গত২৬নভেম্বর/২০২২ইং থেকে মেলান্দহ উপজেলায় ২০২২-২০২৩ইং অর্থ বছরের অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির(ইজিপিপি)ওয়েজ প্রকল্পের ১১টি ইউনিয়নে ৬০টি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। ৪০০টাকা দৈনিক হাজিরায় শ্রমিকরা ৪০দিন পর্যন্ত প্রকল্প গুলোতে কাজ করবে কিন্তু কাজ শুরুর ১৫/১৬ কর্মদিবস অতিবাহিত হলেও মঙ্গলবার সরেজমিনের গিয়ে দেখা গেছে কর্মদিবস চলাকালে কুলিয়া ইউনিয়নের ৬টি প্রকল্পের শ্রমিকরা এক টুপা মাটিও ফেলেনী। কাগজে কলমে প্রকল্পের নাম, শ্রমিক তালিকা ও বরাদ্ধ থাকলেও বাস্তবের কাজের কোন মিল নেই, প্রকল্পের ছাইন বোর্ড নেই প্রকল্প এলাকায়। স্থানীয়রা জানান, চেয়ারম্যান-মেম্বাররা ৩/৪মাস আগেই ট্রলি গাড়ি ও ভেকুপ মেশিন দিয়ে প্রকল্পের দায়সারাভাবে মাটি কেটে কাজ শেষ করেছেন। বর্তমানে কর্মদিবস চলাকালে শ্রমিক বিহীন প্রকল্পের সরকারের কোটি কোটি টাকা লোটপাটের জন্য চলছে কর্মদিবস ফাঁকি। খোঁজ নিয়ে জানা যায় একই চিত্র উপজেলার সিংহভাগ প্রকল্পের। অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের নামে সরকারের ইজিপিপি প্রকল্পের এমন হ-য-ব-র-ল অবস্থা দেখার কেউ নেই।

প্রকল্পগুলোর তালিকা মোতাবেক কুলিয়া ইউনিয়নে প্রকল্প নং-৬ তারাকান্দি বন্দের বটতলা হতে আ:কুদ্দুস দেওয়ানী বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজে  প্যারাসাইর্ডি করণসহ ৭৫জন শ্রমিকরে মজুরী রয়েছে ১২লাখ টাকা এবং নন ওয়েজ কষ্ট বাবদ আরো রয়েছে ৮০হাজার৭২৩ টাকা, প্রকল্প নং-৭ সাদিপাটি মধ্যপাড়া এবতেদায়ী মাদ্রাসা মাঠে মাটি ভরাট কাজে ২৫জন শ্রমিকের মজুরী রয়েছে ৪লাখ টাকা। প্রকল্প নং-৮ ঢালিরভিটা জলিল মহুরীর বাড়ি হতে তালেব হাজীর বাড়ি হয়ে রেললাইন পর্যন্ত সংস্কার কাজে ৩৯জন শ্রমিকের নামে বরাদ্ধ রয়েছে ৬লাখ ২৪হাজার টাকা। প্রকল্প নং-৯দক্ষিণ কুলিয়া মেইন রোড হতে হযরতের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার ১২জন শ্রমিকের মজুরী রয়েছে ১লাখ ৯২হাজার টাকা। ১০নং- প্রকল্প চিনিতোলা বন্দের বাড়ি খালেকের ডিপ টিউবওয়েল হতে তারাকান্দি বটতলা পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজে৭০ জন শ্রমিকের মজুরী রয়েছে ১১লাখ ২০হাজার টাকা এবং প্রকল্প নং-১১ এর টনকী খানবাড়ী মোড় থেকে জলিল মাস্টারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজে ৩৪জন শ্রমিকের নামে  বরাদ্ধ রয়েছে ৫লাখ ৪৪ হাজার টাকা। প্রকল্প গুলির এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত ১৪/১৫দিনের মধ্যে তারা কোন শ্রমিককে কাজ করতে দেখেনি। 

৬নং প্রকল্প সভাপতি  রাশেদ, ৭নং আনোয়ারা বেগম, ৮নং নুরুন্নাহার, ৯ ও ১১ নং প্রকল্প সভাপতি নং মর্জিনার সাথে কথা হলে তারা জানান, চেয়ারম্যানের নির্দেশ আগেই আমরা প্রকল্পের মাটি কেটেছি।

কর্মসৃজন প্রকল্পগুলির এমন বেহাল অবস্থা সমন্ধে জানতে চাইলে কুলিয়া ইউনিয়নের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ইউপি সচিব আ. রাজ্জাক জানান, তিনি এব্যাপারে কোন বক্তব্য দিবেন না, চেয়ারম্যান বক্তব্য দিবেন।

কুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আ:ছালামের সাথে ফোনে কথা হলে তিনি এব্যাপারে পরে কথা বলবেন বলে জানান। প্রকল্পে অনিয়মের ব্যাপারে মেলান্দহ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মোহাম্মদ রাজ্জাক মুঠো ফোনে কোন সঠিক জবাব না দিয়ে বলেন এই বিয়ষয়ে তিনিও পরে বক্তব্য দেবেন। 


এই এলাকার অন্যান্য সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন: ময়মনসিংহ জামালপুর মেলান্দহ