রহমত নিউজ ডেস্ক 04 December, 2022 04:30 PM
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশেরর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে, তখনই ইসলামের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ধর্মীয় শিক্ষাবিরোধী সিদ্ধান্ত নেয়, স্বাধীনতা বিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশকে উত্তপ্ত করে তুলে। আওয়ামী লীগ ৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর নাস্তিক্যবাদী ড. কুদরত-ই খুদার শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়। কঠোর প্রতিবাদের মুখে তা থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হয়। এখন আবার ভারতের সাথে মিল রেখে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠনের লক্ষে সিলেবাস থেকে ইসলামী শিক্ষা বাদ দিয়েছে। সরকার দেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতেই ইসলামী শিক্ষা বাদ দিয়ে ডারউইনের নাস্তিক্যবাদী মতবাদ এবং হিন্দুত্ববাদী লেখা সিলেবাসে সংযোজন করেছে। কথা বার্তা পরিস্কার, এধরনের সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে না আসলে সরকার পতনের আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।
আজ (৪ ডিসেম্বর) রবিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা জেলা শাখার উদ্যোগে পাবলিক পরীক্ষাসহ শিক্ষার সর্বস্তরেধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা ও ডারউইনের বিবর্তবাদ সকল সিলেবাস থেকে বাদ দেয়ার দাবিতে সারাদেশে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত বিক্ষোভ পূর্ব জমায়েতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের ঢাকা জেলা দক্ষিণ সভাপতি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসাইনের সভাপতিত্বে জমায়েতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম ও দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, ঢাকা জেলা সহ-সভাপতি হাফেজ জয়নুল আবেদীন, সেক্রেটারী হাফেজ মাওলানা জহিরুল ইসলাম, ঢাকা মহনগর দক্ষিণ নেতা হাফেজ মাওলানা নাযির আহম শিবলী, ঢাকা জেলা উত্তর সভাপতি হাজী ফারুক খান, সেক্রেটারী মুহাম্মদ জাসমত আলী, ডা. কামরুজ্জামান, শাহীন আহমদ, মাওলানা ইলিয়াস হোসাইন, মাওলানা বিল্লাল হোসাইন, হাফেজ মিরাজ হোসনে মুঈন, হাফেজ মিজানুর রহমান প্রমুখ।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, সিলেবাস থেকে ধর্মীয় শিক্ষা বাদ দিয়ে সরকার দেশে নতুন করে সঙ্কট সৃষ্টি করছে। দেশ, ইসলাম, স্বাধীনতাবিরোধী একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার সঙ্কটকে ঘুনিভূত করেছে। ইসলামবিরোধী ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। করোনার দোহাই দিয়ে পাবলিক পরীক্ষায় ইসলামী শিক্ষার পরীক্ষা নেয়া হয়নি। কিন্তু ২০২৩ সালেও সিলেবাসে রাখা হয়ছে ইসলামী শিক্ষা কিন্তু পরীক্ষা হবে না। পরীক্ষা না হলে কোন সাবজেক্ট শিক্ষার্থীরা পরতে চায় না। যদি ইসলামী শিক্ষা পরীক্ষা না হয় তাহলে ধর্মীয় শিক্ষকেরও প্রয়োজন হবে না। ফলে এ বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজন হবে না। বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলে জনগণের কাছে কোন দায়বদ্ধতাও নেই। সরকারের হাতে অর্থনীতি, ধর্মীয় শিক্ষা, তাহজীব-তামাদ্দুন, ভোটাধিকার ও দেশের স্বাধীনতা কোন কিছুই নিরাপদ নয়।
সমাবেশশেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে প্রেসক্লাব, পল্টন মোড় এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন। সেখান থেকে ঢাকা জেলা সভাপতি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসাইনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন জেলা প্রশাসকের নিকট প্রদানকৃত স্মারকলিপিতে ১০ দফা দাবি জানানো হয়।
দাবিগুলো হলো : ১. শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়নে, অভিজ্ঞ, দ্বীনদার আলেমদেরকে সম্পৃক্ত করা। ২.শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ও সকল পরীক্ষায় আবশ্যিক করা। ৩.ডারউইনের অপ্রমাণিত, ভ্রান্ত ও বিতর্কিত বিবর্তনবাদ শিক্ষার সকল স্তর থেকে বাদ দেওয়া। ৪.পাঠ্য পুস্তকের সকল বিষয় হতে অনৈসলামিক ও ইসলামী বিশ্বাস বিরোধী বিষয় ও শব্দসমূহ বাদ দেওয়া। ৫.ইসলাম ধর্ম শিক্ষার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ‘কুরআনুল কারীম’ শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করা। ৬.মাদ্রাসা শিক্ষার কারিকুলাম, শিক্ষানীতিমালা-২০১০ অনুযায়ী মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট আলেম, দ্বীনদার শিক্ষকদের দ্বারা পূনর্মাজন করা। ৭.নৈতিকতা সমৃদ্ধ জনশক্তি তৈরির লক্ষে সকল ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের জন্য নিজ নিজ ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা করা। ৮.বাংলা, ইংরেজি, সমাজবিজ্ঞান ও ইতিহাস বই হতে বিতর্কিত ও ইসলামী আকিদা বিরোধী প্রবন্ধসমুহ বাদ দেওয়া। ৯. স্কুল ও মাদরাসার সকল পাঠ্যপুস্তক অপ্রয়োজনীয় এবং অশ্লীল চিত্রমুক্ত রাখা। ১০. যেহেতু এদেশের সাধারণ জনগণই এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যয়ভারের সিংহভাগ বহন করেন, সেহেতু জোর করে চাপিয়ে দেয়া শিক্ষা ব্যবস্থা নয় বরং এদেশবাসীর ধর্মীয় চেতনার অনুকুল শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা।