রহমত নিউজ ডেস্ক 24 November, 2022 09:18 PM
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, যেকোনো ধর্ম অবমাননা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সব মানুষের ধর্ম ও নিরাপত্তার অধিকার সমান। আইনের বিচারে সব ধর্মই সমান মর্যাদা সম্পন্ন। ধর্ম মানুষের দৈনন্দিন জীবনে পথ দেখাতে সাহায্য করে এবং আধ্যাতিকতার পরিপূর্ণতা দান করে। বাংলাদেশের সংবিধানে উল্লেখ আছে, এ দেশের সব মানুষের ধর্ম ও নিরাপত্তার অধিকার সমান।অজ্ঞতা বিপদজনক, ধর্মের জন্য সব থেকে বিপজ্জনক হলো অজ্ঞতা। এ অজ্ঞতাই মানুষের সঙ্গে মানুষের বিভেদ তৈরি করে।
আজ (২৪ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতি ভবনে আয়োজিত বিজয়া পুনর্মিলনী-২০২২ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকিরের সভাপতিত্বে ও অ্যাডভোকেট দীপায়ন চন্দ্র সাহার সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউর রহমান, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুন নুর দুলাল, অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী পূর্নাত্ননন্দজী মহারাজ, অ্যাডভেোকট বিশ্বজিৎ রায় ও অ্যাডভোকেট দীপায়ন টন্দ্র সাহা।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, প্রত্যেক ধর্মের মানুষ যদি নিজ নিজ ধর্মের ধর্মগ্রন্থ সঠিকভাবে খোলা মন নিয়ে পাঠ করে সে সঙ্গে ধর্মীয় বিধানগুলো পূর্ণ হ্নদয়াঙ্গম করে, তাহলে অজ্ঞতার অন্ধকার কেটে যাবে। পাশাপাশি ধর্মীয় বাণী ও ধর্মের উন্মেষ জাগ্রত থাকবে। ধর্ম যার যার কিন্তু বাংলাদেশ আমাদের সবার। রাষ্ট্র সবার না হলে নাগরিকরা রাষ্ট্রের সঙ্গে একাত্বতা অনুভব করতে পারবে না। ফলে রাষ্ট্র নাগরিকদের থেকে আনুগত্য আশা করতে পারবে না। আমাদের সংস্কৃতি সব ধর্মকে ও মানুষকে এক সারিতে আনতে পেরেছে বলে সব ভেদাভেদ ভুলে ভাষার জন্য আন্দোলন করে আমরা জয়ী হয়েছি। মহান মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের সবার অহংকার। এ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে জীবন বিসর্জন দিয়েছেন মুসলিম, হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষ।
তিনি আরো বলেন, দেশের মানুষকে নিয়ে সংখ্যাগরিস্ট বা লগিস্ট যারা বলে তারা সংবিধানের স্প্রিটের বিরুদ্ধে বলে। ৭১কে তারা কি ভাবে দেখেন আমার জানা নাই। ১৯৩২ সালের ৬ নভেম্বর সিরাজগঞ্জ বঙ্গীয় মুসলীম সম্মেলনে জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন, আমার ধর্ম যেন অন্য ধর্মকে আঘাত না করে। অন্যের মর্ম বেদনার কারণ না হয়। তিনি আরও বলেছিলেন, ইসলামের মূলনীতি সহনশীলতা, ভিন্ন ধর্মকে আঘাত করা ইসলামের দৃষ্টিতে বড় নিন্দনীয়। যুব সমাজের উদ্দেশ্য তিনি বলেছিলেন মানুষ হয়ে মানুষের সম্মান যদি দিতে না পারেন তা হলে কোথায় আপনি মুসলমান। পৃথিবীর মানুষ ভিন্ন ভিন্ন ধর্মে বিশ্বাসী হলেও তাদের সাম্য, মৈত্রী, শান্তি, মানবতা ভালোবাসা উদারতা ও সহযোগিতার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে এক সঙ্গে বাঁচতে হবে। তাই সব বিভেদ ভুলে একসঙ্গে এ দেশে আমাদের বসবাস করতে হবে। সব সংকীর্ণতার ঊর্ধে উঠে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।