রহমত নিউজ ডেস্ক 16 November, 2022 07:12 AM
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, আগামী দিনের বিচারব্যবস্থায় তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য একটাই, সেটি হলো স্বল্প সময়ে, স্বল্প খরচে বিচারপ্রার্থী জনগণের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। সে লক্ষ্যে বিচারব্যবস্থাকে একটি তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে আমাদের সবাইকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বিকালে সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক উদ্ভাবিত ছয়টি প্রযুক্তির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সম্পাদক আব্দুন নূর ও সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ছয়টি প্রযুক্তি হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্ট মোবাইল অ্যাপ, আপিল বিভাগের অনুলিপি বিভাগ ম্যানেজমেন্ট, অনলাইনে অধস্তন আদালতের রায় ও আদেশ প্রকাশ, মনিটরিং কমিটির অনলাইন রিপোর্টিং টুলস, আপিল বিভাগে প্রবেশ পাস এবং শিশু আদালতের বিবরণী প্রেরণ প্ল্যাটফর্ম। অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি তাঁর দায়িত্ব গ্রহণের পর অধস্তন আদালত মনিটরিংয়ের জন্য কমিটি গঠন, কমিটির কার্যক্রম, বিভাগভিত্তিক অধস্তন আদালতে মামলা দায়ের ও নিষ্পত্তি, অবকাশকালে হাইকোর্ট বিভাগে ডেথ রেফারেন্স মামলা নিষ্পত্তির পরিসংখ্যান, অধস্তন আদালতের বিচারকদের প্রশিক্ষণ ও ল্যাপটপ বিতরণ, বিচারপ্রার্থীদের বসার জন্য ‘ন্যায়কুঞ্জ’ নির্মাণ, নকল স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি শনাক্তে ডিভাইস সরবরাহ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শিশুসন্তানদের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ ও কার্যক্রম তুলে ধরেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আগামী ডিসেম্বর মাসে মহান সংবিধান প্রবর্তিত হওয়ার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন হতে যাচ্ছে; বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সুবর্ণজয়ন্তীর বর্ণিল আয়োজনও ডিসেম্বরে। এই মাহেন্দ্রক্ষণে যুগোপযোগী ও গতিশীল একটি বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় এখনই সংকল্পবদ্ধ হতে হবে। সেই দাবি পূরণে আজকের সূচিত কার্যক্রম বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে নিয়ে যাবে নতুন এক মাইলফলকে। উন্মুক্ত হওয়া সফটওয়্যার, অ্যাপস ও ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনগুলো প্রতিটি স্বতন্ত্র উপযোগিতায় সমৃদ্ধ। যে কাজগুলোর জন্য আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পরিশ্রম করতে হতো, সেগুলো কয়েকটি ক্লিকে নিমেষেই সম্পাদিত হবে।
তিনি আরো বলেন, আদালতে যেকোনো ধরনের জাল-জালিয়াতি রোধে সুপ্রিম কোর্ট থেকে সারা দেশের অধস্তন আদালতে এ বছরের আগস্ট মাসে নকল স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি শনাক্তকরণে ১ হাজার ২০০টি ডিভাইস সরবরাহ করা হয়েছে এবং সেগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। গত জুলাই মাসে স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফির চাহিদা ছিল ১১ কোটি টাকা। আগস্ট মাসে এই চাহিদা হয়েছে ১৬ কোটি টাকা। এই ডিভাইস দিয়ে দ্রুততার সঙ্গে নকল স্ট্যাম্প শনাক্ত করার ফলে সরকারের রাজস্ব খাতে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব বর্তমানে যোগ হচ্ছে।