| |
               

মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে : আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী


সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে : আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী


রহমত নিউজ     10 November, 2022     06:19 PM    


বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন প্রধান আমীরে শরীয়ত আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেছেন, সকল ইসলামীদলসহ তাওহিদী জনতা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্য পুস্তক বোর্ড থেকে ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিকদের তাড়াতে সরকারকে বাধ্য করবে। অবিলম্বে পাঠ্য পুস্তক থেকে ইসলাম বিদ্বেষী লেখা বাদ দিয়ে স্কুল, কলেজসহ শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।

আজ (১০ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর জামিয়া নূরিয়া ইসলামিয়ার শিক্ষকদের এক জরুরী বৈঠকে সভাপতির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জামিয়া নূরিয়া ইসলামিয়ার শায়খুল হাদীস ও দলের নায়েবে আমীর মওলানা হাজী ফারুক আহমাদ, দলের মহাসচিব ও জামিয়ার শিক্ষা সচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, মুফতি মুজিবুর রহমান, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা সাজেদুর রহমান ফয়েজী, মাওলানা ইলিয়াস মাদারীপুরী, মাওলানা সুলতান মহিউদ্দিন, মাওলানা সানাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী, মুফতী আ ফ ম আকরাম হোসাইন, মাওলানা মাহবুবুল হক, মুফতি মুফিজুর রহমান, মুফতি খলিলুর রহমান, মাওলানা তাসলীমুল হাসান, মুফতী আবুল হাসান কাসেমী, মাওলানা জসিমউদ্দীন, মাওলানা রুহুল আমিন, মুফতি মুয়াজ্জম হুসাইন, মুফতি মাহবুবুল হক, হাফেজ আবুল কাসেম, মাওলানা আবদুল কুদ্দুছ, আতিকুর রহমান ও মাস্টার শরীফ হুসাইন প্রমুখ।

মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেন, ৯২ শতাংশ মুসলমানদের বাংলাদেশে ইসলামী শিক্ষা সাংস্কৃতি বিনষ্ট করতে ভিনদেশী আগ্রাসন চলছে। জাতির মেরুদন্ড শিক্ষা ব্যবস্থায় এ দেশের মানুষের ঈমান-আক্বিদা, কৃষ্টি -কালচার, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও ধর্মীয় চেতনা জড়িত। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কতিপয় নাস্তিক ও ব্রাহ্মণবাদী দালালচক্র শিক্ষা-সাংস্কৃতিতে সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলিমদের চিন্তা চেতনা বাদ দিয়ে বিজাতীয় অপসাংস্কৃতি ঢুকিয়ে সুকৌশলে মুসলিম শিক্ষার্থীদেরকে নাস্তিক ও পৌত্তলিক বানানোর পায়তারা করছে। আগামী ২০২৩ সালের প্রাথমিক,উচ্চ মাধ্যমিক ও মাদরাসা শিক্ষার পাঠ্য সূচীতে প্রণয়াধীন প্রত্যাখ্যাত ডারউইনের বিবর্তনবাদসহ ইসলাম বিদ্বেষী কারিকুলাম অন্তর্ভুক্তি করার নীল নকশা বাস্তবায়নের অপচেষ্টা চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যেই বোর্ড পরীক্ষায় ইসলামি শিক্ষা বাদ দেয়া হয়েছে। দেশের তাওহিদী জনতা জীবন দিয়ে হলেও ইসলামী শিক্ষা সাংস্কৃতি ধ্বংসের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিবে। অবিলম্বে বোর্ড পরীক্ষায় ইসলাম শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বিগত দেড় দশকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পাঠ্যকারিকুলামে যে কাট- ছাট করা হয়েছে তা খুবই ভয়ংকর। ‘নিজেকে জানুন’ শীর্ষক যৌনশিক্ষার বইয়ের মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চরিত্র ধ্বংস করা হচ্ছে । তাছাড়া শিক্ষা কারিকুলামে হিন্দু, খৃষ্টানদের নামের ছড়াছড়ি, মুসলিম সংস্কৃতি পরিপন্থী নাচ, গান, মূর্তি, কুকুরের ছবি ছাপিয়ে ইসলামের প্রতি অশ্রদ্ধা ও দেব- দেবীর প্রতি আকৃষ্ট করে ব্রাহ্মণ্যবাদ প্রতিষ্ঠার অপপ্রয়াস চালানো হচ্ছে। যেমন দ্বিতীয় শ্রেণীর বাংলা বই থেকে বাদ দেয়া হয়েছে ‘সবাই মিলে করি কাজ’ শিরোনামে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত। তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা বই থেকে বাদ দেয়া হয়েছে খলিফা হযরত আবু বকর শিরোনামে একটি সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত। চতুর্থ শ্রেণীতে বাদ দেয়া হয়েছে খলিফা হযরত ওমরের সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত। পঞ্চম শ্রেণী থেকে ‘বিদায় হজ্জ’ নামক হযরত মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবন চরিত বাদ দেয়া হয়েছে। একই শ্রেণীর বই থেকে বাদ দেয়া হয়েছে বাদশা আলমগীরের মহত্ব বর্ণনা সম্বলিত কাদের নেওয়াজের ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ শীর্ষক কবিতা। তাছাড়া আরো বাদ দেয়া হয়েছে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘটনা সম্বলিত ‘শহীদ তিতুমীরের জীবন চরিত’। ষষ্ঠ শ্রেণীতে বাদ দেয়া হয়েছে ডক্টর মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ লিখিত ‘সততার পুরস্কার’ নামে শিক্ষামূলক ঘটনা। একই শ্রেণীর পাঠ্য বই থেকে বাদ দেয়া হয়েছে "নীলনদ আর পিরামিডের দেশ" নামক ভ্রমণ কাহিনী। বাদ দেয়া হয়েছে মহা কবি কায়কোবাদের ‘প্রার্থনা’ কবিতা। সপ্তম শ্রেণীতে বাদ দেয়া হয়েছে" মরু ভাস্কর" নামক হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি'র জীবনী। অষ্টম শ্রেণীতে বাদ দেয়া হয়েছে বাবরের মহত্ব এবং সুফিয়া কামালের "প্রার্থনা" কবিতা। নবম -দশম শ্রেণীতে বাদ দেয়া হয় কবি মুহাম্মদ সগীরের লেখা "বন্ধনা" কবিতা ও কবি আউয়ালের "হামদ "কবিতা। একই শ্রেণীর পাঠ্য থেকে বাদ দেয়া হয় কবি আব্দুল হামিদের "বঙ্গবাণী" কবিতা। তাছাড়া "জীবন বিনিময়" কবিতাসহ কবি নজরুলের "উমর ফারুক" কবিতাটিও বাদ দেয়া হয়েছে। পাঠ্য বই থেকে পর্যায়ক্রমে উপরে উল্লেখিত লেখা বাদ দিয়ে বিতর্কিত কবি সাহিত্যিকদের নিম্নোক্ত ব্রাহ্মণ্যবাদের তত্ত্ব সম্বলিত বিষয়বস্তু প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। ৫ম শ্রণীতে হুমায়ুন আজাদের কুরআন বিরোধী " বই " কবিতা। ষষ্ট শ্রেণীতে যুক্ত করা হয়েছে দেবী দূর্গার প্রশংসা সম্বলিত "বাংলাদেশের হৃদয় "কবিতা। তাছাড়া হিন্দুত্ববাদ সম্বলিত" লাল গরুটা" ও রাঁচির ভ্রমন কাহিনি। ৭ম শ্রণীতে "লালু" নামক গল্পের মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে পাঠাবলীর নিয়ম- কানূন। অষ্টম শ্রেণীতে পড়ানো হচ্ছে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ রামায়ণ'র সংক্ষিপ্ত রূপ।নবম- দশম শ্রেণীর বইয়ে যুক্ত করা হয়েছে মঙ্গল কাব্যের অন্তর্ভুক্ত দেবির প্রশংসা ও তার কাছে প্রার্থনা মূলক "আমার সন্তান" কবিতা। তাছাড়া শিখানো হচ্ছে ভারতের "পালমৌ ভ্রমণ" কাহিনি। লালন ফকিরের "সময় গেলে সাধন হবে না" শীর্ষক লেখায় বাউলদের বিকৃত যৌনাচার শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। "সাকোটা দুলছে" কবিতায় ৪৭ এর স্বাধীনতাকে হেয় করে ভারত বাংলাদেশের দুই বাংলাকে একাকার করায় উৎসাহিত করা হয়েছে। ৯০ ভাগ মুসলমানের বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের ষড়যন্ত্র মেনে নেয়া যায় না।