রহমত নিউজ 08 November, 2022 10:15 PM
বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক বলেন, জিয়াউর রহমানকে ঠান্ডা মাথার খুনি বলে রায় দিয়েছিলাম। সে রায়টি সারাজীবন বেঁচে থাকবে। এ কারণেই জিয়াউর রহমানের অনুসারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ওপর আক্রমণ করেছে। জিয়ায় কবর পবিত্র সংসদের চত্বরে থাকতে পারবে না। জিয়া যে দলটির প্রতিষ্ঠা করেছেন, সেই দলের বাংলাদেশের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নাই। মুক্তিযোদ্ধা চেতনার বিষয়ে জামায়াত এবং বিএনপির চেতনার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। জামায়াত যেমন মুক্তিযুদ্ধে চেতনার বিরুদ্ধে, তেমনি বিএনপিও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে।
আজ (৮ নভেম্বর) মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যান সড়কে ‘মায়ের কান্না’ নামের একটি সংগঠন আয়োজিত জিয়াউর রহমানের কবর জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা থেকে অপসরণের দাবিতে আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ বীরবিক্রম, মাহাবুব উদ্দীন আহমদ বীরবিক্রম, শহীদ কর্নেল নাজমুল হুদার মেয়ে নাহিদ এজাহার খান, শহীদ মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীরউত্তমের মেয়ে মাহজাবিন খালেদ, মায়ের কান্নার আহ্বায়ক মো. কামরুজ্জামান মিঞা লেলিন এবং ১৯৭৭ সালে গণ-ফাঁসির শিকার সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের সন্তানরা।
মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার বজলুল হক বলেছেন, জিয়াউর রহমানের কবর সংসদ ভবন এলাকায় থাকলে মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মা শান্তি পাবে না। আমরা যারা বেঁচে আছি, আমাদের কষ্ট হয় এখান দিয়ে গাড়ি নিয়ে যেতে। আমি আশা করব, এই মায়ের কান্না বঙ্গবন্ধুকন্যা শুনতে পাবেন।
মানববন্ধন থেকে ৭টি দাবি জানায় মায়ের কান্না সংগঠন। দাবিগুলো হচ্ছে— ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্য যারা খুনি জিয়ার সামরিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে অন্যায়ভাবে ফাঁসি, কারাদণ্ড ও চাকরিচ্যুত হয়েছেন তাদের নির্দোষ ঘোষণা করা; ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর যারা খুনি জিয়ার সামরিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ফাঁসি-কারাদণ্ড ও চাকরিচ্যুত হয়েছেন তাদের প্রত্যেককে স্ব-স্ব পদে সর্বোচ্চ র্যাংকে পদোন্নতি দেখিয়ে বর্তমান স্কেলে বেতন-ভাতা ও পেনশনসহ সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা; ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর খুনি জিয়ার সামরিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধা, সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের অন্যায়ভাবে ফাঁসি হয়েছে তাদের শহীদ হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা করা এবং কবরস্থান চিহ্নিত করে কবরস্থানে নামসহ স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা। এছাড়া ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর যারা খুনি জিয়ার সামরিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন সেই সব সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের পুনর্বাসিত করার লক্ষ্যে তাদের পোষ্যদের যোগ্যতা অনুসারে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া; ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর খুনি জিয়ার সামরিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্য যারা অন্যায়ভাবে ফাঁসি-কারাদণ্ড ও চাকরিচ্যুত হয়েছেন তাদের তালিকা প্রকাশ করা; অন্যায়ভাবে ফাঁসি, কারাদণ্ড ও চাকরিচ্যুত করার অপরাধে জিয়ার মরণোত্তর বিচার করা এবং তার কবর জাতীয় সংসদ এলাকা থেকে অপসারণ করা।