রহমত নিউজ 15 October, 2022 12:38 PM
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন প্রধান আমীরে শরীয়ত আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেছেন, জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় খেলাফত পদ্ধতির সরকার তথা কোরআন সুন্নাহ'র শাসনের বিকল্প নেই। ইসলাম ছাড়া অন্য কোন তন্ত্রে মন্ত্রে দুনিয়ার কোথাও শান্তি প্রতিষ্ঠার নজির নেই। ইসলামের পঞ্চম খলিফা আমীরুল মু' মিনীন হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ রাদিয়াল্লাহু আনহুমার শাসনামলে বাঘ ও বকরি এক ঘাটে পানি পান করেছে, বাঘ বকরির উপর আক্রমণ করেনি। এ ইতিহাস শুধুমাত্র ইনসাফের শাসনের কারণেই সম্ভব হয়েছে। এখনো যদি আল্লাহ প্রদত্ব বিধান ইসলাম অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালিত হয় তাহলে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে,ইনশাআল্লাহ। আর এ লক্ষ্যে ওলামায়ে কেরামকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
আজ (১৫ অক্টোবর) শনিবার দুপুরে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরস্থ জামিয়া নূরিয়া ইসলামিয়ায় ঢাকা-২ আসনের ওলামায়ে কেরামদের নিয়ে আয়োজিত উলামা সম্মেলন সভাপতির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী সুলতান মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী। বক্তব্য রাখেন মাওলানা ইসমাইল বরিশালী, মাওলানা শেখ আজিমউদ্দিন, মাওলানা সাইদুর রহমান, মুফতী ইলিয়াস মাদারীপুরী, মাওলানা আব্দুল হালিম,মাওলানা সাজেদুর রহমান ফয়েজী, মাওলানা ইউসুফ সাদেক হক্কানী,মাওলানা আলী আজম প্রমুখ।
আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেন, জন সাধারণকে ইসলামের হুকুমতের প্রয়োজনীয়তা ও সুফল সম্পর্কে বুঝানোর দায়িত্ব উলামায়ে কেরামের। সর্বজন স্বীকৃত বুযুর্গ হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহমতুল্লাহি হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহমতুল্লাহি আলাইহি উলামায়ে কেরামের ক্বিয়াদত প্রতিষ্ঠা করার জন্যই আজীবন চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। আল্লাহর যমিনে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার জন্য দেশ বিদেশের মুসলিম শাসকদেরকে দাওয়াত দিয়েছিলেন। হাফেজ্জী হুজুর রহ প্রচলিত জুলুমের রাজনীতিকে পছন্দ করতেন না। তাঁর দর্শন ছিল মদিনার দর্শন। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে মাঠে ময়দানে ইসলামের কথা বলার যখন কোন পরিবেশ ছিল না তখন আল্লাহর উপর ভরসা করে তৌবার আহবান নিয়ে ময়দানে অবতীর্ণ হয়ে জেহাদের অংশ হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন তিনি । হাফেজ্জী হুজুর রহ বলতেন যেমন গুনাহ তেমন তৌবাহ। এতদিন জালেমদেরকে ভোট দিয়ে মানব রচিত আইন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, এখন ইসলামের পক্ষে ভোট দিয়ে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর বিধান খেলাফত পদ্ধতির সরকার কায়েম করতে হবে। এটাই ভোটের তৌবাহ। ভোট মানে সমর্থন বা স্বাক্ষী দেয়া,এটি একটি আমানত,তাগুতী শক্তিকে ভোট দেয়া আমনতের খেয়ানত ও সৃষ্টি ও স্রষ্টার সাথে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল । নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় গিয়ে যত অন্যায় করবে এর অংশ ভোটারও পাবে।
তিনি আরো বলেন, হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ এর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন বাংলাদেশের প্রাচীনতম ইসলামী দল। তিনি বলতেন খেলাফত আন্দোলন প্রচলিত কোন রাজনৈতিক দল নয়, এটা একটি আন্দোলন। যেমন স্বাধীনতা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন। যে কোন ধর্মের শান্তিকামী মানুষ এ আন্দোলনে শরিক হতে পারে। খেলাফত প্রতিষ্ঠা হলে রাষ্ট্র পরিচালনায় পৃথিবীর একমাত্র লিখিত সংবিধান মদিনার সনদ অনুসরণ করা হবে। দলমত নির্বিশেষে সকল দেশ প্র প্রেমিক যোগ্য লোকদের সমন্বয়ে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে।যেখানে সব ধর্মের মানুষের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত হবে। হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহমাতুল্লাহি আলাইহির প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সকল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আসছে। ইনশাআল্লাহ আগামী নির্বাচনেও ভাবেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। খেলাফত আন্দোলন বটগাছ প্রতীকে সারাদেশেই প্রার্থী দেয়ার চেষ্টা করছে। হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ এর নীতি আদর্শ মেনে কোন সমমনা দল খেলাফত আন্দোলনের সাথে জোট করতে চাইলে আমরা ভেবে দেখবো অন্যাথায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এককভাবেই অংশ নিবে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন। এখনো পর্যন্ত জোটে যাওয়ার কোন সিদ্ধান্ত হয় নাই। আমি ঢাকা-২ আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব ইনশাআল্লাহ। বটগাছ প্রতীকে ভোটার সংগ্রহ করার ব্যাপারে আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি। দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশের জনগন তাদের নাগরিক অধিকার ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। সকল দলের অংশ গ্রহনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব। ভোটাররা স্বাধীন ভাবে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারলে ৯০ ভাগ মুসলমানের বাংলাদেশে ইসলামেরই বিজয় হবে, ইনশাআল্লাহ