ওসমান হারুনী, জামালপুর প্রতিনিধি 13 September, 2022 08:06 PM
জামালপুরের ইসলামপুর গোয়ালেরচর ইনিয়নের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের রশিদ দাখিলা বা খাজনা ও খারিজ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ ও অনুসন্ধানে জানা যায়, ইসলামপুর গোয়ালেরচর ইনিয়নের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম ভূমি অফিসের সরকারি নিয়ম নীতির কোন তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছামতো ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা ব্যাক্তিদের নিকট হতে মনগড়াভাবে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে রশিদের মধ্যে কম টাকা তুলে অতিরিক্ত টাকায় নিজের পকেট ভারী করে খাজনা ও খারিজ বাণিজ্য করছেন। কেউ তার কথা মতো টাকা না দিতে রাজি হলে সেবা গ্রহিতাদের হয়রানি করতে দিনের পর দিন ঘুরিয়ে থাকেন।
জমির দখল স্বত্বের প্রমান পত্র খাজনা রশিদ দাখিলা ছাড়া কোন জমি ক্রয় বিক্রয় হয়না। এছাড়াও জমির মালিকা পরিবর্তন বা হস্তান্তর হলে হলে খারিজ করতে আসা ব্যাক্তিদের বাধ্য হয়েই পরে নায়েবের ফাঁদে পড়ে তার ইচ্ছামতো টাকা দিয়ে দাখিলা ও জমির খারিজ করে নিতে হচ্ছে।
গত ১২ সেপ্টেম্বর এমন অভিযোগে ভূমি অফিসটিতে সরেজমিনে দুপুরে অবস্থানকালে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়, গোয়ালেরচর ইউনিয়নের মহলগিরি থেকে ৩০শতাংশ জমির দাখিলা নিতে আসা এক ব্যাক্তির সাথে ৩হাজার টাকা দরদাম করছে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম ও ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার রিয়াজুর রহমান। এমন সময় ৩০শতাংশ জমির খাজনা কত হয় জানতে চাইলে সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা জরুরী কাজ আছে বলে দ্রুত অফিস ত্যাগ করেন। এ সময় বাহিরে দাখিলা নিতে আসা রশিজল জানান, সে গত তিন দিন ধরে ভূমি অফিসে আসা-যাওয়া করে নজরুল নামে একজনকে ৮শত টাকা দিয়ে ১০শতাংশ জমির দাখিলা এখনো পায়নি।
গোয়ালেরচর ইউনিয়নের মহল গিরি গ্রামের নাজমুল হকের অভিযোগ, তিনি ওই অফিসে দাখিলা নিতে গেলে তার ১০শতাংশ জমির খাজনা ১০টাকা, যার রশিদ নং-১৫৭৪০৭, ৩২শতাংশ জমির খাজনা ১০টাকা,যার রশিদ নং-১৫৭৪০৭,ও ৪৭ শতাংশ জমির খাজনার ১৫৭৪৩৬ নং রশিদে ১১৭০টাকা তুলে ওই ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম তার কাছে মোট সাড়ে ৪হাজার টাকা নিয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বর্তমানে প্রচলিত ভূমি উন্নয়ন কর না নিয়ে তিনি একই ভাবে সবার কাছে ওই ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগদান করার পর হতে ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা ব্যাক্তিদের নিকট হতে মনগড়াভাবে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে দাখিলা ও মিউটেশন বা খারিজ কাটা জমজমাট বাণিজ্য করছেন বিষয়টি দেখার কেউ নেই।
এব্যাপারে অভিযুক্ত গোয়ালেচরচর ইনিয়নের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের সাথে কথা বলতে চাইলে সে পরে কথা বলবেন বলে পাশ কাটিয়ে যান।
এব্যাপারে ইসলামপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি কর্মকর্তার সাথে মুঠো ফোনে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
ভোক্তভোগী এলাকাবাসী দূর্নীতি দমন কমিশনসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার ভূমি কর্মকর্তার নিকট অভিযোক্ত গোয়ালেরচর ইনিয়নের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে অনিয়ম দূর্নীতির সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন।