রহমত ডেস্ক 31 August, 2022 10:46 PM
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সংসদে বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিরূপ প্রভাবের কারণে দেশের আর্থিক ভারসাম্য-বিওপি হ্রাস পেতে পারে। কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব অর্থনীতির দুর্বল প্রবৃদ্ধি, সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত, বৈশ্বিক বাজারে জ্বালানি তেল, গ্যাস, খাদ্যপণ্য, ভোগ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল এবং আন্তর্জাতিক মালামাল পরিবহন খরচ বৃদ্ধি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স হ্রাস পাওয়ায় বিওপিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সরকার গত ১৪ বছরে বাজেট ঘাটতি এবং ঋণ স্তর উভয়ই টেকসই ও সহনীয় পর্যায়ে রাখতে অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সমস্যা সত্ত্বেও বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশের মধ্যে রাখা সম্ভব হয়েছে। ঋণ এবং জিডিপি অনুপাতও একটি স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে রয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের শেষে ঋণ ও জিডিপির অনুপাত ছিল ৩৪ শতাংশ, যা বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ঋণের মর্যাদা স্তরের চেয়ে অনেক নিচে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
আজ (৩১ আগস্ট) বুধবার বিকালে একাদশ জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মশিউর রহমান রাঙ্গার এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা থেকে নির্বাচিত জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশের উৎপাদন সক্ষমতা বিবেচনায় দেশে বিদ্যুৎ সংকট নেই। তবে, চলমান বৈশ্বিক জ্বালানি তেল সংকটের কারণে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সংযম বজায় রাখার মাধ্যমে এবং জ্বালানি তেল সংরক্ষণে পরিকল্পিত লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে সঙ্কট থেকে পরিত্রাণের প্রচেষ্টা চলছে। কিছু ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও জ্বালানি তেল সাশ্রয়ের জন্য সরকার ১০০০-২০০০ মেগাওয়াটের মধ্যে লোডশেডিং আরোপ করেছে। চলমান বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় সরকার লোডশেডিং সীমিত পরিসরে ধরে রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। নতুন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা গেলে এবং বিদ্যুৎ ব্যবহারে সংযম নিশ্চিত করা গেলে চলমান অস্থায়ী লোডশেডিং থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে।
নাটোর থেকে নির্বাচিত ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য এম শহীদুল ইসলাম বকুলের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে দেশে মোট ৭.০১ মেট্রিক টন পরিশোধিত ও অপরিশোধিত তেল রয়েছে যা ৩০ থেকে ৩৫ দিনের চাহিদা মেটাতে পারে। এই সময়ের মধ্যে জ্বালানি তেল বহনকারী দুটি জাহাজ দেশে পৌঁছবে যার অর্থ জ্বালানি তেলের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ অব্যাহত থাকবে। দেশের চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আগামী ছয় মাসের (জুলাই-ডিসেম্বর) জ্বালানি তেল আমদানির সময়সূচি নিশ্চিত করা হয়েছে।
বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে জাতিসংঘের অধীনে ৮টি শান্তিরক্ষা মিশনে মোট ৬ হাজার ৮৩৬ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছে, যার মধ্যে ৫২১ জন নারী। মিশনে দায়িত্ব পালনের সময় এ পর্যন্ত মোট ১৬১ জন শান্তিরক্ষী নিহত এবং ২৫৮ জন আহত হয়েছেন।