| |
               

মূল পাতা জাতীয় ‘পোল্ট্রির বৃহৎ কোম্পানিগুলো ক্ষুদ্র খামারিদের ৫২০ কোটি টাকা লুটে নিয়েছে’


‘পোল্ট্রির বৃহৎ কোম্পানিগুলো ক্ষুদ্র খামারিদের ৫২০ কোটি টাকা লুটে নিয়েছে’


রহমত ডেস্ক     20 August, 2022     02:48 PM    


১৫ দিনে দেশে মুরগির বাচ্চা, ডিম ও মুরগির দাম বাড়িয়ে ভোক্তা ও ক্ষুদ্র খামারিদের কাছ থেকে পোল্ট্রি খাতের বৃহৎ কোম্পানিগুলো ৫২০ কোটি টাকা লুটে নিয়েছে। কোম্পানিগুলো গত ১৫ দিনে ডিমের দাম বাড়িয়ে বাড়তি মুনাফা করেছে ১১২ কোটি টাকা। পাশাপাশি মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে লুটে নিয়েছে ২৩৪ কোটি টাকা, ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়িয়ে লুটে নিয়েছে ১৭২ কোটি টাকা। এ সিন্ডিকেটে জড়িত রয়েছে পোল্ট্রি খাতের ১০ থেকে ১২টি দেশি-বিদেশি কোম্পানি।

আজ (২০ আগষ্ট) শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ক্ষুদ্র খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তাঁরা। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস খন্দকার, সহ-সভাপতি বাপ্পি কুমার দেবসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, ‘দেশে পোল্ট্রি খাতটি এখন মাফিয়া চক্রের হাতে চলে গেছে। কাজী ফার্মস, প্যারাগন, সিপি, নারিশ, ৭১, আফিল, সাগুনাসহ ১০ থেকে ১২টি বড় কোম্পানি যৌথভাবে এ মাফিয়া চক্র তৈরি করেছে। চক্রটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে সারা দেশে প্রান্তিক খামারিদের ধ্বংস করতে চাইছে। এরই মধ্যে তাদের পরিকল্পিত চক্রান্তে সারা দেশে প্রায় অর্ধেক প্রান্তিক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে এক বস্তা ফিড প্রান্তিক খামারিকে কিনতে হলে লাগে তিন হাজার ৩০০ টাকা। কিন্তু, কোনো খামারি তাদের সঙ্গে কন্ট্রাক্ট ফার্মিং করলে ওই বস্তা পাওয়া যায় আড়াই হাজার টাকায়। অর্থাৎ, তারা বস্তাপ্রতি ফিডে লাভ করছে ৮০০ টাকা। তারা প্রতিটি ডিমে লাভ করছে তিন টাকা এবং প্রতিটি ব্রয়লারের বাচ্চা বিক্রি করে লাভ করছে ২০ থেকে ২২ টাকা।

সুমন হাওলাদারের দাবি, দেশে প্রতিদিন ডিমের চাহিদা সাড়ে চার কোটি পিস। এর মধ্যে বড় কোম্পানিগুলোই এ চাহিদার আড়াই কোটি সরবরাহ করে। প্রতি ডিমে তিন টাকা করে বেশি নিয়ে প্রতিদিন সাত কোটিরও বেশি টাকা তারা অবৈধভাবে লাভ করেছে। এভাবে গত ১৫ দিনে বড় কোম্পানিগুলো ডিমের বাজার থেকে ১১২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অন্যদিকে দেশের ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কমিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়। এভাবে প্রতিদিন ১৯ কোটি ৫০ লাখ কেজি মজুত সংকট তৈরি করে এবং পরবর্তী সময়ে তা ছেড়ে প্রতি কেজিতে বাড়তি নেওয়া হয়েছে ১৫ টাকা। এর মাধ্যমে গত ১৫ দিনে তারা ১৭২ কোটি টাকার বেশি ভোক্তার পকেট কেটেছে। এ ছাড়া প্রতিদিন এক কোটি ৩০ লাখ ব্রয়লারের বাচ্চা বিক্রি থেকে গত ১৫ দিনে ২৩৪ কোটি টাকা অবৈধ মুনাফা করেছে তারা।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, মুরগি ও ডিমের দাম আড়তে নির্ধারণ হয় না। সারা দেশে আড়তগুলোয় বড় কোম্পানির লোক থাকে। কোম্পানিরা যে দাম নির্ধারণ করতে বলে, আড়তগুলোতে সে দামই নির্ধারণ হয়ে থাকে। এ প্রক্রিয়া দেশের ভোক্তাদের জন্য শুভ নয়। এতে প্রান্তিক খামারিরা অস্তিত্ব সংকটে পড়বে এবং প্রতিটি ডিম ২০ টাকায় খেতে হবে। আর ব্রয়লার মুরগি খেতে হবে ৪০০ টাকা কেজিতে। বড় কোম্পানিগুলো সেই নীলনকশা ধরেই এগুচ্ছে। তাদের এ চক্রান্তে মদদ দিচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।