রহমত ডেস্ক 18 July, 2022 10:21 PM
বাংলাদেশ জাতীয়াতাবদী দল-বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলা করার জন্য এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং করেনি। এগুলো করেছে— রিজার্ভে টান পড়েছে, তাই তেল-গ্যাস আমদানি করতে পারছে না; কম বিদ্যুৎ খরচ হলে আমদানিও কম লাগবে সে জন্য। সরকার এত ঢোল পেটালো ব্যাংকক, সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে গেছি আমরা, সেই রিজার্ভ এখন কোথায়? হঠাৎ করে নাই হয়ে গেলো কেন? আজকে দেশ অর্থনৈতিক ক্রাইসিসে দাঁড়িয়ে গেছে এবং এটার জন্য আমি পুরোপুরি সরকারকে দায়ী করি।
আজ (১৮ জুলাই) সোমবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে সরকারের দুর্নীতি ও অদূরদর্শী নীতির কারণে বিদ্যুৎ ঘাটতি এবং সেই ঘাটতি মোকাবেলায় উদ্ভট সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সদস্য সচিব শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, শায়রুল কবির খান।
টুকু বলেন, এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং নিয়ে সরকারি এই সিদ্ধান্ত কেন আসলো? আমরা যখন শতভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হয়েছি, তারপরও কেন এই সিদ্ধান্তে আসতে হচ্ছে? আগে লোডশেডিংয়ে মানুষকে পে করতে হয়নি এখন মিউজিয়ামে যাওয়া লোডশেডিংকে ফেরত এনে পে করতে হচ্ছে। লোডশেডিং সত্ত্বেও কেন মানুষকে পেমেন্ট করতে হচ্ছে-সেটিই বড় প্রশ্ন। সরকারের পরিকল্পনায় বলা ছিল ৬৪ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন থাকবে সরকারের হাতে, আর ৩৬ ভাগ থাকবে বেসরকারি হাতে। সরকার তড়িঘড়ি করে বেজ প্লান্টগুলো বেসরকারি সেক্টরে দিয়ে দিল। সবকিছু মিলিয়ে আমি মনে করি, এই পরিকল্পনা খারাপ ছিল, দুরভিসন্ধিমূলক ছিল এবং দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল। যার ফলে আমাদের বিদ্যুতের যে আইন, সেগুলো জলাঞ্জলি দিয়ে সংসদে আইন পাশ করে যাকে ইচ্ছে তাকে পাওয়ার স্টেশন দিয়েছে। শতভাগ বিদ্যুতের দেশ বলে হাতিরঝিলে অনেক ফানুস উড়লো, কিন্তু আজকে এসে আমরা বিদ্যুৎ পাচ্ছি না।
তিনি বলেন, যেটি করার দরকার সেটি তারা করেনি। বিদ্যুৎ উৎপাদন সরকারের হাতে রাখার দরকার ছিল, সরকার যদি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতো তাহলে আজকের পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না। অন্ধকারে থেকে পেমেন্ট করতে হচ্ছে, যেটি অতীতে দিতে হয়নি। দুর্নীতিপুষ্ট প্রকল্পগুলো করে, আনন্দ-ফূর্তি করে সরকার সবাইকে দেখানোর চেষ্টা করছে। এটা সরকারের প্রচারই প্রসার মনে হয়। যার ফলে আজ আমরা দুর্ভোগে পড়েছি। আমাদের সরকারি কোষাগার থেকে টাকা যাবে পাওয়ার স্টেশন মালিকদের কাছে, তারা পাওয়ার স্টেশন না চালিয়ে টাকা নিয়ে যাবে। আর শতভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের জনগণ। এই যে সরকার অনিয়ম করে গেলো, এটা আমাদের দেশ ও জাতিকে অনেকদিন বহন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা বলেছিলাম, কিন্তু আমাদের কথার কোনও পাত্তাই দেওয়া হয়নি। বিদ্যুৎ এমন একটি খাত যা সংরক্ষণ করা যায় না, উৎপাদন করলে খরচ হয়ে যাবে। এই খাতকে জনগণের সেবামূলক খাতে দিতে হবে, আবার বাণিজ্যিকভাবেও চালাতে হবে। না চালালে খরচ উঠবে না। সে কারণে সরকারের হাতে রাখলে যা হয়, সরকার অনেক সাশ্রয় করতে পারে, অনেক জিনিসের দাম-টাম কমিয়ে রাখতে পারে। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ কমার্শিয়ালি চলে গেলো।আমাদের সরকারের পরিকল্পনা ছিল ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন আমরা প্রাইভেটকে দিয়ে দেবো। সরকারের কাজ বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদ্যুতের বিল তোলা না। কিন্তু এর উল্টোটা করেছে, বিদুতের প্লান্ট দিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রাইভেট সেক্টরকে। সরকার সেনসেটিভিটি টেস্ট না করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে, এখন সেই ফল ভোগ করতে হচ্ছে। এটি বড় ধরনের কূটচাল, জনগণের টাকা অন্যের পকেটে দিয়ে দেওয়া বড় ধরনের কূটচাল, যেটি দুর্নীতিগ্রস্ত, ফ্যাসিস্ট সরকারই করে।