রহমত ডেস্ক 02 July, 2022 09:09 PM
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটর মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেছেন, মৌলবাদী মানসিকতা ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের মধ্যে যতটা আছে, দেশের কোনো ইসলামি দলের মধ্যেও আমরা তা দেখি না। এই মৌলবাদী মানসিকতা পরিহার করতে হবে। শুধু মুখ ধর্মনিরপেক্ষতার কথা মুখে বললে হবে না। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও হিন্দু সম্প্রদায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ঘটনার ধারাবাহিকতা প্রমাণ করে এ দেশে হিন্দুদের বসবাস কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে।
আজ (২ জুলাই) শনিবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নড়াইলে কলেজ অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা, সাভারে কলেজ শিক্ষক হত্যা, মিথ্যা অযুহাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হিন্দুদের বিরুদ্ধে মামলা, হামলা, জমি দখল, মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের প্রতিবাদে এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে, বিগত ছয় মাসে হিন্দু নির্যাতনের রিপোর্ট পেশ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন মহাজোটের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি প্রদীপ কুমার পাল, প্রধান সমন্বয়কারী বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্যসহ প্রমুখ।
জোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, পুলিশ প্রশাসের উপস্থিতিতে গলায় জুতার মালা পড়ানোসহ নানাভাবে হেনস্তা, অপমান অপদস্থ শিক্ষকদের মান মর্যাদা ধুলিস্যাৎ করা হচ্ছে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নড়াইল সাভারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিরামহীনভাবে প্রতিনিয়ত একটার পর একটা ঘটনা ঘটেই চলেছে। মৌলবাদী মানসিকতা ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের মধ্যে যতটা আছে, দেশের কোনো ইসলামি দলের মধ্যেও আমরা তা দেখি না। এই মৌলবাদী মানসিকতা পরিহার করতে হবে। শুধু মুখ ধর্মনিরপেক্ষতার কথা মুখে বললে হবে না।
হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি দীনবন্ধু রায় বলেন, নড়াইলের ঘটনা গোটা জাতির জন্য অপমানজনক। প্রতিবারই যখন হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ হয় তখন আশ্বাস দেওয়া হয় কিন্তু বিচার হয় না। এসব নির্যাতনের বিরুদ্ধে এখন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
হিন্দু মহাজোটের অভিযোগ, স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হলেও কোনো সরকারই হিন্দুদের দাবি মেনে নেয়নি। বাজেটে হিন্দুদের বঞ্চিত করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ধর্ম অবমাননার অজুহাতে হিন্দু ছেলেমেয়েদের মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে ঢুকানো হচ্ছে। হিন্দু সম্প্রদায়কে নির্যাতনের বিভিন্ন ঘটনায় ক্ষমতাসীনদের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকে এবং প্রকৃত অপরাধীদের আসামি না করে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হয়। একের পর এক সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও জাতীয় সংসদ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। রাজনৈতিক দলগুলো হিন্দু সম্প্রদায়কে ফুটবলের মতো ব্যবহার করছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে হিন্দু শিক্ষকদের নির্যাতনের প্রসঙ্গ টেনে সংগঠনটি বলেছে সরকার কোনো ঘটনারই বিচার করেনি। জাতীয় সংসদে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য ৬০টি সংরক্ষিত আসনসহ পৃথক সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানায় হিন্দু মহাজোট।