| |
               

মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন শিক্ষক নির্যাতনের বিচারসহ ১১ দাবি বাস্তবায়ন চায় বিটিএ


শিক্ষক নির্যাতনের বিচারসহ ১১ দাবি বাস্তবায়ন চায় বিটিএ


রহমত ডেস্ক     29 June, 2022     04:41 PM    


শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ঈদের আগেই শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদানসহ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের লক্ষ্যে ১১ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি-বিটিএ। একইসঙ্গে  শিক্ষক নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষক নির্যাতনকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা না হলে ঢাকায় মহাসমাবেশসহ কঠোর কর্মসূচি পালনেরও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

আজ (২৯ জুন) বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামী শনিবার (২ জুলাই) বেলা ১১টায় সারা দেশের জেলা সদরগুলোতে এবং কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিটিএর সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়া।  বিটিএর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনেউপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির উপদেষ্টামণ্ডলীর অন্যতম সদস্য বাবু রঞ্জিত কুমার সাহা, সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মো. আবুল কাশেম, সহ-সভাপতি আলী আসগর হাওলাদার ও বেগম নূরুন্নাহার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবু জামিল মো. সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন, দফতর সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়া বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অবসরে যাওয়ার পর শিক্ষক-কর্মচারীদের সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক/কর্মচারী টাকা পাওয়ার আগেই অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেন। তাছাড়া কয়েক বছর যাবৎ কোনো সুবিধা না দিয়েই অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টে অমানবিকভাবে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন করা হচ্ছে।  বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের কোনো বদলি এবং পদোন্নতির সুবিধা নেই। একই কারিকুলামের অধীন সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারী ও বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে পাহাড়সম বৈষম্য রয়েছে। তাছাড়া বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের একধাপ নিচে প্রদান করা হয়।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির বয়স ৬৫ বছর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিন্তু স্কুল ও কলেজের শিক্ষকদের চাকরির বয়স আগের মতোই রয়ে গেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডির সদস্যদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ না করায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনায় নানারূপ সমস্যা বিরাজ করছে। শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি পাবলিক সার্ভিস কমিশনের ন্যায় শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন এবং শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আনুপাতিক হারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদায়ন। সংবাদ সম্মেলনে ১১ দফা দাবিও তুলে ধরেন বিটিএ সভাপতি। দাবিগুলো হলো-

১. মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করা।
২. আসন্ন ঈদ-উল-আজহার আগেই সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান।
৩. পূর্ণাঙ্গ পেনশন প্রথা চালুকরণ এবং পেনশন প্রথা চালু না হওয়া পর্যন্ত অবসর গ্রহণের ৬ মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের পাওনা প্রদান এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন বন্ধ করা।
৪. স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণ।
৫. সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ন্যায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল যথাক্রমে ৬ষ্ঠ ও ৭ম গ্রেডে প্রদান।
৬. এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলি প্রথা চালু করা।
৭. শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ বছরে উন্নীতকরণ।
৮. পাবলিক সার্ভিস কমিশনের ন্যায় শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন এবং শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আনুপাতিক হরে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদায়ন।
৯. করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক প্রণোদনা এবং শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে শিক্ষা সহায়ক ডিভাইস প্রদান।
১০. ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডির সদস্যদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ।
১১. শিক্ষা ক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি সকল বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে শিক্ষানীতি-২০১০ এর দ্রুত বাস্তবায়ন।