রহমত ডেস্ক 25 June, 2022 08:36 PM
উদ্বোধন হয়ে গেলো স্বপ্নের পদ্মা সেতুর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন। আর, এর মধ্য দিয়েই রাজধানীর সঙ্গে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সেতুবন্ধন রচিত হলো। আজ (২৫ জুন) শনিবার দুপুর ১২টার দিকে মাওয়া পয়েন্টে টোল পরিশোধের পর উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনের আগে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। উদ্বোধনের পরপরই ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে চারপাশ।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের উন্মাদনা বাংলাদেশ ছাপিয়ে পশ্চিমবঙ্গেও ছুঁয়ে গেছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়া মানেই দুদেশের সম্পর্কে নতুন মাত্রা। সেতু চালু মানেই দুদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন গতি আসার ইঙ্গিত। পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ী মহল এখন মুখিয়ে আছেন পদ্মা সেতু হয়ে কবে থেকে বাংলাদেশি পর্যটকের ঢল পশ্চিমবঙ্গে ঢুকবে। বাংলাদেশি পর্যটক কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গে আসা মানেই কলকাতার ব্যবসায়ীদের কাছে লক্ষীলাভ। বিশেষ করে কলকাতার নিউমার্কেট এলাকার বড় অংশের ব্যবসায়ীরা সারা বছরই বাংলাদেশি পর্যটকদের আশায় পথ চেয়ে থাকেন। একইভাবে কলকাতার অনেক বেসরকারি হাসপাতালে আসেন বাংলাদেশি রোগী। ফলে পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীমহল পদ্মা সেতুকে ঘিরে স্বপ্নের জাল বুনছেন। এদিন কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস এবং কলকাতা পৌরসভার উদ্যোগে কলকাতা শহরের মোট আটটি জায়গায় জায়ান্ট স্ক্রিনে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের অনুষ্ঠার দেখানো হয়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্থানগুলো হলো- কলকাতার পার্ক সার্কাস ৭ নম্বর পয়েন্ট ক্রসিং, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের এক নম্বর গেটের সামনে, ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া ওয়াই চ্যানেলের সামনে এবং এলিগন রোডে। কলকাতার অবস্থিত বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের বাংলাদেশ গ্যালারিতে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দৃশ্য এদিন সকাল ৯ টা থেকে সরাসরি দেখানো হয়।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় কী কী সুবিধা পাবে পশ্চিমবঙ্গ? ১. কলকাতা থেকে ঢাকা যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রায় তিন থেকে চার ঘন্টা সময় কমে আসবে। ২. পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় যাতায়াতের সুবিধার কারণে স্বাভাবিকভাবেই পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতে বাড়বে বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা। ৩. বাংলাদেশি পর্যটক কলকাতায় আসা মানেই মুখের হাসি চওড়া হবে কলকাতার ব্যবসায়ী মহলের। ৪. পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে রোগী আসার প্রবণতা বাড়বে। কারণ, ফেরি পারাপারের ঝুকি না থাকায় অনায়াসেই রোগীরা ঢাকা থেকে সড়কপথে কলকাতায় আসতে পারবেন। ৫. পদ্মা সেতু দিয়ে বেশি বাংলাদেশি পর্যটক আসলে পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন ব্যবসারও সমৃদ্ধি ঘটবে। ৬. শুধুমাত্র পদ্মা সেতু দেখার জন্যই আগামী বেশ কয়েকবছর ধরে সড়কপথে বাড়বে পর্যটকদের সংখ্যা। এর ফলে পশ্চিমবঙ্গের বনগা থেকে কলকাতা পর্যন্ত বাংলাদেশি পর্যটকের ভীড় বাড়লে ব্যবসায়ী ও যাত্রী পরিবহন সংস্থাগুলোর সুদিন ফিরবে। ৭. পদ্মা সেতু চালু হলে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রেও গতি আসবে। সেক্ষেত্রে ভারত থেকে বেশি পরিমান পণ্য অল্প সময়ে বাংলাদেশে পাঠানো সম্ভব হবে। ফলে সব মিলিয়ে পদ্মা সেতু দুদেশের মধ্যে যে নয়া দিগন্তের উন্মোচন ঘটাবে। আর পদ্মা সেতু পার হয়ে বাংলাদেশিরা ভারতে তথা পশ্চিমবঙ্গে আরো বেশি করে আসুন সেই প্রত্যাশায় গোটা পশ্চিমবঙ্গবাসী।