| |
               

মূল পাতা স্বাস্থ্য স্ট্রোক কেন হয়? কিভাবে প্রতিরোধ করবেন?


স্ট্রোক কেন হয়? কিভাবে প্রতিরোধ করবেন?


ডা. মোঃ গওছুল আযম     11 June, 2022     06:13 PM    


স্ট্রোক হলো ব্রেইন/মস্তিষ্কের এক ধরনের জটিল রোগ। এ রোগ সম্পর্কে যথাযথ ধারণা না থাকার ফলে আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ স্ট্রোক কে হার্টের রোগ মনে করে ভুল করেন। যার কারণে রোগীর সঠিক চিকিৎসা সেবা পেতে দেরি হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগীর স্বজনরা স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীকে নিয়ে হার্টের কোনো হসপিটালে কিংবা কার্ডিওলজিস্ট এর কাছে চলে যান, যার কারণে সঠিক চিকিৎসা সেবা পেতে বিলম্ব হয়।

স্ট্রোক কেন হয়?
স্ট্রোক হলো একটি মস্তিষ্কের/ব্রেইনের রোগ। এটা আমাদের মস্তিষ্কের রক্তনালীগুলোর বিভিন্ন রকমের জটিলতার কারণে হয়ে থাকে। রক্তনালীতে যখন রক্ত জমাট বাঁধে এবং ব্রেইনের একটা অংশের সক্ষমতা নষ্ট করে দেয় তখন আমরা তাকে স্ট্রোক বলি। আর স্ট্রোক হলো একটি মারাত্মক রোগ।

কিভাবে বুঝবেন স্ট্রোক হয়েছে?
স্ট্রোক হয়েছে কি না তা বুঝার সহজ উপায় হলো, “বি ফাস্ট”। এই শব্দ টি মনে রাখলে আপনারা সহজেই বুঝতে পারবেন স্ট্রোক হয়েছে কি না?
১.“বি” তে- ব্যালেন্স আর ব্যালেন্স মানে ভারসাম্য। অর্থাৎ হঠাৎ করে ভারসাম্যহীন হলে অথবা চোখে দেখতে না পেলে।
২.“এফ” তে- ফেইস। যদি ফেইসের একটি অংশ দুর্বল হয়।
৩.“এ” তে- আর্ম। যদি হাত বা পা কখনো দুর্বল হয়ে যায়।
৪.“এস” তে- স্পিচ/কথা। হঠাৎ করে যদি কারোর কথা বলা বন্ধ হয়ে যায় অথবা জড়তা হয় কথায়।
৫.“টি” তে- টাইম। সময় হল এই ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক করণীয়
স্ট্রোক হলে এক মিনিটে বাইশ লক্ষ নিউরন মারা যায়, এজন্য আমরা বলি রোগীর জন্য প্রতিটি সেকেন্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য কোন সময় ব্যয় না করে যখনি আপনার মনে হবে স্ট্রোক হয়েছে তখনি সাথে সাথে হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। স্ট্রোক প্রতিরোধযোগ্য একটি রোগ এবং স্ট্রোকের চিকিৎসা আছে। যথাসময়ে স্ট্রোকের চিকিৎসা করলে রোগী ভালো হয়।

প্রতিরোধের উপায়
১.সকাল বেলায় ব্যায়াম/হাঁটাহাঁটি করতে হবে।
২.ডায়াবেটিস থাকলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, ব্লাডপ্রেশার থাকলে ব্লাডপ্রেশার কন্ট্রোলে রাখতে হবে, ডিসথাইমিয়া থাকলে ডিসথাইমিয়া কন্ট্রোলে রাখতে হবে, ওবেসিটি থাকলে ওবেসিটি টা কমাতে হবে। সেক্ষেত্রে রোজা বা ইন্টারমিডিয়েট ফাস্টিং হতে পারে উত্তম মাধ্যম।
৩.প্রচুর শাকসবজি খেতে হবে, ফ্রেশ ফল খেতে হবে, পরিমিতভাবে আহার করতে হবে।
৪.ধুমপানের এর অভ্যাস থাকলে ১০০% বন্ধ করতে হবে। এলকোহল বা কোনো প্রকার এডিকশন থাকলে তা বন্ধ করতে হবে।
৫.টেনশন, স্ট্রেস কমাতে হবে।
৬.বাংলাদেশে স্ট্রোক ডায়াবেটিস এবং হাইপারটেনশনের কারণে বেশি হচ্ছে তাই এগুলো নিয়ত্রনে রাখতে হবে।


লেখক : ব্রেইন, স্পাইন, নার্ভ ও স্ট্রোক বিষয়ক সার্জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল