মূল পাতা ইসলাম জুমার বয়ান অশ্লীলতাকে আল্লাহ তায়ালা পরিস্কার ভাষায় হারাম করেছেন: মুফতী ফিরোজী
রহমত ডেস্ক 03 June, 2022 04:24 PM
ঢাকার মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব ও জামিয়া সিদ্দীকিয়া যাদুরচর সাভারের সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী মুফতী আবদুল্লাহ ফিরোজ বলেছেন, অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা ভীষণ পাপের কাজ। আর মুসলিম সমাজে এর প্রচার-প্রসার আরও গর্হিত অপরাধ। ‘অশ্লীলতা’ শব্দের আরবি প্রতিশব্দ হিসেবে পবিত্র কোরআনে ‘ফাহশা’ ও ‘ফাহেশা’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। অভিধান মতে, অশ্লীলতা মানে কুৎসিত, জঘন্য, অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও কদর্যরুচি। সাধারণভাবে বলা যায়, লজ্জাহীনতা, রুচিহীনতা, অসুন্দর, অশোভন, এসবের সামষ্টিক রূপই হলো অশ্লীলতা। অশ্লীলতা নিয়ে পবিত্র কোরআনে ২৪টি আয়াত রয়েছে। অশ্লীলতাকে আল্লাহ তায়ালা পরিস্কার ভাষায় হারাম করেছেন।
শুক্রবার (০৩ জুন) জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।
আল্লামা ইবনে কাসীর রহ. এর উদৃতি দিয়ে তিনি বলেন, অশ্লীলতার সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র হলো ব্যভিচার। সুতরাং ব্যভিচার ও ব্যভিচারে প্রলুব্ধকারী সব ধরনের ইঙ্গিত, কথা, কাজ, পোশাক, চিত্র ও ভঙ্গিমা অশ্লীলতার অন্তর্ভুক্ত। ইসলামে সব ধরনের অশ্লীলতা স্পষ্ট ভাষায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পবিত্র কোরআনের উদৃতি দিয়ে তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে কোরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে, "নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা ইনসাফ, ইহসান ও আত্মীয় স্বজনকে দান করার নির্দেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, অসৎ কাজ ও সীমা লঙ্ঘন করতে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদের উপদেশ দেন, যেন তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করো।" (সূরা নাহল-৯০)।
খতীব আবদুল্লাহ ফিরোজী আরও বলেন, ইসলাম নীতি-আদর্শ এবং মানবিকতার ধর্ম। ইসলামে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, পরকীয়া, পৈশাচিকতা, অশ্লীল পোশাক, অশ্লীল নৃত্য, জেনা-ব্যভিচার, বল্গাহীন জীবনযাপন ও আদিম পশুত্বের কোন স্থান নেই। ইসলাম বিবাহের মাধ্যমে বৈধ পন্থায় নারী-পুরুষের মেলামেশার সুযোগ দিয়েছে। আর পরকীয়া-ব্যভিচারসহ নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা ও চলাফেরাকে কঠোরভাবে নিষেধ করে চরিত্র সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : ৩২)।
হাদিসের উদৃতি দিয়ে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরকীয়া-ব্যভিচারের ভয়াবহ শাস্তির কথা বর্ণনা করে বলেন, "হে মুসলমানগণ! তোমরা ব্যভিচার ছেড়ে দাও। কেননা এর ছয়টি শাস্তি রয়েছে। তিনটি দুনিয়াতে এবং তিনটি আখেরাতে দেয়া হবে। যে তিনটি শাস্তি দুনিয়াতে হবে তা হচ্ছে, তার চেহারার উজ্জ্বল্য নষ্ট হয়ে যাবে, তার আয়ুষ্কাল সঙ্কীর্ণ হয়ে যাবে এবং তার জীবনে দারিদ্রতা চিরস্থায়ী হবে। আর যে তিনটি শাস্তি আখেরাতে প্রকাশ পাবে তা হচ্ছে, সে আল্লাহর অসন্তোষ, কঠিন হিসাব ও জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে।" (বায়হাকী-৫৬৪)। হযরত সাহল ইবনে সাদ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি মুখ ও লজ্জাস্থানের হেফাজতের জামিনদার হবে আমি তার বেহেশতের জামিনদার হবো।’ (বুখারিঃ ৭৬৫৮)। সুতরাং সমাজের সব ধরনের অশ্লীলতা ও বেহায়াপনার বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার ও সতর্ক হওয়া উচিত। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করেন, আমীন।