‘মেধাবী জাতি বিনির্মাণে দুধের চেয়ে ভালো খাবার হয় না’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, মেধাবী জাতি বিনির্মাণে দুধের চেয়ে ভালো খাবার হয় না, দেশে দুধের উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। দুধের উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অত্যন্ত চমৎকার। সরকার মানসম্পন্ন দুধ উৎপাদনে গুরুত্ব দিচ্ছে। এ জন্য দুধ উৎপাদনে পশুকে দেওয়া খাবারের মান বৈজ্ঞানিক উপায়ে নির্ধারণ করতে হবে। শুধু লিটারের পর লিটার দুধ বাড়লেই আমরা লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারবো না। গুণগতমানের দুধ না হলে দুধ থেকে উৎপাদিত খাবারের পুষ্টিমান নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাবে।

আজ (১ জুন) বুধবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বিশ্ব দুগ্ধ দিবস ২০২২ উদযাপন ও ডেইরি আইকন সেলিব্রেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদার সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, এফএও'র বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসন, বিশ্ব ব্যাংকের সিনিয়র এগ্রিকালচার স্পেশালিস্ট ক্রিশ্চিয়ান বার্জার। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. আব্দুর রহিম। এছাড়া মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এবং ডেইরি খাতের উদ্যোক্তাগণ। ডেইরি আইকন সেলিব্রেশনের ওপর উপস্থাপন করেন প্রকল্পর চীফ টেকনিক্যাল কোঅর্ডিনেটর ড. মো. গোলাম রব্বানী। পরে মন্ত্রী ডেইরি আইকন ২০২১ পুরস্কারপ্রাপ্ত খামারি ও উদ্যোক্তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, প্রাণিসম্পদ খাতকে সমৃদ্ধ করার জন্য বঙ্গবন্ধু বিদেশ থেকে গবাদিপশু এনেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পরে পিতার অসমাপ্ত কাজ সফল করার জন্য বিশেষ করে প্রাণিসম্পদ খাতকে সামনে এগিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা ও প্রকল্প গ্রহণ এবং যেখানে যে সহযোগিতা প্রয়োজন তা দিতে তিনি কুণ্ঠিত হননি। প্রাণিসম্পদ খাতের সমস্যা দূর করার জন্য আমরা অনেক কৌশলগত অবস্থান নিয়েছি। একসময় ভারত ও মিয়ানমার থেকে কোরবানির পশু আসতো। এ খাতের খামারি ও উৎপাদকদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে এখন আমরা বিদেশ থেকে কোনভাবেই পশু দেশে আসতে দিচ্ছি না।

তিনি আরো বলেন, আমরা দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারিনি, কিন্তু মাছ, মাংস ও ডিমে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। অনেক শিক্ষিত মানুষ এখন প্রাণিসম্পদ খাতে বিনিয়োগ করছে। তারা নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করছে। বেসরকারি খাত ছাড়া প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন সম্ভব হতো না। দুধ উৎপাদন বৃদ্ধিতে বেসরকারি খাতকে আরো এগিয়ে আসতে হবে। আমরা বিদেশ থেকে গুঁড়োদুধ আনতে চাইনা। বেসরকারি উদ্যোক্তারা এক্ষেত্রে এগিয়ে আসুন। দেশে প্রয়োজন হলে গুঁড়োদুধ তৈরির শিল্প প্রতিষ্ঠায় সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। পাশাপাশি দুধের বহুজাতিক ব্যবহার করতে হবে। দুধ থেকে বহুমুখী পণ্য উৎপাদন ও বহুমুখী ব্যবহারের মাধ্যমে এ খাতকে সমৃদ্ধ করতে হবে। ডেইরি আইকন পুরস্কারপ্রাপ্তরা রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পাচ্ছেন। এটি সম্মানের বিষয়। এ ধারা অব্যাহত থাকবে এবং বড় পরিসরে করা হবে। ডেইরি খাতে বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে আমরা উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই।