রহমত ডেস্ক 31 May, 2022 02:02 PM
মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে নওগাঁ জেলার জামায়াতের সাবেক আমির মো. রেজাউল করিম মন্টুসহ (৬৮) তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ফাঁসির দণ্ড পাওয়া অন্য দুই আসামি হলেন- নজরুল ইসলাম (৬৪) ও মো. শহিদ মণ্ডল (৬২)।
চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার (৩১ মে) এই রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে গত ২৯ মে নওগাঁর এ মামলায় রেজাউল করিম মন্টুসহ তিনজনের রায় ঘোষণার জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন আদালত।
ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী, আবুল কালাম আজাদ ও তাপস কুমার বল। অপরদিকে, আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।
প্রসিকিউটর আবুল কালাম আজাদ বলেন, মামলাটি গত ২৬ এপ্রিল সিএভি রাখেন ট্রাইব্যুনাল। মামলায় তিনজন আসামি। তার মধ্যে দুজন গ্রেপ্তার ও একজন পলাতক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগে বিচার হয়েছে।
২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর মামলাটির তদন্ত শুরু হয়। এক বছর ধরে চলা তদন্তে মোট ৩১ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। আসামি শহিদ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয় ২০১৭ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি।
আসামি রেজাউল করিম মন্টু জয়পুর হাট সদরের বাসিন্দা। জেলা শহরের প্রফেসর পাড়ার রাজাকার বিল্ডিং নামে পরিচিত বাসায় থাকতেন। আর পলাতক নজরুল ইসলাম ঢাকায় তেজগাঁওয়ে থাকতেন। শহিদ মণ্ডলের বাড়ি নওগাঁর বদলগাছি থানার চাঁপাডাল গ্রামে।
এ মামলায় মোট তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। সেগুলো হলো:
প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৭ অক্টোবর বিকাল আনুমানিক ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সময়ে আসামিরা নওগাঁর বদলগাছি থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের রানাহার গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ-নিরস্ত্র সাহেব আলী, আকাম উদ্দিন, আজিম উদ্দিন মণ্ডল, মোজাফফর হোসেনকে হত্যাসহ ওই সময় ১০-১২টি বাড়ি লুট করে অগ্নিসংযোগ করে।
দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর দুপুর আনুমানিক দেড়টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সময়ে আসামিরা নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের খোজাগাড়ী গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ-নিরস্ত্র মো. নুরুল ইসলামকে হত্যা করে। এসময় তারা ১৫-২০টি বাড়ি লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগ করে।
তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর বিকাল আনুমানিক ৫টা থেকে পরদিন অর্থাৎ ৯ অক্টোবর আনুমানিক বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময়ে নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের মালঞ্চা গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের মো. কেনার উদ্দিন এবং মো. আক্কাস আলীকে অবৈধভাবে আটক করে নির্যাতন করে। পরে অপহরণ করে জয়পুরহাটের কুঠিবাড়ি ব্রিজে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। এই সময়ের মধ্যে আসামিরা ৪০-৫০টি বাড়ি লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগ করে।