| |
               

মূল পাতা জাতীয় গণকমিশন গণদুশমনে পরিণত হয়েছে : দেওনা পীর


গণকমিশন গণদুশমনে পরিণত হয়েছে : দেওনা পীর


রহমত ডেস্ক     19 May, 2022     07:48 PM    


হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমীর ও দেওনা পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন, কওমি মাদরাসায় কোনো জঙ্গিবাদ তৈরি হয় না। কওমি মাদরাসাগুলো আদর্শ নাগরিক তৈরি করছে। প্রধানমন্ত্রী কওমি মাদরাসা শিক্ষার স্বীকৃতি দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও কথিত ঘাদানিক গণকমিশন শ্বেতপত্রের মাধ্যমে সুপ্রসিদ্ধ উলামায়ে কেরাম এবং কওমি মাদরাসার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছে। এতে দেশের সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি যারা মিথ্যা শ্বেতপত্রের মাধ্যমে দেশকে অশান্ত করার উস্কানি দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিন। কারণ তারা দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। গণকমিশন আজ গণদুশমনে পরিণত হয়েছে। তিনি কথিত গণকমিশনের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

বুধবার (১৮ মে) বিকাল তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ইসলামিক কালচারাল ফোরাম বাংলাদেশ আয়োজিত কথিত গণকমিশনের ভিত্তিহীন অভিযোগ বিষয়ে আমাদের করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের চেয়ারম্যান তেজগাঁও রহিম মেটাল জামে মসজিদের খতীব মাওলানা মাহমুদুল হাসান মমতাজীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মো. নাজমুল হকের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, বেফাকুল মাদারিসিদ দ্বীনিয়া বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ আলী, সহ সভাপতি মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, জামিয়া ইমদাদুল উলূম ফরিদাবাদের সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি ইমাদ উদ্দিন, জামিয়াতুল উলূমিল ইসলামিয়ার মুহতামিম মুফতি মাহমুদুল হাসান, আল ফালাহ মসজিদ তেজগাঁওয়ের খতীব হাফেজ মাওলানা মনছুরুল হক, মোনায়েম গ্রুপ মসজিদের খতীব হাফেজ মাওলানা মোতাহার উদ্দিন, জামিয়া আবু বকর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু আনহুর মুহতামিম মুফতি বোরহান উদ্দিন রব্বানী, মাওলানা আবুল কাসেম আশরাফী, জামিয়া ইমাম বুখারীর মুহতামিম মুফতি ওয়াহিদুল আলম, জামিয়া মদীনাতুল উলূম আমিন বাজারের শিক্ষা সচিব মুফতি আব্দুর রহীম কাসেমী, জামিয়া নূরিয়া টঙ্গীর সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা রিয়াদুল ইসলাম মুনীর, বনানী চেয়ারম্যানবাড়ী জামে মসজিদের খতীব মুফতি মাসুম বিল্লাহ, লেখক মাওলানা শামসুল হুদা, লেখক গবেষক মাওলানা শায়েখ উসমান গনী, মারকাযুশ শরীয়ার মুহতামিম মুফতি রফিকুন্নবী হক্কানী, যাদুরচর মাদরাসা সাভারের সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী, আন্তর্জাতিক কেরাত সংস্থার মহাসচিব হাফেজ মাওলানা সাদ সাইফুল্লাহ মাদানী, মাওলানা ইবরাহিম বিন আলী প্রমুখ।

সভায় বক্তারা বলেন, ১১৬ জন বরেণ্য আলেমের বিরুদ্ধে যে ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণ করা হয়েছে, তাতে দেশবাসী স্তম্ভিত। এটি কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা বা শুধু আলেমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নয়। বরং দেশ ও ইসলামের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। উল্লেখিত আলেমগণ দেশ-বিদেশে ইসলামের খেদমত করে আসছেন। তাদের প্রতি দেশের মানুষের অকৃত্রিম ভালবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে। কিন্তু শ্বেতপত্রে সম্মানিত শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলামাদের সম্পর্কে অত্যন্ত আপত্তিকর, অসম্মানজনক ভাষা ব্যবহার করে তাদের হেয় করা হয়েছে। এ ধৃষ্টতা অমার্জনীয়। মতবিনিময় সভায় আলেম-উলামাদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও কারাবন্দি আলেমদের অবিলম্বে মুক্তির পাশাপাশি সারা দেশে ওয়াজ মাহফিলগুলোকে সব ধরনের প্রশাসনিক বিধি-নিষেধের আওতামুক্ত রাখা এবং সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ, সর্বশেষ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, পবিত্র কুরআন, হাদীস, ধর্মীয় বিধান, ইসলামী শরীয়ত এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ও নেতাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর উক্তি, শব্দের ব্যবহার আইন করে নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়।

সংগঠনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মো. নাজমুল হক। তিনি বলেন, সংবিধান অনুসারে দেশের কোন নাগরিক অন্য কোন নাগরিকের ওপর অনুসন্ধান, গোয়েন্দাগিরি ও তদন্ত করতে পারে না। কোন নাগরিকের ব্যাপারে তদন্ত করতে হলে তদন্ত সংক্রান্ত কোড অফ দা ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ১৮৯৮ ধারা ৪ এর ১ উপধারা অনুসারে তদন্তের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি প্রয়োজন। এই বিবেচনায় চৌধুরী মানিক ও তুরিন আফরোজ গং যা করেছেন তা সংবিধানের মৌলিক ধারণার স্পষ্ট লঙ্ঘন। তারা কোন ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি কিংবা সংস্থা না হয়েও তদন্ত প্রতিবেদন শিরোনামে কিছু প্রকাশের মাধ্যমে আইনত অনধিকার চর্চা করা এবং নৈতিক ও সামাজিক অপরাধ করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপরাধে অবিলম্বে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মাহমুদুল হাসান মমতাজী বলেন, ঘাদানিক গণকমিশনকে কে বা কারা অর্থায়ন করে? কেন কোন স্বার্থে কোন শক্তি তাদের পাশে। এই সংগঠনের আয়-ব্যয়ের হিসাব কি? কোথাও প্রকাশিত হয়েছে কিংবা আদৌ কি তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব সম্পর্কে সরকারি দপ্তরগুলো জানে? এসব প্রশ্নের সমাধান জরুরি। তারা ইসলাম, মুসলমান ও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে, আমরা তাদের কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা জানাই এবং তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবী জানাই।