রহমত ডেস্ক 18 May, 2022 04:07 PM
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, দেশে গমের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। এ নিয়ে আশঙ্কার কোনো কারণ নেই। ভারত গম রপ্তানি বন্ধ করলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে না। জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকারের চুক্তি) পদ্ধতিতে আনা যাবে। দেশে গমের যথেষ্ট মজুত রয়েছে। কয়েকদিন ধরে একটা কথা বাজারে উড়ছে যে, ভারত গম রপ্তানি বন্ধ করেছে। এজন্য বাজারে গমের দামে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। কিন্তু কথাটি একেবারেই ঠিক নয়। ভারত অন্যান্য দেশের রপ্তানি বন্ধ করেছে । এখানে আসার আগে আমি ভারতের হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি, উনিও একটা প্রেস কনফারেন্স দিয়েছেন যে, জিটুজি বন্ধ হয়নি। যত খুশি আনা যাবে। এমনকি প্রতিবেশী দেশ হিসেবে যারা বড় বড় আমদানিকারক আছে, চাইলে চিঠি দিয়ে অনুমতি নিতে পারবেন। পুরোপুরি ১০০ ভাগ আমদানিতে কোনো বাধা নেই।
বুধবার (১৮ মে) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির দ্বিতীয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএইএম সফিকুজ্জামান, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রি. জে. আরিফুল ইসলাম ও বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মেঘ দেখলেই বলে ঝড় এসে গেছে। সেটা কিন্তু নয়। এছাড়া আমাদের দেশে এই মুহূর্তে গমের যে স্টক আছে, তাতে ভয়ের আশঙ্কা করি না। গ্লোবাল এ ক্রাইসিসকে সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে। আমরা একটাই মেসেজ দিতে চাই, ভোজ্যতেলের এখন যে অবস্থা, তাতে আশা করছি ক্রাইসিস হবে না। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে নির্ভরশীলতা কমাতে দেশীয় রাইস ব্র্যান ও সরিষা তেলের উৎপাদন বাড়ানোর চিন্তা করা হচ্ছে। আমাদের বার্ষিক চাহিদার ৯০ ভাগ ভোজ্যতেল আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানি করতে হয়। পাম ও সয়াবিন তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে দেশীয় জোগানের রাইস ব্র্যান ও সরিষার তেল উৎপাদন বাড়ানো যায় কি না বৈঠকে সেটা নিয়ে আলোচনা হলো। দেশে এখন ৫০ থেকে ৬০ হাজার টন রাইস ব্র্যান তেল উৎপাদন হয়। এটা খুব সহজেই ৭ লাখ টনে উন্নীত করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে রাইস ব্র্যানের সুফল সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণা করতে হবে। ডাক্তারদের এ নিয়ে কথা বলতে হবে। পাশাপাশি সরিষার উৎপাদন বাড়ানোর সম্ভাবনার কথাও কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। বৈঠকে ভোজ্য তেল ছাড়াও পেঁয়াজ গম ও লবণের মূল্য এবং সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
তিনি আরো বলেন, পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২২ টাকা, এর বাইরে বড় পরিমাণের পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। এখন ভাবনার বিষয় হচ্ছে আমরা কত দামে পেঁয়াজ খাব। কৃষকদের ও কিছু প্রণোদনা দিতে হবে তাহলে তারা উৎপাদন বাড়াবে। গত বছর কৃষক পেঁয়াজের ভালো দাম পেয়ে এবার আড়াই লাখ টন উৎপাদন বাড়িয়েছে। পেঁয়াজের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সতর্ক। এখন আমদানি অনুমোদন বন্ধ করা আছে। প্রয়োজন হলে সেটা চালু করে দেওয়া হবে। প্রতিবেশী দেশের তুলনায় দেশের লবণের দাম বেশি বলে বৈঠকে ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হলে, এ বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে বিস্তারিত আলাপ আলোচনা করা হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে বেশ কিছু ভোগ্য পণ্যের দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে অভ্যন্তরীণ বাজারে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা মোকাবিলায় সবাইকে মিলেমিশে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মন্ত্রী।