| |
               

মূল পাতা আন্তর্জাতিক ভারতের মুসলিমরা নিরাপত্তাহীন বোধ করছে : ওমর আব্দুল্লাহ


ওমর আব্দুল্লাহ

ভারতের মুসলিমরা নিরাপত্তাহীন বোধ করছে : ওমর আব্দুল্লাহ


আন্তর্জাতিক ডেস্ক     30 April, 2022     07:36 PM    


ভারতের মুসলিমরা আজ নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং ন্যাশনাল কনফারেন্সের সহ-সভাপতি ওমর আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, মুসলমানদের টার্গেট করা হচ্ছে। 'পরিকল্পিতভাবে আমাদের হেনস্থা করা হচ্ছে। আমাদের বলা হচ্ছে আমরা সংখ্যালঘু এবং এ দেশে আমাদের মর্যাদা অন্যদের চেয়ে কম।  

শনিবার (৩০ এপ্রিল) হিন্দি গণমাধ্যম ‘এবিপি নিউজ’-এর সাথে একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করে ওমর আব্দুল্লাহ বলেন, 'অনেক সরকার দেখেছি, কিন্তু এখন যে অবস্থা তা আগে কখনো ছিল না।' 

‘এবিপি নিউজ’-এর সঙ্গে ওমর আবদুল্লাহর বিশেষ কথোপকথনের উল্লেখযোগ্য ১০টি মন্তব্য।   
১) বিদ্যুৎ ঘাটতি প্রসঙ্গে ওমর আবদুল্লাহ বলেন, 'এই পবিত্র মাসে (রমযানে) সেহরির সময় আছে, ইফতারির সময় আছে, এই সময়টা আমাদের জন্য খুবই  গুরুত্বপূর্ণ। এ পর্যন্ত সমস্ত সরকারের প্রচেষ্টা ছিল যে ওই সময়ের মধ্যে কোনও বিদ্যুৎ কাটা না হয় বা সর্বনিম্ন হোক। কিন্তু এই প্রথম আমি এবং জনসাধারণ অনুভব করছি যে ইচ্ছাকৃতভাবে বিদ্যুৎ কাটা হচ্ছে। এরমধ্যে দু’টি জিনিস থাকতে পারে, হয় একে অবহেলা বলা যেতে পারে অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে করা হচ্ছে। আবদুল্লাহ আরও বলেন, যখন এই ইস্যুটি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং লোকেরা এই বিষয়ে ব্যাপকভাবে কথা বলতে শুরু করে, তখন ২ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি ভাল হয়। এটা কীভাবে হলো?     

২) ওমর আবদুল্লাহ বলেন, দেশে মুসলমানদের টার্গেট করা হচ্ছে। ‘হিজাব’ দিয়ে ‘হালাল গোশত’ নিয়ে বা বুলডোজার চালানো হয় এবং বুলডোজার চালানোর পর উদযাপন করা হয়। দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরীতে বুলডোজারের তৎপরতা প্রসঙ্গে ওমর আবদুল্লাহ বলেন, প্রথমে দুই সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে সহিংসতা, তার পরপরই বুলডোজার চালানো হয়। দিল্লির এটাই কী একমাত্র এলাকা যেখানে অবৈধ নির্মাণ হয়েছে? অন্য অনেক জায়গায় যেখানে অবৈধ নির্মাণ হয়েছে সেখানে কেন তা চালানো হয় না?  

৩) ওমর আবদুল্লাহ আরও বলেন, মসজিদের বাইরে মিছিল বের করা হয়। এসব মিছিলে স্লোগান হচ্ছে 'হিন্দুস্তানে থাকতে হলে জয় শ্রী রাম বলতে হবে।’ এ সব মিছিল ও স্লোগানকে সরকারের পক্ষ থেকে নিন্দা করা হয়নি। এরফলে আমাদের অনুভূতিতে কী প্রভাব পড়বে? 

৪) ওমর আবদুল্লাহ দেশে বসবাসরত মুসলমানদের সম্পর্কে বলেন, মুসলমানরা আজ কী অবস্থায় বাস করছে, তারা জানে। তারা জানে তারা কী ভয়ে ভুগছে। তিনি বলেন, সরকারের উচিত মুসলমানদের আশ্বস্ত করা যে তারা অন্যদের থেকে আলাদা নয়। 

৫) প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানকে নিয়ে ওমর আবদুল্লাহ বলেন, ওই দেশের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। প্রতিবেশী দেশ আমার বন্ধু নয়। আমার দেশ নিয়ে আমার সমস্যা আছে। তিনি বলেন, আমি চাই আমার দেশের মানুষ নিরাপদ ও সুস্থ থাকুক। 

৬) ওমর আবদুল্লাহ রাম মন্দির ও ৩৭০ ধারা প্রসঙ্গে বলেন, আমরা কী মন্দির নিয়ে আওয়াজ করেছি? কোনো মুসলিম সড়কে নেমেছে? কোনও মুসলিম কী বলেছেন এখানে মন্দির তৈরি হবে না? আদালত আপনাকে মন্দির নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে, আপনারা তৈরি করুন। আপনি ৩৭০ ধারা সরিয়ে দিতে  চেয়েছিলেন, এটি সরিয়ে দিয়েছেন। কীভাবে সরানো হয়েছে, কেন সরানো হয়েছে, এতে আমরা যাব না। গ্রীষ্মকালীন ছুটির পর শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে। এর ফল কী হয় সেটাই দেখা হবে।   

৭) ওমর আবদুল্লাহ বলেন, সরকারের কাজ হচ্ছে ইশতেহার নিয়ে কাজ করা, দেশের মানুষকে একসঙ্গে নিয়ে চলা। তিনি বলেন, নবরাত্রে গোশতের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটার কী দরকার ছিল? এর মানে কী? মানে আপনি ব্রত পালন করলে আমি মাংস খাব না। কারণ, আপনি সংখ্যাগরিষ্ঠ এজন্য। 

৮) ওমর আবদুল্লাহ বলেন, এ সময়ে রমযান মাস চলছে। এখানে মানুষ দোকান খুলে আইসক্রিম বিক্রি করছে, খাবার বিক্রি করছে। এটা তাদের রোজা। তিনি রোজা রেখে খাবার বিক্রি করছেন। একে বলে সমতা। তিনি বলেন, মুসলমানদের বিরুদ্ধে যা কিছু ঘটছে, তা আমাদের উত্যক্ত করার জন্য করা হচ্ছে এবং এতে ক্ষতি হবে। 

৯) ওমর আবদুল্লাহ বলেন, এখন মনে হচ্ছে এ দেশে আমাদের মুসলমানদের মর্যাদা কমছে। আগে অনুভূত হতো না কিন্তু এখন মনে হতে শুরু করেছে যার জন্য আফসোস করছি। আমাদের অনুভূতি ও আবেগ নিয়ে খেলা হচ্ছে।    

১০) মহারাষ্ট্রে উদ্ধব ঠাকরের বাড়ির বাইরে ‘হনুমান চালিসা’ পাঠের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ওমর আবদুল্লাহ বলেন, কেউ যদি এটি পাঠ করতে চান তবে তাকে তা করতে দিন। কেউ যদি আমার বাড়ির বাইরে ‘তেলাওয়াত’ করতে চান, তা করবেন। কেউ যদি আমার বাড়ির বাইরে স্লোগান দিতে চায় যে ভারতে থাকতে হলে জয় শ্রী রাম বলতে হবে, তা বলুন। কিন্তু মসজিদের বাইরে হলে তার মানে ভিন্ন। 

-পার্সটুডে