| |
               

মূল পাতা আন্তর্জাতিক কোলকাতায় জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল


কোলকাতায় জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল


আন্তর্জাতিক ডেস্ক     23 April, 2022     10:17 AM    


ভারতের রাজধানী দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরীতে হনুমান জয়ন্তীর মিছিলকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও পরবর্তীতে উত্তর দিল্লি পৌর কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে কোলকাতায় প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

শুক্রবার (২২ এপ্রিল) জামায়াতে ইসলামী হিন্দসহ একাধিক গণসংগঠন ও নাগরিক সমাজের ডাকে কোলকাতার টিপু সুলতান মসজিদ থেকে গান্ধী মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই প্রতিবাদ মিছিলটিতে বিভিন্ন লেখা সম্বলিত পোস্টার হাতে নিয়ে বহু মানুষ শামিল হন। এ সময়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে টার্গেট করে ‘কেজরিওয়ালের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ স্লোগানসহ বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।

প্রতিবাদ মিছিল সম্পর্কে জামায়াতে ইসলামী হিন্দের পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি মাওলানা আব্দুর রফিক রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরীর ঘটনা সম্পর্কে আমরা মূলত চেয়েছি যে, যারা সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক বক্তব্য রেখেছে, ওখানকার পরিবেশ খারাপ করতে চেয়েছে, পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার না করে নিরীহ মুসলিম যারা মসজিদকে হেফাজত করতে চেয়েছে, তাদের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়ার যে প্রক্রিয়া চালানো হয়েছে তা অমানবিক, এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল করেছি। সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও যারা ওই কাজ করেছে তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্ট করতে চেয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’ 

‘যাদের বাড়িঘর ও দোকানপাট ভেঙে দেওয়া হয়েছে সরকারকে তাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে’ বলেও জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুর রফিক মন্তব্য করেন। 

জামায়াতে ইসলামী হিন্দের উদ্যোগে সংগঠিত ওই প্রতিবাদ কর্মসূচি সম্পর্কে এক যৌথ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘দিল্লীর জাহাঙ্গীরপুরীতে বুলডোজার দিয়ে সাধারণ মানুষের বাড়ি-ঘর ভেঙে ফেলার বেআইনি অভিযান চলছে। যে কথিত অভিযোগে ওই  তৎপরতা চালানো হচ্ছে তা মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের শামিল। এই বেআইনি কাজে বৈধতা দেওয়ার জন্য দু’টি অজুহাত পুলিশ প্রশাসন ও পৌর প্রশাসন নিয়ে এসেছে যার একটি হলো এই অধিবাসীরা নাকি দাঙ্গা বা সহিংসতায় মদদ দিয়েছে। দ্বিতীয়ত: বলা হচ্ছে অবৈধ নির্মাণ করে এরা বসতি নির্মাণ করেছে। কিন্তু জাহাঙ্গীরপুরীতে যা কিছু ঘটেছে এবং যেভাবে সহিংসতা ঘটেছে তা স্পষ্টভাবে আকস্মিক ঘটনা নয়, বরং ইচ্ছাকৃতভাবে ও পরিকল্পিতভাবে এটা সংগঠিত করা হয়েছে।’

‘বন্দি মুক্তি কমিটি’র সাধারণ সম্পাদক ছোটন দাস ওই সমাবেশ থেকে দেওয়া বক্তব্যে বলেন, ‘একদল দুর্বৃত্ত যাদের সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই, তারা সারা দেশে সংখ্যালঘু বিশেষকরে মুসলিমদের বাড়িঘর আক্রমণ করেছে, বুলডোজোর দিয়ে ধ্বংস করেছে। ভারতবর্ষ নানা মতের দেশ। এই আক্রমণ আসলে ভারতের সংবিধানকে। ভারতবর্ষের বৈচিত্রকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে আরএসএস-বিজেপি। এমনকি জাহাঙ্গীরপুরীতে তারা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পর্যন্ত পদদলিত করেছে।’ তিনি ভেঙে দেওয়া বাড়িঘর পুনর্নির্মাণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান।    

যৌথ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ, শুক্রবার কোলকাতার ওই মিছিল ও সমাবেশ থেকে দাবি করা হয়, সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী জাহাঙ্গীরপুরী এলাকায় স্থিতিবস্থা বজায় রাখতে হবে। বেআইনি উচ্ছেদের নামে ঘরবাড়িকে বুলডোজার দিয়ে অমানবিকভাবে উচ্ছেদ করার যে কার্যকলাপ শুরু হয়েছে তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। অবিলম্বে শোভাযাত্রার সময়ে উসকানিমূলক স্লোগানদাতাদের এবং সহিংসতায় উসকানিদাতাদের চিহ্নিত করে প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি প্রদান করতে হবে। নিরীহ ও সাধারণ মানুষের যে সমস্ত বাড়ি ঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং দোকানপাট ভেঙে ফেলা হয়েছে তাদেরকে সরকারি ক্ষতিপূরণ ও পূনর্বাসন প্রদান করতে হবে ইত্যাদি।

শুক্রবারের ওই বিক্ষোভ মিছিলে জামায়াত নেতাদের পাশাপাশি ‘বন্দি মুক্তি কমিটি’র সাধারণ সম্পাদক ছোটন দাস, মানবাধিকার কর্মী সুজাতা ভদ্র, কোলকাতা খিলাফত কমিটির নেতা নাসির আহমেদসহ বহু বিশিষ্ট মানুষজন উপস্থিত ছিলেন।

-পার্সটুডে