| |
               

মূল পাতা ইসলাম জুমার বয়ান ইতিকাফ একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত ইবাদত


ইতিকাফ একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত ইবাদত


রহমত ডেস্ক     22 April, 2022     08:09 PM    


মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতীব মুফতী আবদুল্লাহ ফিরোজী বলেছেন, রহমত মাগফিরাত ও নাজাতের বারিধারায় বিধৌত হয়ে পাপের পঙ্কিলতা থেকে পরিচ্ছন্ন ও শুদ্ধ হওয়ার মাস রমজান চলছে। রমজানের গুরুত্বপূর্ণ শেষ দশক আমাদের সামনে সমাগত। শেষ দশকে ইতিকাফের মাধ্যমে একজন গোনাহগার বান্দা আল্লাহর কাছে সম্মানিত হয়ে যায়। জাহান্নাম থেকে মুক্তির মহা নেয়ামত অর্জিত হয় শেষ দশকের ইতিকাফের মাধ্যমে। ইতিকাফ একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত ইবাদত। ইতিকাফের মাধ্যমে মানুষ দুনিয়ার সবকিছু ছেড়ে আক্ষরিক অর্থেই আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যায়। ইতিকাফ করা সুন্নাতে মুআক্কাদায়ে কিফায়াহ। কোন মসজিদ মহল্লায় কয়েকজন বা কোন একজন আদায় করলে সবাই পাপমুক্ত হবেন। আর কেউই আদায় না করলে সবাই গোনাহগার হবেন। তবে যিনি আদায় করবেন, শুধু তিনিই সওয়াবের অধিকারী হবেন। আজ (২২ এপ্রিল) শুক্রবার ঢাকার মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের জুমার খুতবা পূর্ব বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।

খতীব বলেন, হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, নবী কারীম সা. আজীবন রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করেছেন। তার ইন্তেকালের পর তার স্ত্রীগণও ইতিকাফ করতেন। (বুখারী, মুসলিম)। নবীজী সা. ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করবে, তার জন্য দুটি হজ ও দুটি ওমরার সওয়াব রয়েছে। (বায়হাকী)। ইতিকাফের অন্যতম উদ্দেশ্য হল শবে কদর প্রাপ্তি। রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করলে শবে কদর প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়ে যায়। শবে কদর কথাটি ফারসি। শব মানে রাত বা রজনী আর কদর মানে সম্মান, মর্যাদা, ভাগ্য ইত্যাদি। শবে কদর অর্থ হলো মর্যাদার রাত বা ভাগ্যরজনী। শবে কদরের আরবি হল লাইলাতুল কদর।

তিনি আরো বলেন, পবিত্র কুরআন যে রাতে নাযিল হয়েছে, সে রাতই লাইলাতুল কদর। আল্লাহ তায়ালা বলেন: ‘নিশ্চয়ই আমি কুরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। আপনি কি জানেন, লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর তথা মহিমান্বিত কদর রজনী হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ এবং রূহ (হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম) প্রত্যেক কাজের জন্য তাদের পালনকর্তার নির্দেশ ও অনুমতিক্রমে অবতরণ করেন। এটা নিরাপত্তা, যা ফজর উদিত হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। (সূরা আল কদর)। হযরত আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের নিয়তে কদরের রাত জেগে ইবাদত করবে, তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। (বুখারী)। শবে কদর রমজানের মধ্যেই। রাসূলে কারীম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে শবে কদরকে তালাশ করো। (মুসলিম)। হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাদিয়াল্লাহু আনহা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আমি যদি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে আমি ওই রাতে আল্লাহর কাছে কী দোয়া করব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন; তুমি বলবে, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া; ফা'ফু আন্নি।’ অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন।’ (সুনান ইবনে মাজা) মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করেন, আমীন।