সারাদেশে গণতন্ত্রহীন অবস্থা বিরাজ করছে : ফখরুল

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সারাদেশে এখন গণতন্ত্রহীন অবস্থা বিরাজ করছে। আমাদের বুকের ওপরে একটা বেআইনি জোরজবর দখলকারী সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। শুধু তাই নয়, ক্ষমতা দখল করার পরে তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, প্রত্যেকটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে এবং বাংলাদেশের জনগণকে একটা অন্ধকার গহ্বরের দিকে ঠেলে দিয়েছে। অতি সম্প্রতি আপনারা দেখেছেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের সহধর্মিনী ডা. জুবাইদা রহমান যিনি রাজনীতির সাথে কখনোই সম্পৃক্ত ছিলেন না, তার বিরুদ্ধেও দুদক একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলার কার্য্ক্রম শুরু করবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এটা অত্যন্ত বেআইনি কাজ। আমরা মনে করি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শুধু নয়, বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

আজ (১৫ এপ্রিল) শুক্রবার রাজধানীর গুলিস্থান এলাকায় মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ইফতারে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ইফতারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, আহমেদ আজম খান, অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জয়নুল আবদিন ফারুক, আমান উল্লাহ আমান, অধ্যাপক শাহিদা রফিক, তাহসিনা রশদীর লুনা, শ্যামা ওবায়েদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আফরোজা আব্বাস, ইশরাক হোসেন, গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মন্টু, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণ অধিকার পরিষদের রেজা কিবরিয়াসহ ২০ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ, কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা ছিলেন। মহানগর দক্ষিণ বিএনপির বিশাল আয়োজনের এই ইফতারে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের সহস্রাধিক নেতা-কর্মী-সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। ইফতারপূর্ব অনুষ্ঠানে দলের গুম হওয়া নেতৃবৃন্দের পরিবারের সদস্যরাও বক্তব্য রাখেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এদেশে একটা ছদ্মবেশি একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সে জন্যেই তারা একে একে সমস্ত স্বাধীন যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে ফেলেছে। সবার আগে তারা যেখানে হাত দিয়েছে সেটা হচ্ছে বিচার বিভাগ। এই বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে আজকে জনগণের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা, দেশে মানুষ অন্তত তার প্রয়োজনের সময় যখন নির্যাতিত হবে রাষ্ট্র দ্বারা, তখন বিচার বিভাগের কাছে গিয়ে একটা রিলিফ পাবে। দুর্ভাগ্য আজকে সেই বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করে, নিয়ন্ত্রণ করে, এমন একটা করে জায়গায় নিয়ে গেছে বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের যে রায়গুলো হয়, সেগুলো রায় হয়ে যাচ্ছে একেবারে জনগণের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, তারা ন্যায় বিচার পাচ্ছেন না।

তিনি আরো বলেন, তিন বছর আগে ১৮ কোটি মানুষের নয়নের মনি দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আমাদের সাথে ইফতার করেছেন। আজকে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতনে রোষানলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে তাকে অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। আমাদের ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ছয় শতাধিক নেতা-কর্মীকে গুম করে ফেলা হয়েছে, সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে নেতা-কর্মীসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহাবানও জানান বিএনপি মহাসচিব।