রহমত ডেস্ক 12 April, 2022 03:42 PM
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নেতারা দুর্নীতি দমন কমিশনে গিয়ে যে মহড়া দিয়েছেন তা নিজেদের দুর্নীতি ও ব্যর্থতা আড়ালের অপচেষ্টা মাত্র। বিএনপির কথিত আন্দোলন আর অভ্যুত্থানের রঙিন খোয়াব ভেঙ্গে যাওয়ায় জনগণের নজর এখন ভিন্ন দিকে নিতে চায়। কর্মী-সমর্থকদের রোষানল থেকে বাঁচতেই বিএনপি নেতারা দুর্নীতির তথ্য প্রদানের নামে নাটকীয়তার আশ্রয় নিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র সততার বিষয়টি আজ দেশ বিদেশে প্রশংসিত হচ্ছে, আজ যারা বড় বড় কথা বলছেন, লোক দেখানো নাটক করছেন, তাদের শাসনামলে নিজ দলের এমপি,মন্ত্রী কিংবা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের একটি প্রমাণ তারা দেখাতে পারবেন না। বিএনপি’র নীতি ছিলো দুর্নীতি তোষণ আর দলীয়ভাবেই করা দুর্নীতিবাজদের পৃষ্ঠপোষকতা, বিএনপি’র শাসনামল আর দুর্নীতি সমার্থক হয়ে গিয়েছিলো। সাহস থাকলে আপনাদের গঠনতন্ত্রে দুর্নীতি বিরোধী ৭ ধারা ফিরেয়ে আনুন, যা বাদ দিয়েছিলেন, তাহলে বোঝা যাবে আপনারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। একদিকে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে, আবার অন্যদিকে কল্পিত অভিযোগ করাকে জনগণ নৈতিকতা বিরোধী বলেই মনে করে। আজ (১২ এপ্রিল) মঙ্গলবার সকালে তাঁর বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেক তথ্যই সরকারের কাছে আছে, কে কোথায় সভা করছে, কাকে টাকা দিচ্ছে, এমনকি সরকারের বিরোধিতার নামে রাষ্ট্রবিরোধী কাজে উস্কানির জন্য দুর্নীতিলব্ধ অর্থ বিনিয়োগ করা হচ্ছে। কারা কর ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করে আবার দুর্নীতিবাজ নেতৃত্বের জন্য অবৈধ উপায়ে অর্থ প্রেরণ করছে, সব খবরই সরকারের কাছে আছে, এসব অপরাধীরা কেউই ছাড় পাবে না। নিজ দলের অপরাধী, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আপনাদের অবস্থান কী? সাহস থাকলে তাদের তালিকা দিন। বিদেশে বিলাসী জীবনের রসদ কোথা থেকে আসছে তার হিসাব জমা দিন। সর্ষের মধ্যে ভুত রেখে ভুত তাড়ানোর এসব লোক দেখানো অপপ্রয়াস অপরাজনীতিরই ধারাবাহিকতা মাত্র। যে দলের চেয়ারপারসন দুর্নীতির দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি এবং দলীয় গঠনতন্ত্র থেকে যে দল দুর্নীতি বিরোধী ৭ ধারা অপসারণ করে, যারা আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ দল হিসেবে নিজেদের পরিচিত করেছে, যাদের শাসনামলে দেশকে পরপর ৫ বার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কলঙ্ক তিলক পরতে হয়েছিল, সেই আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্থ বিএনপি যখন দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে তখন মানুষের হাসি পায়। তারেক রহমানের পাচারকৃত ১২ কোটি টাকা আটক করেছিলো যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস। আওয়ামী লীগ সরকার ২০১২ সালে সে টাকা দেশে ফেরত আনে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে সিঙ্গাপুর সরকার পাচারকৃত ৮ কোটি টাকা ফেরত দেয়।
তিনি আরো বলেন, তারেক রহমান ও তার ব্যবসায়িক পার্টনার গিয়াসউদ্দিন আল মামুন সিটিএনএ ব্যাংকে ২১ কোটি টাকা পাচার করে। এফবিআই এ ব্যাপারে তদন্ত করেছে এবং বাংলাদেশের আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে। শুধু তাই নয়, লন্ডনের একটি ব্যাংকে প্রায় ৬ কোটি টাকা পাওয়া যায় তার ব্যাংক হিসেবে। বেলজিয়ামে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার, মালয়েশিয়ায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন, দুবাইয়ের এমিরিটাস হিলস-এ স্প্রিং - ১৪ নামের কয়েক মিলিয়ন ডলার মূল্যের বাড়ির মালিক হয়েছিলো জিয়া পরিবার। ভাঙ্গা সুটকেসের গল্প ততদিনে লঞ্চ, টেক্সটাইল মিল, বিদেশে বাড়ি আর ব্যাংক ব্যালেন্সের নিচে চাপা পড়ে গেছে ,অথচ তারাই এখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে বড় বড় কথা বলে! দেশবাসী জানে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে অটল, শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে এর প্রমাণ জনগণ ইতিমধ্যে দেখেছে। যে যত বড় নেতাই হোক, অনিয়মের অভিযোগ পেলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা। সরকারি দলের অনেক নেতা, এমপি এমনকি মন্ত্রী পর্যন্ত ছাড় পায়নি। দুদক স্বাধীনভাবে কাজ করছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারি দলের বিরুদ্ধেও দুদকের কাজ করতে কোন বাধা ছিলনা এবং এখনো নেই। বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যানসহ তাদের অনেক নেতার বিরুদ্ধে দুদকে যে তথ্য বা অভিযোগ আছে সে ব্যাপারেও দুদক তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে।